• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)

অনন্তকাল অনুসরণীয় নবীজীর আদর্শ

  • প্রকাশিত ২১ নভেম্বর ২০১৮

আজ পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। মানবজাতির মহোত্তম পথপ্রদর্শক, নবীকুল শ্রেষ্ঠ হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। আজ থেকে প্রায় ১৫শ বছর আগে বিশ্বের কেন্দ্রভূমি পবিত্র মক্কা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কেবল তাঁর অনুসারীদেরই নন, জাতি-ধর্ম বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সব মানুষের আদর্শ ও পথপ্রদর্শক। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন : আপনাকে আমি জগৎসমূহের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি। মহানবী (সা.) বিশ্বমানবের জন্য আল্লাহ নির্ধারিত শ্রেষ্ঠ পথপ্রদর্শক, মহান শিক্ষক ও অনুপম আদর্শ। মানব ইতিহাসের এক যুগসন্ধিকালে, অন্ধকারতম সময়ে তিনি মহান আল্লাহর বাণী নিয়ে অবতীর্ণ হন। বিশ্বাস, প্রজ্ঞা ও মানবিক গুণাবলি সমৃদ্ধ নতুন সভ্যতার স্থপতি হিসেবে তিনি কেবল আরব জনমণ্ডলী নয়, গোটা বিশ্বের জন্য মুক্তির দিশা দান করেন। তিনি একাধারে একটি ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা, একটি জাতির নির্মাতা এবং একটি অতুল্য সভ্যতার স্রষ্টা। তাই তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, রাহবারও তাকে বলা হয় সাইয়েদুল মুরসালিন ও খাতামুন্নাবিয়ীন।

তাঁর যখন আবির্ভাব হয়, তখন পবিত্র মক্কা নগরীসহ সমগ্র আরব জাহেলিয়াতের মধ্যে নিমজ্জিত ছিল। যুদ্ধ, বিরোধ-বিসম্বাদ, হানাহানি, অবিশ্বাস, পৌত্তলিকতা, সামাজিক অনাচার, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানবিক অধঃপতন মারাত্মক পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। তিনি অবনত অধঃপতিত মানবগোষ্ঠীকে অল্পদিনের ব্যবধানে সৎ, সত্যনিষ্ঠ, দায়িত্বশীল, মানবিক ও তৌহিদ বিশ্বাসী জাতিতে রূপান্তর করেন। তিনি কেবল মহান আল্লাহপাকের সর্বশেষ কিতাব আল-কোরআনের বাস্তবায়নকারীই নন, আসলে তাঁর জীবনই ছিল পবিত্র কোরআনের প্রতিরূপ। বিশ্বমানবের মুক্তি, শান্তি, ইহ ও পরকালীন মঙ্গল, বিকাশ, নিরাপত্তা— সবকিছুই আসতে পারে পবিত্র কোরআন ও তাঁর জীবনকর্ম অনুসরণ করার মাধ্যমে। তিনি বলেছেন : আমি দুটি বিষয় রেখে গেলাম। যতদিন এ দুটি আঁকড়ে ধরে থাকবে, ততদিন তোমরা পথচ্যুৎ হবে না। এ দুটি হলো— আল্লাহর কিতাব এবং আমার সুন্নাহ। মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা, আদর্শ, পদাঙ্ক ও পথনির্দেশনা অনুসরণ করে গত প্রায় দেড় হাজার বছর মুসলিম উম্মাহর অন্তর্গত মানুষ তাদের জীবন সাধনা চালিয়ে আসছে। এ সময়ে মুসলমানরা বহু দেশ জয় করেছে, বহু সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছে, শাসনকার্য পরিচালনা করেছে। অতীতে দীর্ঘ সময় জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, দর্শন-শিক্ষা-সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছে এই মুসলমানরা। যা কিছু মঙ্গলজনক, তার পেছনে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর আদর্শ, শিক্ষা, নির্দেশনার অনিবার্য ভূমিকা। শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও মানবিক বিকাশের সব ক্ষেত্রে ইসলামের অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমান বিশ্বে মানুষ যখন ধর্মবিমুখ বস্তুবাদী দর্শনের কবলে পড়ে যুদ্ধ-সংঘাত-সন্ত্রাস ও অশান্তির অনলে পুড়ছে, যখন ক্ষমতা, সম্পদ ও ভোগবিলাসে মত্ত হয়ে নিজের সর্বনাশকে ত্বরান্বিত করছে, তখন একমাত্র ইসলাম ও বিশ্বনবী (সা.)-এর শিক্ষাই তাকে সর্বোত্তম সুরক্ষা দিতে পারে। আমরা আশা করছি, বাংলাদেশ ও বিশ্বের সব মুসলমান মহানবী (সা.)-এর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অবনতচিত্তে পরিবার, সমাজ, দেশ ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় নিজেদের যুক্ত করবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads