• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট ১৫ জুলাই

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন

ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট ১৫ জুলাই

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৪ জুন ২০১৯

ছাত্রদলের কাউন্সিলের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১৫ জুলাই। গতকাল রোববার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ‘কাউন্সিল-২০১৯’-এর এই তফসিল ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে আগামী ১৫ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ হবে। তবে ভোটকেন্দ্রের স্থান এখনো ঠিক করা হয়নি। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের অবশ্যই ২০০০ সালের পরের এসএসসি পরীক্ষার্থী হতে হবে।

তফসিল অনুযায়ী আজ সোমবার ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

ভোটার তালিকার ওপর আপত্তি ১৪ জুন, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ২৬ জুন, মনোনয়নপত্র বিতরণ ২৭ ও ২৮ জুন, মনোনয়নপত্র জমাদান ২৯ ও ৩০ জুন, প্রার্থী বাছাই ১, ২ ও ৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে।

আগামী ৪ জুলাই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, তালিকার ওপর আপত্তি ও নিষ্পত্তি ৫ ও ৬ জুলাই এবং চূড়ান্ত তালিকা ৭ জুলাই প্রকাশ করা হবে।

তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা আগামী ১৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন।

তফসিল ঘোষণার আগে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ছাত্রদল এ দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়, স্বাধীনতা রক্ষায় সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। শহীদ জিয়াউর রহমানের হাত ধরে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু।’

তিনি বলেন, ‘ইতিহাসের প্রয়োজনে আজকে আবার ছাত্রদলকে জেগে ওঠার প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই কারণে আমরা নব উদ্যোমে এই সংগঠনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ছাত্রদলের আগামীদিনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত ছাত্র নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাউন্সিলের উদ্যোগ নিয়েছি। যে কাউন্সিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ে আগামী ১৫ জুলাই করব। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই ছাত্র নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। এই ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি, যা ছাত্রদল আগামীদিন উদ্যোগ নিয়েছে।’

এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বাছাই কমিটি ও দুদুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করা হয়। 

এক প্রশ্নের জবাবে দুদু বলেন, ‘যারা এ নির্বাচনের প্রার্থী হবেন তাদের অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। বিবাহিতরা প্রার্থী হতে পারবেন না, তারা তো ছাত্র না।’

ভোট কোথায় হবে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা (স্থান) দু-এক দিনের মধ্যে আমরা জানাব।’

ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ ১২ নেতার বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে দুদু বলেন, ‘২০০০ সালে বা এর পরে যারা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন তাকে ভিত্তি করে প্রার্থী হবেন। তাদের সেশন হবে ১৯৯৮ সালে রেজিস্ট্রেশন। ছাত্রদল একটি নিয়মশৃঙ্খলার ছাত্রসংগঠন। এই সংগঠন ডাকসু, রাকসু, ইকসুর নেতৃত্ব দিয়েছে। এমন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই যেখানে এ সংগঠন নেতৃত্ব দেয়নি। এটা স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের প্রধান ছাত্রসংগঠন। সেই সংগঠনের কেউ যদি নিয়ম-শৃঙ্খলার বাইরে যায়, গঠনতন্ত্র মোতাবেক তারা একটা শাস্তির আওতায় আসে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পরে আমরা এখানে (নয়াপল্টনের কার্যালয়ে) তাদের (বিক্ষুব্ধদের) সঙ্গে কথা বলার জন্য এসেছিলাম, সাংবাদিকরা দেখেছেন। আমাদের দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী পার্টির নির্দেশে এখানে কাজ করছেন। পার্টি তাকে যেটা বলতে বলে সে ততটুকু বলেন। সেখানে তাকে টার্গেট করাটা ঠিক তো নয়ই, এটা শৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে না। এটা অনৈতিক ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমনকি এটা ছাত্রদলের সঙ্গে যায় না। এ বিষয়ে পার্টি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার দাবিতে গত ১০ জুন থেকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার তাদের ১২ নেতাকে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগ বহিষ্কারের পর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই তফসিল ঘোষণা করল।

সর্বশেষ ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আকরামুল হাসানকে নির্বাচিত করা হয়।

রাজীব-আকরামের নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করলেও দীর্ঘদিন পরে ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। যাতে ৭৩৬ জনকে পদ দেওয়া হয়েছিল।

গত ৩ জুন বিএনপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়। এরপর ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদলের অনুষ্ঠিতব্য কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

এগুলো হচ্ছে- এক. প্রার্থীদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য হতে হবে, দুই. অবশ্যই বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র হতে হবে এবং তিন. কেবল ২০০০ সাল থেকে পরবর্তীতে যেকোনো বছরে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু ছাড়াও রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জামান রিপন, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শফিউল বারী বাবু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ইয়াসিন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads