• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

সংযোগ পেতে ৭১ ভাগ গ্রাহকের ভোগান্তি

বৈদ্যুতিক সেবা নিশ্চিত হোক

  • প্রকাশিত ০৭ অক্টোবর ২০১৮

অগ্রগতির বাংলাদেশে তৃণমূলের ৭১ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত সংবাদটি এ সময়ের বাংলাদেশের জন্য বড়ই অশোভন। উন্নয়ন সহযাত্রায় প্রযুক্তি নির্ভরতা যেখানে দেশের মানুষ ও তাদের কর্মস্থলকে আষ্টেপৃষ্ঠে আবদ্ধ করেছে, সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। গতকাল ৬ অক্টোবর দৈনিক বাংলাদেশের খবরে প্রকাশিত প্রধান প্রতিবেদনে দেশের তৃণমূল গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে ভোগান্তির শিকার হওয়ার সংবাদটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গ্রামের ৭১ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে পিডিবি কর্মকর্তাদের চাহিদা মেটাতে অর্থ খরচ করেও মাসের পর মাস ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইউডি) এক প্রতিবেদনে গ্রাহক ভোগান্তির এই তথ্য উঠে এসেছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়— ঢাকা বিভাগে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে পল্লীবিদ্যুতের চার লাখ গ্রাহক সৃষ্টি করতে ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্প গৃহীত হয় ২০১৪ সালে। বরাদ্দের ৭৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের পর প্রকল্প সংশোধন করে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্প সম্পন্ন করার সময় নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্পটি সম্প্রতি নিবিড় পরিবীক্ষণের আয়োজন করে আইএমইউডি। এতেই প্রকল্পের শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়ম অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতির চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের প্রকল্পগুলোতে অনিয়ম দুর্নীতি রয়েছে। সংযোগ লাইনের নকশায় দুর্বলতা, উপকেন্দ্র নির্মাণ ও ট্রান্সমিটার প্রযুক্তি নির্বাচনে দক্ষতার অভাব, লাইনে পোল কম পোঁতা, ৩৩ কেভি লাইনের অধিকাংশতেই স্কাই ওয়্যার না থাকা, ভাঙা পোলের ব্যবহার, পোল হেলে থাকা, ট্রান্সফরমার উত্তোলন না করেই লাইন তৈরি করা, বেশিরভাগ লাইন রাস্তার পাশে তৈরি না করাসহ আরো

নানান অসংগতি।

প্রতিবেদনের বিস্তারিত তথ্যে বলা হয়েছে, এসব লাইনে নিজস্ব অর্থায়নে সংযোগ দেবে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। বিদ্যুৎ লাইনগুলোর নির্মাণ ত্রুটিতেই গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ানোর কৃত্রিম পন্থা তৈরি হয়ে আছে। এ ছাড়া দেশের তৃণমূলের কয়েকটি এলাকার ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে আইএমইউডি বলছে, ৭১ শতাংশ গ্রাহক বিদ্যুতের সংযোগ পেতে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন, ৯৭ শতাংশ গ্রাহক বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে বাধ্য হয়েছেন। বাড়তি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭৮ শতাংশ গ্রাহককে। আইএমইউডি সংযোগের আবেদন থেকে শুরু করে সংযোগ পাওয়া পর্যন্ত গ্রাহক ভোগান্তিকে বিশদভাবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন।

দেশের প্রতিটি মানুষ এখন বিদ্যুৎ ছাড়া অচল। কারণ বিদ্যুৎ আবাসন থেকে কর্মস্থল সর্বক্ষেত্রেই জীবন-জীবিকার প্রধান অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এমন বাস্তবতায় বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর অবিচার সর্বজনীন উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এসবের জন্য যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা চাই গ্রাহকদের ভোগান্তি দূর করে সহজলভ্য প্রক্রিয়ায় বৈদ্যুতিক সেবা নিশ্চিত  করা হোক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads