• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
নিরাপদ অভয়াশ্রম জরুরি

সংগৃহীত ছবি

সম্পাদকীয়

শীতের অতিথি পাখি

নিরাপদ অভয়াশ্রম জরুরি

  • প্রকাশিত ২০ নভেম্বর ২০১৮

শীত এলেই বাংলাদেশে অতিথি পাখির সমাগম ঘটে। সাভারে মুক্ত জলাশয় আর গাছ-গাছালিঘেরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিলেটের হাওর-বাঁওড়ে অতিথি পাখির আনাগোনা বেশি হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে দেশের বৃহত্তম হাওর সিলেটের হাকালুকিতে শীতের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। এসব অতিথি পাখি মূলত শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া ও হিমালয়ের পাদদেশ লাদাখ থেকে এসে থাকে। আবার শীত শেষে পরিযায়ী এ পাখিরা ফিরে যায় আপন নীড়ে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এসব অতিথি পাখি শিকারে প্রতিবারের মতো এবারো তৎপর রয়েছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ বিষয়টিতে আমাদের উদ্বেগের কারণ হচ্ছে, সম্প্রতি র্যাব-১১-এর হাতে ৩১ লাখ টাকার পাখিসহ আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্যের আটকের সংবাদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও সাধারণ মানুষের উচিত এদের প্রতিহত করা।

কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে থাকে এই পাখিরাও। পাখি শিকারিদের কারণে আজ এই বাংলা থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে শকুন, চিল, পেঁচা, বাদুর, সারসের মতো প্রাণী। একদিকে পাখি শিকার, অন্যদিকে বনাঞ্চল ধ্বংস আমাদের প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ভয়াবহ করে তুলেছে। অথচ শীত মৌসুমেই এমন অসংখ্য প্রজাতির পাখির দেখা মেলে, যার মধ্যে অনেক বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পাখিও রয়েছে। একসময় এই হাওর অভয়াশ্রম ছিল অতিথি পাখির জন্য। পরিবেশ অধিদফতরের সিডব্লিউবিএম প্রকল্প চলাকালে হাকালুকি হাওরটি অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত বছর থেকে অতিথি পাখির জন্য অরক্ষিত হয়ে পড়েছে হাকালুকি হাওর। তা ছাড়া খবরে প্রকাশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত জলাশয়ে আসা শীতের অতিথি পাখি সেখানকার স্থানীয় হোটেলগুলোর পাতা জালে ধরা পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পরিচালিত হোটেলগুলোতে এর স্বাদ গ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ অবস্থায় আমরা মনে করি, সরকারের অতিথি পাখিসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রক্ষায় বিশেষ বিশেষ এলাকা নির্ধারণ করে তা পাখিদের জন্য অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা জরুরি। উপরন্তু পরিবেশ রক্ষায় পাখিদের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনমানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাখি শিকারি চক্রকেও আইনের আওতায় আনা বাঞ্ছনীয়। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনকে যুগোপযোগী করারও আহ্বান জানাচ্ছি। এ আইনের কঠোর ও যথাযথ প্রয়োগই পারে বন্যপ্রাণীসহ সব প্রজাতির পশুপাখির অবাধ চলাচলকে নিরাপদ রাখতে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকার এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবে এবং পাখির অভয়াশ্রম সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখবে। 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads