• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
আ.লীগ-ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা থাকছে

লোগো আ.লীগ ও ‍বিএনপি

নির্বাচন

আ.লীগ-ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহারে যা থাকছে

  • রেজাউল করিম লাবলু ও হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ১৭ নভেম্বর ২০১৮

আধুনিক উন্নত মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি

হাসান শান্তনু

বাংলাদেশকে আধুনিক, উন্নত ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠায় পরিকল্পিত ও নির্দিষ্ট কর্মসূচির কথা থাকছে আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে। তারুণদের আশাজাগানিয়া ও যুবকদের ভবিষ্যৎ গড়ার নানা কর্মসূচির সঙ্গে থাকছে দেশের প্রবীণ নাগরিকদের জন্য একগুচ্ছ মানবিক উপহার। থাকবে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দৃঢ় ঘোষণা। নারীর ক্ষমতায়নের ধারা অব্যাহত রাখা ও দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে দেশ থেকে তা একেবারে বিদায়ের অঙ্গীকার।

ক্ষমতাসীন দলটির এবারের ইশতেহারের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত স্লোগান ‘সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।’ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সরকারি-বেসরকারি সব খাতের জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচি আর উদ্যোগে ইশতেহারও সমৃদ্ধ বলে মনে করেন ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতরা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলটির ইশতেহার তৈরির প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ২০০৮ ও ২০১৪ সালের ইশতেহারের মতো চমক সৃষ্টি করতে ইশতেহার ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।

সূত্র জানায়, প্রায় সব শ্রেণির মানুষের চাহিদা ও মতামত সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে সেসবের আলোকে তৈরি হচ্ছে ইশতেহারের খসড়া। চলছে শেষ পর্যায়ের ঘষামাজা বা সংযোজন-বিয়োজন। আওয়ামী লীগের টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ের লক্ষ্যে চমকপ্রদ ও বিশ্বাসযোগ্য ইশতেহার উপহার দেওয়াই নীতি-নির্ধারকদের প্রচেষ্টা।

তৃতীয় দফায় সরকার গঠন করে কোনো উদ্যোগ ও কর্মসূচি কত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে মনে করছে, সে সময়েরও উল্লেখ থাকবে বেশ কয়েক ক্ষেত্রে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে যে উন্নয়ন অব্যাহত থাকে, এ বিষয়ে ইশতেহারে স্পষ্ট বক্তব্য থাকবে। দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর মতো বিষয়ও এতে প্রাধান্য পাচ্ছে।

সূত্র মতে, ২০২১ সালের মধ্যে সব ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, ২০৪১ সালের আগেই দেশকে আধুনিক, উন্নত ও মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার কথা থাকছে ইশতেহারে। প্রতিশ্রুত দেশ গড়তে করণীয় সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা ও  একটি গাইডলাইনও থাকবে। নির্ধারিত ২০৪১ সালকে টার্গেট করে আধুনিক শিক্ষা, কর্মসংসংস্থান, প্রশাসন ও সেবা খাতের বিকেন্দ্রীকরণও গুরুত্ব পাচ্ছে। থাকছে দেশের জন্য আগামী ১০০ বছরের কর্মপরিকল্পনা। ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে- এর একটি রূপকল্পও তুলে ধরা হবে।

ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত সূত্র জানায়, এবারের বিশেষ অঙ্গীকার হবে দেশজুড়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এবার ভোটদাতার তালিকায় যোগ হচ্ছে দেড় কোটি তরুণ। বিশেষ লক্ষ্য রাখা হচ্ছে তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করার। তাদের কথা বিচেনায় রেখে ও নতুন সময়ের ঝুঁকি মোকাবেলার সমাধান পথও থাকছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কীভাবে প্রযুক্তিমনস্ক ও দেশের সম্পদে পরিণত করা যায়, এসব বিষয়ে দিক-নির্দেশনা যোগ হচ্ছে ইশতেহারে।

তথ্যপ্রযুক্তির সম্প্রসারণ, আইসিটি ও মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নের ঘোষণা রাখা হচ্ছে। যুব সমাজকে প্রশিক্ষিত করে ও কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় তাদের সম্পৃক্ত করার বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এসব বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ ছাড়া তরুণদের কর্মসংস্থান ও নিজের পায়ে দাঁড়াতে বিশেষ ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থার কথাও থাকছে ইশতেহারে।

জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে নীতিগত অবস্থানের কথা তুলে ধরা হবে। মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও থাকছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের স্পষ্ট অবস্থানের কথা থাকছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণাও আছে। উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে দশটি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। অগ্রাধিকার পাচ্ছে গণতন্ত্র, কার্যকর সংসদ ও গণমুখী দক্ষ প্রশাসন। সমানভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা। যোগ হতে পারে ‘ব্লু ইকোনমি’র বিষয়টি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্র জানায়, গত কয়েকবারের সংসদ নির্বাচনের তুলনায় এবার কিছুটা আগে ইশতেহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরিকল্পনা দলের ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব নাও হতে পারে। ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ইশতেহারের খসড়া দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখালে তিনি আরো কিছু সংযোজনের পরামর্শ দেন। তার পরামর্শের ভিত্তিতে উপ-কমিটি শিগগিরই আবার বৈঠক করার কথা। এরপর ইশতেহার চূড়ান্ত হওয়ার কথা দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে। ফলে আগামী ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের পর ছাড়া ইশতেহার ঘোষণা করা সম্ভব না-ও হতে পারে বলে সূত্র উল্লেখ করে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনের দশদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইশতেহার ঘোষণা করবেন।’ গত অক্টোবরে গঠিত দলের ১২ সদস্য বিশিষ্ট ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের খবরকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘এসব বিষয়ে এখনই আমাদের কিছু বলার অনুমতি নেই।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, ইশতেহার ঘোষণা ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত গড়াতে পারে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৭ দিন ও দশম সংসদ নির্বাচনের ৭ দিন আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষিত হয়।

 

রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার

 

রেজাউল করিম লাবলু

জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকারে তৈরি হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহার। পাশাপাশি মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাজনীতি, সৃজনশীল রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার বাস্তবায়ন, সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধসহ দফাওয়ারি নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের কাজ চলেছে। বিশেষ করে যে ১১ লক্ষ্য সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে সে আলোকে তৈরি হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহার। শিগগিরই তা মানুষের সামনে উপস্থাপন করা হবে। গতকাল বাংলাদেশের খবরকে এমনটাই জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জনগণ দেশের মালিক। কিন্তু আজ সরকার জনগণকে রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে গুটিকয়েক ব্যক্তির ব্যক্তিগত স্বার্থে। ঐক্যফ্রন্ট চায় জনগণকে তাদের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে। সেই লক্ষ্যে জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইশতেহার করছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। শিগগিরই তা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।

ফ্রন্ট নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের সমন্বয়ে ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি করা হয়েছে। ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির নেতাদের পরামর্শে ইশতেহার প্রণয়ন কমিটি কাজ করছে। ফ্রন্টের শরিকরা তাদের চিন্তাভাবনা জমা দিচ্ছেন। সেগুলো সমন্বয় করে ইশতেহার চূড়ান্ত করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সরকারবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ১১টি লক্ষ্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। তার আলোকেই ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। ১১টি লক্ষ্যের পাশাপাশি বিএনপি ইতিপূর্বে যে ভিশন-২০৩০ প্রণয়ন করেছে তার আলোকেই ইশতেহার হচ্ছে। 

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১ লক্ষ্য : ১. মহান মুক্তি সংগ্রামের চেতনায় বর্তমান স্বেচ্ছাচারী শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে সুশাসন, ন্যায়ভিত্তিক, শোষণমুক্ত ও কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা। এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক নির্বাহী ক্ষমতার অবসানকল্পে সংসদ, সরকার, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনাসহ প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ ও ন্যায়পাল নিয়োগ করা। ২. সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের যুগোপযোগী সংশোধন করে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। ৩. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারক নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়ন ও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন। ৪. ‍দুর্নীতি দমন কমিশনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার। ৫. দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিবেশ সৃষ্টি, বেকারত্বের অবসান ও শিক্ষিত যুবসমাজের সৃজনশীলতাসহ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়োগ দানের ক্ষেত্রে মেধাকে যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় কোটা সংস্কার। ৬. সব নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকারের নিশ্চয়তার বিধান। নারীর ক্ষমতায়ন। ৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দুর্নীতি ও দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন। ৮. বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা, জাতীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার, সুষম বণ্টন, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূরীকরণ ও জনকল্যাণমুখী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত। নিম্ন আয়ের মানবিক জীবনমান এবং দ্রব্যমূলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন-মজুরি কাঠামো নির্ধারণ। ৯. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জাতীয় ঐকমত্য গঠন এবং প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা ও নেতিবাচক রাজনীতির বিপরীতে ইতিবাচক সৃজনশীল এবং কার্যকর ভারসাম্যের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা। কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে না দেওয়া। ১০. ‘সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’-এই নীতির আলোকে জনস্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তাকে সমুন্নত রেখে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ। ১১. বিশ্বের সব নিপীড়িত মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনের কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার। এ ছাড়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আধুনিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও সমর-সম্ভারে সুসজ্জিত, সুসংগঠিত ও যুগোপযোগী করা।

বিএনপির ভিশন-২০৩০-এর যে অংশ ইশতেহারে থাকবে : ১. বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল আজ সে রাষ্ট্রের  মালিকানা তাদের হাতে নেই। তাই দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে চায় বিএনপি। ২. বিএনপি এমন এক উদার গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাস করে যেখানে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত হবে। যেকোনো মত ও বিশ্বাসকে অমর্যাদা না করার নীতিতে বিএনপি দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ। ৩. বিএনপি ‘ওয়ান ডে ডেমোক্র্যাসিতে’ বিশ্বাসী নয়। জনগণের ক্ষমতাকে কেবল নির্বাচনের দিন বা ভোট দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায় না বিএনপি। ৪. সুধী সমাজ, গণমাধ্যম, জনমত জরিপ, জনগণের দৈনন্দিন চাওয়া-পাওয়া, বিশেষজ্ঞ মতামত ও সব ধরনের অভিজ্ঞানের নির্যাস গ্রহণ করে দেশ পরিচালনা। ৫. বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য। ৬. সংবিধানের এককেন্দ্রিক চরিত্র অক্ষুণ্ন রেখে বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থা সংস্কার করে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ৭. ২০০৯ সাল থেকে আনা সংশোধনী পর্যালোচনা করে সাংবিধানিক সংস্কার। ৮. সংবিধানে ‘গণভোট’ ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন। ৯. জাতীয় সংসদকে সব জাতীয় কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত। ১০. সব মত ও পথকে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা। ১১. বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার’ লক্ষ্যে জাতিকে পৌঁছাতে সুনীতি, সুশাসন এবং সুসরকারের (৩এ) সমন্বয় ঘটানোর কথা ইশতেহারে উল্লেখ করবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads