• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
নির্বাচনী মাঠে আ.লীগ এলাকা ছাড়া বিএনপি

গাজীপুরে জাতীয় নির্বাচন

নির্বাচন

গাজীপুরের রাজনীতির হালচাল

নির্বাচনী মাঠে আ.লীগ এলাকা ছাড়া বিএনপি

  • এনামুল হক, গাজীপুর
  • প্রকাশিত ১৩ নভেম্বর ২০১৮

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের পাঁচটি আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ফুরফুরে মেজাজে। ভোটে থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছাড়া হয়ে পড়েছেন। তৃণমূলেও যাতায়াত নেই তাদের। সরকারদলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা গণসংযোগ, কেন্দ্র কমিটি, শোডাউনসহ করতে পারলেও এসবের কিছুই করতে পারছেন না বিএনপির প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো পোস্টার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন লাগানো কিংবা শোডাউনের মতো কর্মসূচি দিতে পারছেন না।

গাজীপুর-১ (সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৬ ওয়ার্ড ও কালিয়াকৈর উপজেলা) : এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রতিদিনই তিনি এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। আওয়ামী লীগের অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন  উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কামালউদ্দিন শিকদার, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাসেল, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল ইসলাম বাবুল এবং মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল। অপরদিকে এই আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুলের নামে বিভিন্ন থানায় মামলা আছে কমপক্ষে ৭টি। এই আসনের বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবির খান, কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহম্মেদ। এছাড়া চৌধুরী  তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর নামও শোনা যাচ্ছে। তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

গাজীপুর-২ (গাজীপুর সিটির ১৭ থেকে ৩৮ ও ৪৩ থেকে ৫৭ ওয়ার্ড) : এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেল। অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী টঙ্গী পৌরসভার সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট আজমতউল্লা খান হাইকমান্ডের নির্দেশের অপেক্ষায় আছেন। এ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান প্রায় দুই বছর জেল খেটে এখন ৩০টি মামলা মাথায় নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রয়েছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. হাসান উদ্দিন সরকারের নামে মামলা আছে তিনটি। এই আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দিন সরকার ৭টি, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোহরাব উদ্দিন তিনটি এবং ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জেলা যুগ্ম সম্পাদক ডা. মাজহারুল আলম ৯টি মামলার আসামি।

গাজীপুর-৩ (মির্জাপুর, পিরুজালী ও ভাওয়ালগড় এবং শ্রীপুর উপজেলা) : এ আসনের বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মো. রহমত আলী। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ অবস্থায় তিনি অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে দিচ্ছেন তার ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জামিল হাসান দুর্জয়কে। পিছিয়ে নেই জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজও। অন্যদিকে এই আসনের বিএনপির প্রার্থীরা নেই নির্বাচনী মাঠে। বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ ৯টি, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি পীরজাদা এসএম রুহুল আমীন ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল মোতালেবের নামে ১টি করে মামলা, উপজেলা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান ফকির ৩টি মামলার আসামি। এছাড়া নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইজাদুর রহমান মিলনও মামলার আসামি।

গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া উপজেলা) : এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান এমপি সিমিন হোসেন রিমি। আওয়ামী লীগের রিমি এমপির বিরোধীরা কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আলম আহমেদের পক্ষে রয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়ে। আলম আহমেদের পক্ষে তিনি নিজে ছাড়াও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে মাঝেমধ্যে শোডাউন করছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ। এই আসনে এখন বিএনপির মূল প্রার্থী প্রয়াত হান্নান শাহর ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান। তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় আসামি হয়েছেন এবং জেলও খেটেছেন। জামিনে আছেন তিনি। তিনি জানান, পুলিশি বাধা কিংবা গ্রেফতার আতঙ্কে তাদের দলীয় ২০ জন লোকও একসঙ্গে জড়ো হতে পারেন না।

গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ, বাড়িয়া ইউপি ও সিটির ৩৯ থেকে ৪২ ওয়ার্ড) : এ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী বর্তমান এমপি মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামানের পোস্টার, বিলবোর্ড এলাকায় রয়েছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। এলাকায় নেই এই আসনের বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন। গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন থানায় এই সরকারের আমলে ৩৩টি রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েছেন তিনি।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads