• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
শীর্ষ নেতাদের আসনে জোটসঙ্গীদের ছাড় দেবে না আ.লীগ-বিএনপি

লোগো আ.লীগ ও বিএনপি

নির্বাচন

শীর্ষ নেতাদের আসনে জোটসঙ্গীদের ছাড় দেবে না আ.লীগ-বিএনপি

  • রেজাউল করিম লাবলু/হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ১৫ নভেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের সংসদীয় আসন থেকে দলের প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। জাতীয় রাজনীতির পাশাপাশি নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় তৎপর ও জনপ্রিয় এসব নেতার আসনে জোটভুক্ত অন্য দলের বড় কোনো নেতাকে ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা এখনো নেই। জোটগতভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার কথা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। কত আসনে দুই প্রধান দল জোটভুক্ত নেতাদের ছাড় দেবে তা নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

গত শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ধানমন্ডিতে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়ে তা জমা দেওয়ার দিন শেষ হয় গত মঙ্গলবার। গতকাল বুধবার দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে শুরু হয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎপর্ব ।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ের ৮১ নেতা মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এদের প্রায় সবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। অসুস্থতার কারণে দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সংসদ উপনেতার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হলেও তাদের ভোটে অংশগ্রহণ অনিশ্চিত।

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে দুই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। একটি গোপালগঞ্জ-৩ আসনের। আরেকটি কোন আসনের তা দলের পক্ষ থেকে এখনো জানানো হয়নি। তবে তার রাজনৈতিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রংপুর-৬ আসনের জন্য অন্য মনোনয়নপত্রটি কেনা হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা ওই আসনটি ছেড়ে দিলে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের জন্য নোয়াখালী-৫ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বর্তমানে অসুস্থ। তার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে কিশোরগঞ্জ-১ আসনের।

অসুস্থ জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর জন্য ফরিদপুর-২ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

ভোলা-১ আসনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা তোফায়েল আহমেদের পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনা হয়েছে। ঝালকাঠি-২ থেকে মনোনয়নপত্র কিনেছেন দলের আরেক প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু।

দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম গোপালগঞ্জ-২, মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ-১, কাজী জাফরউল্লাহ ফরিদপুর-৪, মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন। কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খানের গোপালগঞ্জ-১ আসন থেকে লড়াই করার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ ছাড়া দলের কেন্দ্রীয় কমিটির চার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকও দলের প্রতীক নৌকা নিয়ে এবার লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিজ নিজ সংসদীয় আসন থেকে। তাদের মধ্যে মাহবুব-উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া-৩, ডা. দীপু মনি চাঁদপুর-৩, আবদুর রহমান ফরিদপুর-১ এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঢাকা-১৩ থেকে লড়ার কথা।

অন্যদিকে নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০-দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বিভিন্ন আসনে মনোনয়নে ছাড় দেবে বিএনপি। একাধিক আসনে এ ছাড় দেওয়া হলেও দলের শীর্ষ নেতাদের আসনে কাউকে ছাড় দেবে না বিএনপি।

গত সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়। তা চলবে কাল শুক্রবার পর্যন্ত। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার দিন এখনো  চূড়ান্ত হয়নি।

কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ সংসদীয় আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। দলের মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিন গত সোমবার খালেদা জিয়ার পক্ষে এই তিন আসনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়। দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি না তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিনেছেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের মনোনয়ন ফরম।

বিএনপি সূত্র বলছে, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লা-১ আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন। পাশাপাশি কুমিল্লা-২ আসনে তাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি কুমিল্লার বিভিন্ন পর্যায়ের দলের নেতাকর্মীদের। ওই আসনে ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মরহুম এম কে আনোয়ার।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৫। বিএনপি তাকে এই আসনেই মনোনয়ন দিতে চায়। দলের হাইকমান্ড এমনটাই স্থির করেছে। তবে দলের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, মওদুদ আহমদ নোয়াখালী-৫ আসন থেকে নির্বাচন করতে চান না। তিনি চান বগুড়া থেকে নির্বাচন করতে। এজন্য তিনি লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি ভেবে দেখার কথা জানিয়েছেন তারেক রহমান।

ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার পঞ্চগড়-১ আসন থেকে নির্বাচন করে এলেও এবার মনোনয়ন চান ছেলে ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরের জন্য। 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান নরসিংদী-২ আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস কিনেছেন ঢাকা-৮ আসনের মনোনয়নপত্র।

ঢাকা-৩ আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। অষ্টম অবস্থানে প্রথমবারের মতো মনোনয়নপত্র কিনেছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তিনি কিনেছেন ফেনী-৩ আসনের।

চট্টগ্রাম-১১ আসনের মনোনয়নপত্র কিনেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান কিনেছেন নোয়াখালী-৪ আসনের মনোনয়নপত্র।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads