• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অবৈধ গ্যাস সংযোগে বাড়ছে দুর্ঘটনা

ছবি : সংগৃহীত

সম্পাদকীয়

অবৈধ গ্যাস সংযোগে বাড়ছে দুর্ঘটনা

কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি

  • প্রকাশিত ০৪ নভেম্বর ২০১৮

সচেতনতার অভাব, একটু সতর্কতা আর বাড়ির মালিক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কারণে প্রায়ই ঘটছে গ্যাস সংযোগ ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যুর ঘটনা। গত ছয় মাসের ব্যবধানে রাজধানীর আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর ও গাজীপুরের জামগড়াসহ দেশের বিভিন্ন নগরীতে গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে অনেক পরিবারের লোকজন প্রাণ হারিয়েছে। একই পরিবারের পাঁচজনের প্রাণহাণির ঘটনাও ঘটেছে। গত শুক্রবারও আশুলিয়ায় আবারো গ্যাস সংযোগ বিস্ফোরণে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। তবু কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

বিভিন্ন সময় সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, নগরকেন্দ্রিক দৈনন্দিন জীবিকায় জ্বালানির এক অপরিহার্য উপাদান গ্যাস। গ্যাসবিহীন প্রতিদিনের জীবন অচলই বলা চলে। নগরবাসীর গ্যাসের চাহিদা মেটে সরকার নিযুক্ত সরবরাহকৃত প্রতিষ্ঠানের বৈধ সংযোগে আবার কারো কারো সিলিন্ডারের গ্যাসের ওপর। নগরীর অনেক বাড়ির মালিক বৈধ উপায়ে গ্যাসের সংযোগ না পেয়ে অবৈধ উপায়ে সংযোগ নিয়ে চাহিদা পূরণ করছে। আবার বাজারে রয়েছে নামসর্বস্ব বিভিন্ন কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার, যারা গ্রাহকের নিরাপত্তার কথা না ভেবে নিজেদের অধিক লাভের জন্য কম মূল্যের সিলিন্ডারের মাধ্যমে গ্যাস বাজারজাত করছে। যার ফলে প্রায়ই ঘটছে এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্যমতে, ২০১৬-১৭ এই এক বছরে গ্যাসের চুলা থেকে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটেছে ২৩৮টি। গ্যাস সংযোগ লিকেজের ঘটনা ঘটেছে পাঁচ হাজার ৬৫০টি। জানা যায়, সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা নামমাত্র লাইসেন্স নিয়ে যথাযথ প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ছাড়াই গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসায় নেমেছে। অনেক খুচরা ব্যবসায়ী বিস্ফোরক অধিদফতরের সনদ ছাড়াই গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করছেন। অবৈধভাবে সিলিন্ডার গ্যাস, নিম্নমানের রেগুলেটর, নিম্নমানের গ্যাস সরবরাহ পাইপের জন্য অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের মতো দুর্ঘটনা ঘটছে। রাজধানীর নতুন বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগ না দেওয়ায় রান্নার কাজে ব্যবহূত হচ্ছে লিকুডিফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস। নগরীর হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও ছোট চায়ের দোকানেও বোতলজাত গ্যাস ব্যবহূত হচ্ছে। এই সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান। আর এসব বোতলের কারণে সৃষ্ট দুর্ঘটনায় বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। সরকারের বিস্ফোরক অধিদফতর সিলিন্ডার থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনার কারিগরি তদন্ত এবং প্রতি পাঁচ বছর পর সিলিন্ডার পুনঃপরীক্ষা করার কথা। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে পুরনো সিলিন্ডারগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই। যার ফলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। নগরজীবনের চাহিদার সুযোগে যেভাবে বাড়ছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ব্যবসায়ীর সংখ্যা, তাতে আগামী দিনে এই দুর্ঘটনার মাত্রাও বেড়ে যাবে কয়েকগুণে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ নেবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে নিম্নমানের সিলিন্ডার অপসারণ এবং অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধ উপায়ে সরবরাহ করে নাগরিক জীবনের দৈনন্দিন জীবিকা স্বাভাবিক ও নিরাপদ করতে সত্বর ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads