• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রামে

‘আপনার এইডস সম্পর্কে জানুন’

  • প্রকাশিত ০২ ডিসেম্বর ২০১৮

এইডস একটিমাত্র রোগ নয়, এর পূর্ণ নাম হলো অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েনসি সিন্ড্রোম, যার অর্থ ‘অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতির লক্ষণসমূহ’। এইচআইভি এমন এক ভাইরাস, যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়। ফলে যে কোনো সামান্য রোগও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হয়। গতকাল শনিবার ১ ডিসেম্বর ‘আপনার এইডস সম্পর্কে জানুন’ এই প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আমাদের দেশে এইডস দিবস পালিত হয়েছে। দেশের গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য বিভাগ, সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো এই মরণ ব্যাধি নিয়ে বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ, প্রতিবেদন প্রকাশ ও কর্মসূচি পালন করেছে।

দৈনিক বাংলাদেশের খবরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সরকারি হিসাবে দেশে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫৮৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯২৪ জনের। তবে আক্রান্ত রোগীর অনুমিত সংখ্যা ১৩ হাজার। ২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল নাগাদ অন্তত ৩০ জন এইডস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ শিশু-কিশোর ও ২৫ শতাংশই নারী। ইউনিসেফের ওই প্রতিবেদনে দেশের ২৩ জেলায় আক্রান্তের প্রাদুর্ভাব ও ঝুঁকি বেশি বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রামে, সবচেয়ে কম রংপুরে। এ ছাড়া শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের এইচআইভি সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি ঢাকায়। এদের ২২ শতাংশের শরীরে এইচআইভির সংক্রমণ পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরী মারা যেতে পারে। ভয়ংকর এই মরণব্যাধিতে সংক্রমণের খবর নিশ্চয়ই সুখকর নয়।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এই রোগে সংক্রমণের হার বর্তমানে নগণ্য হলেও ভবিষ্যতের জন্য এটি উদ্বেগের সংবাদ। ইতোমধ্যে বিশ্বে এই ব্যাধিতে মারা গেছে ৩ কোটি ৫০ লাখ। একসময় বাংলাদেশে এ রোগের অস্তিত্ব না থাকলেও গত এক বছরে ৩০ জন রোগী শনাক্ত হওয়া উদ্বেগেরই বিষয়। এখন থেকে এই রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে যথাযথভাবে সচেতন না হলে আগামী দিনের পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। তাই এইডস প্রতিরোধে সবার আগে প্রয়োজন আমি বা আপনি এই মরণব্যাধিতে সংক্রমিত হয়েছি কি-না তা আগে শনাক্ত করা এবং প্রতিরোধে সচেতন হওয়া।

পৃথিবীতে প্রায় ৪ কোটি মানুষ শরীরে এইডসের জীবাণু বহন করে চলেছে এবং একে নিয়েই বেঁচে আছে; কিন্তু তার মধ্যে প্রায় ১ কোটি লোকের কোনো ধারণাই নেই যে, তাদের শরীরে এই ঘাতক ভাইরাসটি রয়েছে। তাই ২০১৮ সালের প্রতিপাদ্য ‘আপনার এইডস সম্পর্কে জানুন’। এইচআইভি ও এইডস কী? এইচআইভি মানে হচ্ছে হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েনসি ভাইরাস। এই রোগটি থেকে মুক্ত থাকতে প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনন্দিন জীবনাচরণে পবিত্রতা রক্ষা আর অন্যের ব্যবহূত জিনিস থেকে সংক্রমিত হওয়ার উপাদান বর্জন করে চলা। এই ঘাতক ব্যাধি থেকে আমরা ও আমাদের প্রজন্ম যাতে রক্ষা পাই, সেজন্য প্রয়োজন যথাযথ সচেতনতা সৃষ্টি করা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads