• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
নাগরিকের নিরাপত্তা জরুরি

সংগৃহীত ছবি

সম্পাদকীয়

তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে পাঠাও

নাগরিকের নিরাপত্তা জরুরি

  • প্রকাশিত ০৯ নভেম্বর ২০১৮

দেশের সব নাগরিকেরই নিরাপদ তথ্য সংরক্ষণের অধিকার রয়েছে। তবে দেশে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার আইনটি কার্যকর না হওয়ায় প্রযুক্তির কারণে নানাজনের তথ্য চুরি হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন অজুহাতে। একইভাবে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের বিরুদ্ধেও গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও দেওয়া হয়েছে।

গতকাল দৈনিক বাংলাদেশের খবরে ‘পাঠাওয়ের বিরুদ্ধে তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। খবরের বিবরণে জানা যায়, গ্রাহকের স্মার্টফোনে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য, নাম্বার, এসএমএস, অন্যান্য ইনস্টলড অ্যাপের নাম ও নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত তথ্য রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানটি বিনা প্রয়োজনে হাতিয়ে নিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন— রাইড শেয়ারিংয়ের জন্য গ্রাহকের নাম্বার এবং লোকেশনই যথেষ্ট, অন্যান্য তথ্য সংগ্রহ করার কোনো প্রয়োজন নেই। অনেকেই বলছেন গ্রাহকের অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি উদ্দেশ্যমূলক। এ ছাড়া কারো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি নৈতিকতা বিরোধী এবং আইনের দৃষ্টিতেও জঘন্য অপরাধ।

সম্প্রতি একজন তথ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক পাঠাও অ্যাপের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার এই বিষয়টি ফেসবুকে তুলে ধরেন এবং কীভাবে রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে তা ভিডিওর মাধ্যমে স্পষ্ট ব্যাখ্যা করেন। কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখে না। খবরে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রাহকের নিরাপত্তার স্বার্থেই নাকি তারা এসব তথ্য সংগ্রহ করছে। যে ব্যাখ্যার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমরা যদি ধরে নিই গ্রাহক বা নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা পাচার হয়ে যাচ্ছে, তাহলে বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ।

একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যভান্ডারে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও থাকতে পারে। যেহেতু নগরকেন্দ্রিক বেশিরভাগ মানুষ এখন ‘পাঠাও’ বা ‘উবার’র মতো রাইড শেয়ারিংয়ের ওপর নির্ভরশীল। সেহেতু পাঠাওয়ের প্রচলিত তথ্য সংগ্রহের রীতি দেশের জন্য নিরাপত্তা হুমকিও হতে পারে। পাঠাও প্রতিদিন গ্রাহক সেবার নামে লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য কোন কাজে ব্যবহার করছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। এ ছাড়া দেশে বিদেশি গোয়েন্দা এবং বেসরকারি গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠানেরও অস্তিত্ব রয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে।

রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান বা এমন অন্যান্য প্রতিষ্ঠান দেশের সাধারণ বা গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকদের তথ্য কোথাও পাচার করছে কিনা সে বিষয়টিও প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা চাই সম্পূর্ণ নিরাপদ ব্যবস্থায় সব ধরনের গ্রাহক সেবা নিশ্চিত হোক। নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য হরণ করে সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য যাতে ঝুঁকি তৈরি না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগই এখন সময়ের দাবি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads