• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
আ.লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী শতাধিক

উপজেলা নির্বাচন আ.লীগ

নির্বাচন

উপজেলা নির্বাচন

আ.লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী শতাধিক

  • রেজাউল করিম হীরা
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মনোনয়ন না পেয়ে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের শতাধিক নেতা। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮৬ উপজেলায় ভোট আগামী ১০ মার্চ। ইতোমধ্যে এসব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে দলটি। দলের মনোনয়ন বঞ্চিতরা কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী কুড়িগ্রাম জেলায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কঠোর হুশিয়ারির পরও প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই আছেন ১১৩ জন। এদের সবাই জেলা পর্যায়ের দল বা সহযোগী সংগঠনের কোনো না কোনো পদে আছেন। গত রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। প্রার্থীদের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মনোনয়ন প্রাপ্তদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করলেও মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে দেখা দেয় ক্ষোভ। ফলে মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। তবে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ আছে আগামীকাল ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

সবচেয়ে বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন কুড়িগ্রামে। এই জেলার ৯ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে ৩১ জন। এর পরই আছে সুনামগঞ্জ। এই জেলার ১০ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ২৪ জন। এ ছাড়া রাজশাহী জেলার ৯ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী ৬ জন, জয়পুরহাটের ৫ উপজেলায় ৩ জন, সিরাজগঞ্জের ৮ উপজেলায় ১০ জন, নাটোরের ৬ উপজেলায় ৭ জন, লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় ৯ জন, নেত্রকোনার ৯ উপজেলায় ৬ জন, জামালপুরে ৭ উপজেলায় ৮ জন, হবিগঞ্জের ৮ উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ৯ জন।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাদের পক্ষেই দলের স্থানীয় পর্যায়ের সকল নেতাকর্মীকে কাজ করতে হবে। যেসব নেতাকর্মী দলের এই আদেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হলে সে ক্ষেত্রে আজীবন বহিষ্কারের খড়গ তো আছেই। যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদের অভিজ্ঞতা ও জনপ্রিয়তা, দলের জন্য ত্যাগ ও গ্রহণযোগ্যতাসহ নানা বিষয় যাচাই-বাছাই করেই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তাদের সব কিছু বিবেচনা করেই মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা ও অভিজ্ঞতার পাশাপাশি দলের জন্য নিবেদিত কি না এসব কিছু বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবেও তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তৃণমূল থেকেও নাম চাওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ীই উপজেলায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠেয় স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট অংশগ্রহণ না করলেও কোনো কোনো উপজেলায় তাদের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। গত সোমবার দেশের চার বিভাগে ১২টি জেলার ৮৬টি উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। শান্তিপূর্ণভাবেই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রার্থীরা। প্রার্থী না থাকায় জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গিয়াসউদ্দিন পাঠান, মেলান্দহে ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান, মাদারগঞ্জে ওবায়দুর রহমান বেলাল ও জয়পুরহাট সদরে এসএম সোলায়মান আলী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।

পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৮৭টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। উচ্চ আদালতের রায়ে গত সোমবার রাজশাহীর পবা উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। এ কারণে প্রথম ধাপে ৮৬টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব উপজেলায় মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারিত রয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচার। আগামী ১০ মার্চ এ ৮৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads