• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

নির্বাচন

ভোটার তালিকা প্রকাশে বাধ্যবাধকতা চায় না ইসি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ নভেম্বর ২০১৯

প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ প্রবাসে অধিশাখা স্থাপন করবে। এ ছাড়া বছরের জানুয়ারিতে ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতার বিধানটি রাখতে চায় না ইসি।

প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানসংক্রান্ত নীতিমালা, ২০১৯ থেকে এ তথ্য জানা যায়। নীতিমালার তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে একটি প্রবাসী অধিশাখা স্থাপন করতে হবে। এই প্রবাসী অধিশাখায় এক বা একাধিক শাখা প্রয়োজনীয় জনবলসহ সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। নতুন অধিশাখা বা শাখা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ী ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের বিদ্যমান কোনো একটি শাখার কর্মকর্তাকে প্রবাসী শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করে এ কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। প্রয়োজনীয় জনবল এ শাখায় পদায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশের বৈধ প্রবাসী নাগরিকদের নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয় প্রদানসংক্রান্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে সম্পাদনের লক্ষ্যে প্রবাসে স্থাপিত কার্যালয়ের সঙ্গে এই শাখা সমন্বয় সাধন করবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

এই অনুবিভাগে ‘প্রবাসী শাখা’র মাধ্যমে যেসব কাজ করা হবে, সেগুলো হলো প্রবাস ফেরত আবেদনকারীদের নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান করা, প্রবাসী আবেদনকারীদের সঠিকতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় ও এ সংক্রান্ত কাজে গতি আনা, দেশে/বিদেশে অবস্থানরত রেজিস্ট্রেশন টিমের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সার্বিক সহায়তা ও সমন্বয় করা, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কার্যক্রম ডাটাবেজে সংরক্ষণ এবং হালনাগাদ তথ্যসংবলিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা এবং নির্বাচন কমিশনকে নিয়মিত অবহিত করা।

এ ছাড়া প্রতিবছর জানুয়ারিতে হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিদ্যমান আইনের সংশোধন করে ভোটার তালিকা প্রকাশের সময় কমিশন নিজেই নির্ধারণ করতে চায়। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে নির্বাচন সহায়তা-২ শাখাকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিদ্যমান আইনে (ভোটার তালিকা আইন ২০০৯) প্রতিবছর ২ জানুয়ারি হতে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা এবং দাবি-আপত্তি ও সংশোধনী প্রস্তাব নিষ্পত্তি শেষে ৩১ জানুয়ারি হালনাগাদ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে বলা হয়, ‘ভোটার তালিকা আইনে খসড়া প্রকাশের যে তারিখ উল্লেখ রয়েছে, তা তুলে দিয়ে নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে ভোটার তালিকা প্রকাশের ক্ষমতা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন সহায়তা-২ শাখাকে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।’

এতে আরো বলা হয়, ২০২০ সালের ভোটার তালিকা ১৫ জানুয়ারি হালনাগাদ ও ১ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের ব্যবস্থা রেখে দাবি, আপত্তি ও নিষ্পত্তির তারিখ নির্ধারণ করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশনের পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সঙ্গে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সভায়ও এ বিষয়টি আলোচনা হয়েছিল। ওই বৈঠকে বলা হয়, বর্তমানে হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের জন্য ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি নির্ধারিত আছে। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীত থাকে ও বৃষ্টি কম হয়। স্কুল-কলেজ বন্ধ হওয়ায় নির্বাচন করা সুবিধা হয়। কিন্তু ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হলেও তালিকাভুক্তরা ভোট দিতে পারেন না। তাতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা হয়।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছর (২০২০) খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তার আগেই আইনটির সংশোধনী চান তারা। এক্ষেত্রে নভেম্বরে যে সংসদ অধিবেশন বসছে সেখানেই আইনের সংশোধনীবিষয়ক প্রস্তাবটি আসতে পারে। অবশ্য সংশোধনীটি মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদনসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য অনুষ্ঠেয় ওই অধিবেশনে তোলা সম্ভব না হলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে সেটা জারি হতে পারে। প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকা প্রকাশের বিদ্যমান বাধ্যবাধকতা উঠে গেলে এ বছর জানুয়ারিতেই ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগম হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads