• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা

চাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন

  • প্রকাশিত ১০ নভেম্বর ২০১৮

বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২৮ জানুয়ারি। এর মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। সাংবিধানিক দায়িত্ব হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন গত বৃহস্পতিবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল মানে শুধুই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নয়। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত খুঁটিনাটি আরো অনেক বিষয়ের সাংবিধানিক রীতির ঘোষণা।

নির্বাচন আয়োজন করার জন্য যেসব কাজ করতে হয়, সেগুলোর জন্যও একটি সময় বেঁধে দেওয়া হয়। যেমন প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা, বাছাই, প্রত্যাহার, বাতিল, মনোনীতদের তালিকা প্রকাশ, প্রতীক বরাদ্দ, প্রচারণা, ভোট অনুষ্ঠান এবং গণনাসহ সম্পন্ন করার যাবতীয় বিষয়সমূহ এই তফসিলে উল্লেখপূর্বক ঘোষণা করা হয়।

এ ছাড়া কিছু বিষয়ে সংবিধানে একদম নিশ্চিত করে বলা আছে। সেগুলো নিয়ে আদৌ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারই দরকার হয় না। যেমন সংবিধানে বলা আছে, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি সংসদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই নির্বাচন কমিশন দেশের সার্বিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। দেশের একটি রাজনৈতিক জোট নির্বাচনের তফসিল আরো পিছিয়ে নেওয়ার দাবি জানালেও কমিশন তাদের দাবি আমলে নেয়নি।

দেশের মানুষ চায় সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান হোক। যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। অতীতের কোনো নির্বাচনের মতো যাতে প্রশ্নবিদ্ধ বা একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অগ্রগতির বাংলাদেশে এবারের নির্বাচন যেন অন্যান্য বারের তুলনায় আরো বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।

ঘোষিত তফসিলে জানা গেছে, এবারই প্রথমবারের মতো কিছু কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে (ইলেকট্রনিক্স ভোটিং মেশিন) পরীক্ষামূলক ভোটগ্রহণ করা হবে। এই নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আমরা আশা করব এই পদ্ধতির ভোটগ্রহণ যেন ত্রুটিমুক্ত ও অভিযোগমুক্ত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সংসদীয় রীতিতে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়। রাষ্ট্রের ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে ভোটাররা তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে যাদের নির্বাচিত করেন, তারাই সরকার গঠন করে রাষ্ট্র পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দেশবাসী চায় পবিত্র এই কর্মযজ্ঞটি যেন শতভাগ পরিচ্ছন্ন ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পন্ন করেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পোলিং এজেন্ট, পোলিং অফিসার ও প্রিজাইডিং অফিসাররা যাতে রাষ্ট্রের প্রতি শতভাগ আনুকূল্য প্রকাশ করে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তাহলেই সংবিধান ও গণতন্ত্রের পবিত্রতা রক্ষা হবে। দেশি বা বিদেশি কোনো ষড়যন্ত্র যেন সংবিধানের এই পবিত্রতা কলুষিত করতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আমরা আশা করি, জনগণের আমানত— সংবিধান ও গণতন্ত্র সর্বাগ্রে অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত থাকবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads