• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

পানিজট আর যানজট একাকার হয়ে অচল করে তুলেছে রাজধানী ঢাকাকে

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সম্পাদকীয়

রাজধানীতে জলাবদ্ধতা

সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় প্রয়োজন

  • প্রকাশিত ২৬ জুলাই ২০১৮

ডুবতে বসেছে রাজধানী ঢাকা। অবিরাম বৃষ্টিতে রাজপথ ডুবে গিয়ে চারদিকে তৈরি হয়েছে চরম দুরবস্থা। শ্রাবণের এই অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাতের কারণ সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ— এর প্রভাবেই লঘুচাপ থেকে শুরু হয়েছে টানা বর্ষণ। গত ৪ দিন ধরেই চলছে শ্রাবণের এই জলধারা। আর তাতেই জীবন-জীবিকার সন্ধানে ছুটে চলা নগরবাসী পড়েছেন ভয়াবহ দুর্ভোগে। গতকাল বুধবার দৈনিক বাংলাদেশের খবরের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে বৃষ্টি হয় ১১৪ মিলিমিটার। এতে প্রধান প্রধান সড়কে পানিজট আর যানজট একাকার হয়ে অচল করে তুলেছে রাজধানী ঢাকাকে। গতি হারিয়ে এই নগরী হয়ে পড়েছে স্থবির।

ঢাকা শহর নিয়ে নগরবাসীর ধৈর্যের বাঁধ এখন ভেঙে গেছে। এতদিন যেভাবে ঢাকার উন্নয়ন হয়েছে, বিচ্ছিন্ন ও খাপছাড়াভাবে সরকারের সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করেছে, সেভাবে যে ঢাকাকে বাঁচানো যাবে না- সেই সত্যটি আবারো প্রমাণিত হলো গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ঢাকার জলমগ্ন হওয়ার দৃশ্য এবং একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে দীর্ঘ যানজট। কোনো কিছুতেই যেন নিয়ন্ত্রণ নেই, ট্রাফিক ব্যবস্থায় ধস নেমেছে। ২০০৫ সালের কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা (এসটিপি) কিংবা ২০১০ সালের জাইকার ‘ঢাকা আরবান স্টাডি’— এর কোনোটাই এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। ঢাকা শহর নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিজেদের মতো করে প্রকল্প বানায় এবং তা পাসও করে। অবশেষে সেগুলো নিজেদের মতো বাস্তবায়নও করে। পুরো নগর ও পরিবহন পরিকল্পনার সঙ্গে তার মিল আছে কি-না, একটি আরেকটির জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কি-না, এসব নিয়ে ভাবার কেউ নেই। ঢাকা নগরের উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছে একাধিক মন্ত্রণালয় ও সংস্থা। এসব কাজ যে যার মতো করেই করছে। কোনোটির কাজ করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, কোনোটি বাস্তবায়ন করছে রাজউক,  কোনোটি ওয়াসা আবার কোনোটি করছে সড়ক ও জনপথ। সত্যিই এক অদ্ভূত পরিস্থিতি। সমন্বয়হীনতাই ঢাকার উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে, পাশাপাশি নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় দুর্ভোগ সৃষ্টি করে চলেছে।

এমতাবস্থায় ঢাকার জলাবদ্ধতা ও দীর্ঘ যানজট রাজধানীবাসীর ছোট ছোট আশা, স্বপ্ন ও শান্তিময় জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। সুতরাং রাজধানী ঢাকার জলাবদ্ধতা ও দীর্ঘ যানজট নিরসনে দখলিকৃত খাল ও জলাশয় উদ্ধার ও খনন করাসহ আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। উপরন্তু বাসযোগ্য আধুনিক ঢাকা নির্মাণে সরকার গৃহীত মাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) এবং বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি)-এর দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজন সরকারের সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বাসযোগ্য ঢাকার উন্নয়ন। ঢাকাকে বাঁচাতে হলে এর বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads