• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি

ডিম

সংগৃহীত ছবি

সম্পাদকীয়

ডিমের ডজন ১২০ টাকা

উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি

  • প্রকাশিত ২১ অক্টোবর ২০১৮

এক সপ্তাহ ধরে বাজারে ডিমের দাম বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। ধনী ও মধ্যবিত্তদের জন্য এই মূল্য আহামরি কিছু না হলেও নাগালের বাইরে রয়েছে নিম্নবিত্ত ও হতদরিদ্র মানুষের। হঠাৎ ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে ।

ডিম হচ্ছে ‘পাওয়ার হাউজ অব নিউট্রিশন’ অর্থাৎ পুষ্টির আধার। প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে ডিম অন্যতম। মোটকথা ডিম আদর্শ প্রোটিন ফ্যাক্টরি। শুধু তা-ই নয়, ডিমে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হূদরোগসহ অনেক রোগের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর। পুষ্টিগুণে ভরা এই খাদ্যপণ্যটির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের নিম্ন আয়ের কয়েক কোটি মানুষ এই প্রাণিজ প্রোটিন খেতে পারছে না। খুচরা দোকানে ডিমের ডজন ১২০ টাকা, পাইকারিতে ১১০ টাকা।

খাদ্যপণ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই সেক্টরে উপযুক্ত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নেই বলেই প্রতিবছর কয়েক দফা ডিমের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। গতকাল ২০ অক্টোবর দৈনিক বাংলাদেশের খবরে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, পোল্ট্রি শিল্প সমন্বয়ক কাউন্সিলের সভাপতি মসিউর রহমান জানিয়েছেন, বিগত সময়ে দীর্ঘদিন ডিমের দাম না পেয়ে অনেক খামারিই তাদের খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ছাড়া চালু খামারগুলোতেও এ বছর এইচ৯এন১ নামক ভাইরাসের সংক্রমণে ডিমের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। সংবাদে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, এ বছর সারা দেশে ডিমের উৎপাদন প্রায় ত্রিশ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। এ জন্যই ভোক্তাদের বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে।

দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিক রাখতে এই পণ্যটির উৎপাদনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় খামারিদের ভর্তুকির মতো কোনো ব্যবস্থা নেই এই খাতে। আবার স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়ায় অতীতের তুলনায় এই খাদ্যপণ্যের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৮ বছরে দেশে ডিমের চাহিদা বেড়েছে ৮৮ শতাংশ। তথ্য বলছে, সারা বছরে দেশে চাহিদার তুলনায় ডিমের ঘাটতি রয়েছে ২০০ কোটি ৮৫ লাখ পিস। এর কারণ রোগবালাই, খামারিরা দাম না পেয়ে হঠাৎ উৎপাদন বন্ধ করাসহ আরো নানা রকমের জটিলতা। নিম্নআয়ের দরিদ্র মানুষের আমিষের চাহিদা মেটানোর একমাত্র খাদ্যপণ্য ডিমের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

জানা গেছে, বাজারে খামারের নতুন ডিম আসতে আরো ছয় মাস লেগে যাবে। অনেকেই বলছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করে ডিম আমদানি করা দরকার। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ— এই মুহূর্তে সরকারের সংশ্লিষ্টরা বাজার পর্যবেক্ষণ করে ডিমের দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে আনতে করণীয় নির্ধারণ করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া। পাশাপাশি বাজারে খামারিদের নতুন ডিম না আসা পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে ডিম আমদানির ব্যবস্থা করা। আমরা আশা করছি— নিম্নআয়ের মানুষের গুরুত্বপূর্ণ এই খাদ্যপণ্যটি ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে সরকার জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads