• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আছে বাড়ি, নেই গাড়ি

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচন

সংরক্ষিত ছবি

নির্বাচন

আছে বাড়ি, নেই গাড়ি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন পাঁচ প্রার্থী। এই পাঁচ প্রার্থীর তিনজনই কোটিপতি। পেশায় তারা ব্যবসায়ী। একজনের বাড়ি আছে তো গাড়ি নেই। আরেকজনের গাড়ি আছে তো বাড়ি নেই। তবে শিক্ষাগত যোগ্যতায় অনেক পিছিয়ে আছেন আরেকজন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে তাদের এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

এই তিন প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের মো. আতিকুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) ববি হাজ্জাজ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুর রহিম।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের হলফনামা বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ৫৮ বছর বয়সী এই প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা বিকম (পাস)। তিনি ১৬টি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার বার্ষিক আয় কোটি টাকার বেশি। বাড়ি থাকলেও নিজের নামে কোনো গাড়ি নেই। হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কৃষি খাত থেকে তার আয় ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা; বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া থেকে আসে ৩৬ লাখ ৫০ হাজার ৪০৪ টাকা; ব্যবসা (পারিতোষিক) থেকে ৫১ লাখ ৪০ হাজার টাকা; অন্যান্য খাত থেকে পান ১৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫৭১ টাকা।

আতিকের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে নগদ রয়েছে ৮৭ হাজার ৬৩ টাকা; বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকে জমা আছে ১৫৭৬.১৩ ইউএস ডলার; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ কোটি ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৪৫৯ টাকা; বন্ড, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির ৩ কোটি ৭৫ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে। এছাড়া ২ লাখ টাকার সোনা, ৫ লাখ টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং ৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে তার।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে আতিকের নামে ৪ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার ২৯১ টাকার (পরিমাণ ১০৭৪.০৩৫ শতাংশ) কৃষি জমি; অকৃষি জমি রয়েছে ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩৩ টাকার; বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার; মৎস্য খামার ১ লাখ ২০ হাজার টাকার।

আতিকের স্ত্রী শায়লা শগুফতা ইসলামের পেশা চিকিৎসক। সেখান থেকে ১৯ লাখ ৫০ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় আসে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯২ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে নগদ ২ কোটি ৫৯ লাখ ২৯ হাজার ৭৬৪ টাকা (ব্যবসার পুঁজি ২ কোটি), ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৫ টাকা, স্বর্ণ ৩০ ভরি, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৩ লাখ ও আসবাবপত্র রয়েছে ২ লাখ টাকার। ৩২ লাখ ১ হাজার ৭৫৩ টাকার কৃষি জমি রয়েছে। ৫০ লাখ টাকার (বায়নাকৃত) বাড়ি এবং অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।  এছাড়া ১ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গৃহঋণ থাকার কথাও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন আতিক।

ধনকুবের হিসেবে পরিচিত মুসা বিন শমসেরের ৪১ বছর বয়সী ছেলে ববি হাজ্জাজ ব্যবসার সঙ্গে শিক্ষকতাও করেন। এমবিএ পাস ববি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তবে গাড়ি থাকলেও বাড়ি নেই তার। হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন শিক্ষকতা থেকে ৩ লাখ ২৭ হাজার টাকা, অন্যান্য খাতে ১২ হাজার ৪১২ টাকা। এছাড়া ৫০০টি শেয়ার রয়েছে তার। স্ত্রীর আয় ৩ লাখ টাকা দেখিয়েছেন তিনি।

ববির অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে নগদ টাকা ৫৪ লাখ ১০ হাজার ৮৬ টাকা; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪০ টাকা; ৫০০ শেয়ার, ১টি মোটর গাড়ি; ১০ হাজার টাকার স্বর্ণ; ৫০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছেন। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা রয়েছে ৪৫ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ৪০ লাখ টাকার ১০০ ভরি স্বর্ণ রয়েছে স্ত্রীর নামে। তবে তার কোনো স্থাবর সম্পদ নেই।

৬৪ বছর বয়সী আবদুর রহিম মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস। পেশায় তিনি একজন রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী। নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী তার ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৭ টাকা, তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৪২ টাকা।

অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নগদ রয়েছে ৩ লাখ ৩ হাজার ৩০০ টাকা; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬৫ লাখ ২০ হাজার ৫৪০ টাকা; বন্ড, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির ৩ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার রয়েছে তার। নিজের নামে রয়েছে ২০ ভরি স্বর্ণ। আর স্ত্রীর আছে ১০ ভরি। স্ত্রীর নামে নগদ ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৮ টাকা; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৮৮ লাখ ৮০ হাজার ২০৫ টাকা; ২ কোটি ২১ লাখ টাকার বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষি জমি রয়েছে ৮৮ শতাংশ; স্ত্রীর নামে কৃষি জমি রয়েছে ৫২ শতাংশ। নিজের নামে দালান রয়েছে ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৫২০ টাকার। স্ত্রীর রয়েছে ব্যাংকঋণ। ব্যবসায়ী রহিমের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে আটটি।

আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য ঢাকা উত্তরে নতুন মেয়র নির্বাচনের জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। প্রার্থী হতে ছয়জন মনোনয়ন জমা দিলেও বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যান্ডশিল্পী শাফিন আহমেদ। তিন কোটিপতির সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছেন পিডিপির শাহীন খান এবং এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads