• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

আয়কর মেলা

কর পরিশোধের একটি উদ্যোগ

  • প্রকাশিত ১৪ নভেম্বর ২০১৮

‘উন্নয়ন ও উত্তরণ : আয়করের অর্জন’ স্লোগান নিয়ে গতকাল দেশে নবমবারের মতো শুরু হলো আয়কর মেলা। সপ্তাহব্যাপী এ আয়কর মেলার উদ্দেশ্য হচ্ছে করের আওতা বাড়ানোসহ কর প্রদানে দেশের জনগণকে সচেতন করা। ২০১০ সালে প্রথম আয়কর মেলায় ৬০ হাজার ৫১২ জন সেবা নিয়েছিলেন। এই সেবার পরিমাণ ২০১৭ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৫৬৯ জনে। এ থেকেই বোঝা যায় রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর তার উদ্দেশ্যে সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

এই মেলা সব জেলা ও ১০৩টি উপজেলায় একযোগে চলবে। যেখান থেকে করদাতা, সম্ভাব্য করদাতা ও ভবিষ্যতের করদাতাদের জন্য ই-টিআইএন নিবন্ধন, আয়কর রিটার্ন ফরম পূরণে সহায়তা, রিটার্ন গ্রহণ, কর পরিশোধ এবং কর বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গত আটটি মেলার মাধ্যমে প্রদত্ত এ ধরনের সেবার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়কর সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা এবং সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে তা বলা আবশ্যক। কিন্তু এনবিআরের এ কথাও মনে রাখতে হবে, সারা বছর ধরে যে ঋণখেলাপিদের নিয়ে সোচ্চার থাকে বণিজ্যিক ব্যাংকগুলো, আয়কর মেলায় তাদের অংশগ্রহণের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করা জরুরি। এর মাধ্যমে অনেকেই ঋণ নবায়ন করবেন, আবার কেউ কেউ খেলাপিমুক্ত হতে ঋণ শোধে উদ্যোগী হবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।

তবে মনে রাখতে হবে, এই আয়কর মেলায় সমাজের উঁচুতলার মানুষের পাশাপাশি ন্যূনতম আয়করের আওতায় পড়া সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ উল্লেখের দাবি রাখে। সাধারণ জনগণ জানে, এনবিআর সারা বছর ধরে সাধারণ মানুষের কর পরিশোধে তাদের যতরকম উষ্মা প্রকাশ করে থাকে। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, যে লোকটি ন্যূনতম করের আওতায় আসে না, সেই ব্যক্তিটি যথাসময়ে কর পরিশোধ করে চলেছে বছরের পর বছর। আর সমাজের যশস্বী বিত্তশালী ব্যক্তিটি বছর বছর কর ফাঁকি দিয়ে সমাজ উন্নয়নের সারথি হয়ে রয়েছেন। আয়কর রিটার্নের সময় দেখা যায়, সঙ্গীতশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সংসদ সদস্য প্রমুখ ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে ‘শ্রেষ্ঠ করদাতা’র পুরস্কারটি। অথচ ওই শ্রেষ্ঠ করদাতার কাছেই রয়েছে রাষ্ট্রের বড় অঙ্কের ঋণ।

তদুপরি বলব, রাষ্ট্রের বকেয়া কর আদায়ে এনবিআরের এই আয়কর মেলা কর আদায়ের সংস্কৃতিতে বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। এর ফলে কর কর্মকর্তা ও করদাতাদের মধ্যকার দূরত্ব ঘুচে যাবে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কর প্রদানে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি যে ব্যক্তিটি তার ন্যূনতম করটি প্রতিবছর পরিশোধ করে চলেছে, তার ক্ষেত্রেও প্রণোদনার ব্যবস্থা করবে এনবিআর। বকেয়া কর আদায়ে সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এর মাধ্যমে আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হোক। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads