• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

নির্বাচন

ভোটে নিবন্ধিত ৫০ শতাংশ দলের প্রতীক নৌকা-ধানের শীষ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ নভেম্বর ২০১৮

নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা এখন ৩৯। রাজনৈতিক এসব দলের ৫০ শতাংশ নিজেদের নির্বাচনী প্রতীক রেখে এখন দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ব্যানারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটে অংশগ্রহণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সর্বশেষ রাজনৈতিক মেরুকরণে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ১৮ দল ‘নৌকা’ ও ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার ইচ্ছা জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিয়েছে। চিঠি অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে আটটি নিবন্ধিত দল। অন্যদিকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের হয়ে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছে ১১ দল। অভিন্ন প্রতীকে নির্বাচন করতে চাইলে তা জানানোর শেষ দিন গত  বৃহস্পতিবার এই চিঠি নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে দেওয়া হয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের ক্ষেত্রে অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারের যে সুযোগ আইনে রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিজেদের অস্তিত্ব রাখতে চায়।

এদিকে বর্তমান দশম সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী হলেও নিজেদের প্রতীক লাঙ্গল নিয়েই তারা ভোট করবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোটভুক্ত হলেও লাঙ্গলে না গিয়ে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। অন্যদিকে বাম দলগুলো আলাদাভাবে জোট করলেও ভোটে অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারের আবেদন করেনি।

নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটের শরিকদের তালিকা আগেই দিয়েছে। দলগুলো আলাদা আলাদা চিঠিও দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও তালিকা দিয়েছে। আইনে যেভাবে রয়েছে তারা সেভাবে প্রতীক পাবে।’

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজনৈতিক যেসব দল জোটভুক্ত হয়ে অভিন্ন প্রতীকে ভোটে অংশগ্রহণের জন্য ইসিতে চিঠি দেয়নি, সেসব দলের প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচন করবেন। নির্বাচন কমিশনে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ হাসিনার পাঠানো চিঠিতে নাম দেওয়া হয়েছে মোট ১৬ দলের। এগুলোর মধ্যে নিবন্ধিত দল আটটি। আওয়ামী লীগ বলছে, তাদের জোট শরিকরা নৌকা প্রতীকেই ভোট করবে। ভোটের বৈতরণী পার হতে ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নৌকায় চড়ে বসা নিবন্ধিত দলগুলো- জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), তরিকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টি (জেপি)।

জোটের অনিবন্ধিত দল গণ আজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল, ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাসদ, কৃষক শ্রমিক পার্টি ও তৃণমূল বিএনপি। যুক্তফ্রন্টের বিকল্পধারাও ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে জোটে আসার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে।

দলটি জানিয়েছে, ১৪ দলের সঙ্গে মহাজোট সম্প্রসারণ বিষয়ে তাদের আলোচনা এখনো চলছে। মহাজোটে অংশ নিলে যুক্তফ্রন্ট ও বিকল্পধারার কিছু প্রার্থী ক্ষেত্রবিশেষে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবেন। অনিবন্ধিত দলের ভোটে অংশ নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে অনিবন্ধিত দলের প্রার্থীরাও নিবন্ধিত দলের মনোনয়নে তাদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধিত দলের প্রার্থী হিসেবেই বিবেচনা করে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির সঙ্গে এবার ২০-দলীয় জোট এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রয়েছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, মোট ১১টি নিবন্ধিত দল তাদের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোট করবে। ২০-দলীয় জোটের নিবন্ধিত অন্যান্য দল- এলডিপি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ। এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকা গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও জোটগতভাবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক ব্যবহারের কথা জানিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনে বৃহস্পতিবার জোটভুক্তি নিয়ে চিঠি দেওয়ার পর গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ঐক্যফ্রন্টভুক্ত অনিবন্ধিত দলের কেউ প্রার্থী হলে তারাও ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহার করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেক্ষেত্রে নাগরিক ঐক্য, ঐক্য প্রক্রিয়ার কেউ প্রার্থী হলে কাগজে-কলমে তাকে বিএনপির হয়েই ভোট করতে হবে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। ২ ডিসেম্বর বাছাইয়ের পর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক পাওয়ার পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করতে পারবেন প্রার্থীরা। ভোট হবে ৩০ ডিসেম্বর।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads