• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
বগুড়ার উপনির্বাচনে যাবে না বিএনপি

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

বগুড়ার উপনির্বাচনে যাবে না বিএনপি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ মে ২০১৯

বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না বিএনপি। এর অংশ হিসেবে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম শপথ না-নেওয়ায় শূন্য হওয়া বগুড়া-৬ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেবে না দলটি। তবে দলীয় সিদ্ধান্তে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার কারণে একটি নারী আসনে প্রার্থী দেবে তারা।

তবে বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ ব্যাপারে দল এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘কারচুপি’র নির্বাচন আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি। একই সিদ্ধান্ত নেয় গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত নির্বাচনী ঐক্যজোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্য শরিক দলগুলোও। তারা জানিয়েছিল, ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত ৮ এমপির কেউই সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন না। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ও মোকাব্বির খান ওই ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন। এর ধারাবাহিকতায় শপথ নেন ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদ। দলের ও ফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় এই তিনজনের দুইজনকে বহিষ্কার এবং একজনকে শোকজও করা হয়। কিন্তু শপথ নেওয়ার নির্ধারিত সময়ের শেষদিনে দল থেকে নির্বাচিত বাকি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের শপথ নেওয়ার নাটকীয় সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। শুধু দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কৌশলগত কারণে শপথ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন। ফলে শপথে নেওয়ার নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল মির্জা ফখরুলের বগুড়া-৬ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। এরপর নির্বাচন কমিশন আগামী ২৪ জুন এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৭ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩ জুন। ২৪ জুন সকাল ৯টা থেকে একটানা বিকাল ৫টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হবে।

বগুড়া-৬ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির পরবর্তী কৌশল কী হবে তা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক কৌতূহল আছে। শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের মতো বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়েও বিএনপি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে এমন আলোচনাও আছে রাজনৈতিক মহলে। তবে এ বিষয়ে বিএনপিতে আছে নানা মত। স্থায়ী কমিটির নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে শপথের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ায় নীতিনির্ধারকরাও চুপচাপ। নেতাকর্মীদের অধিকাংশই উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে। তবে দলের ছোট একটি অংশের মত হচ্ছে, প্রতিযোগিতা মূলত সব ধরনের নির্বাচনে থাকা উচিত বিএনপির। নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মত থাকলেও দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ দলের প্রভাবশালী এক নেতা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, খুশি মনে সংসদে যায়নি বিএনপি। ক্ষমতাসীন মহলের চাপ, নির্বাচিত এমপিদের চাপ, বিদেশিদের চাপ এবং শরিকদের একটি অংশের চাপে এবং পরবর্তী নানা শঙ্কা থেকে সংসদে যেতে বিএনপি বাধ্য হয়েছে। কিন্তু কারচুপির নির্বাচনের প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচিত হয়েও শপথ নেননি। তবে এই আসনে উপনির্বাচনে বিএনপি যাবে না। কারণ এই আসনে নির্বাচনে গেলে প্রতীকী প্রতিবাদও আর থাকে না। এর বাইরে বর্তমান সরকারের অধীনে অন্য কোনো নির্বাচনে না যাওয়ারও সিদ্ধান্ত থেকেও বিএনপি সরে আসবে না।

সংরক্ষিত নারী আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে ওই নেতা বলেন, সরাসরি নির্বাচনের বিষয় থাকলে সংরক্ষিত নারী আসনে বিএনপি প্রার্থী দিত না। যেহেতু এটা কোটার ভিত্তিতে হচ্ছে সেহেতু প্রাপ্য একজন নারী এমপি সংসদে পাঠাবে বিএনপি। অনেকের নাম আলোচনায় থাকলেও এ ক্ষেত্রে সিনিয়র নেত্রী সেলিমা রহমানকে নিয়েই ভাবা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।

সংরক্ষিত নারী আসনটির নির্বাচনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, একাদশ জাতীয় সংসদের ৪৯টি সংরক্ষিত আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির অনুকূলে বণ্টন করা অবশিষ্ট একটি সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২০ মে, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন ২৯ মে এবং ভোটগ্রহণ হবে ১৬ জুন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে সংরিক্ষত আসনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads