• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ আজ

ছবি: বাংলাদেশের খবর

সম্পাদকীয়

মহান বিজয় দিবস

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার শপথ আজ

  • প্রকাশিত ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮

সাড়ে সাত কোটি মানুষের অসীম ত্যাগ আর সাহসিকতার ফসল মুক্তিযুদ্ধের বিজয়। আজ সেই মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির আত্মত্যাগে শ্রেষ্ঠতম অর্জন এই স্বাধীনতা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেদিন মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার আবালবৃদ্ধবনিতা। রাজনৈতিক নেতাদের অকুতোভয় সংগ্রাম, সর্বসাধারণ, বুুদ্ধিজীবী-লেখক-শিল্পীদের আত্মত্যাগ ছাড়া এই বিজয় সম্ভব হতো না। এসবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের কূটনৈতিক ও মানবিক সহযোগিতা এবং বিশ্বের বিভিন্² দেশের অনেক রাজনীতিক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, শিল্পী, কবি ও সাহিত্যিকের নৈতিক সমর্থন। আমরা তাদের অবদানও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি।

১৯৭১ সালের এই দিনে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে ঢাকার বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকহানাদার বাহিনী। ’৪৭-এ স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও ২৪ বছরের নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়েছিল তদানীন্তন পূর্ব বাংলার মানুষ একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে। বাঙালি জাতি হিসেবে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে এ দিন। পাকিস্তানিরা ২৫ মার্চ থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে গণহত্যা চালিয়েছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা বীর বাঙালির কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। গত ৪৬ বছরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সঙ্গী করে দেশ গড়ার ক্ষেত্রে আমাদের সংগ্রাম ছিল দারিদ্র্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। একই সঙ্গে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাকেও প্রতিহত করতে হচ্ছে আমাদের। মোকাবেলা করতে হচ্ছে বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগও। তবু শত বাধা-প্রতিবন্ধকতায়ও হতোদ্যম হয়নি এ দেশের মানুষ। হারায়নি সাহস। লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে অব্যাহত আছে বাঙালির অগ্রযাত্রা।

ওই অগ্রযাত্রারই ধারাবাহিকতায় এই বিজয়ের মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই গণতন্ত্র, সুশাসন আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের হেরে গেলে চলবে না। একাত্তরের মতো বীর বাঙালি আবারো জেগে উঠবে। পরাজিত শক্তির কাছে মাথা নোয়াবার নয়— এই মন্ত্রে নতুন প্রজন্মকে দিতে হবে দীক্ষা। কেননা তারাই তো আগামীর বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক। আগামীর প্রজন্মকে জানাতে হবে তার ইতিহাস, ঐতিহ্য। এই বিজয়ের মাসে তাই জাতীয় নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে তরুণ সমাজের অগ্রাধিকার থাকতে হবে। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নতুবা তিরিশ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতার বিজয়গাথা ম্লান হয়ে যাবে।

আর এ জন্যই সব ভেদাভেদ ভুলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কোনো জাতির শক্তির প্রধান উৎস ঐক্য। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধভাবে সব সমস্যা মোকাবেলায় আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একাত্তরের মতো বাঙালির ঐক্যের ভেতরে গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় আলোকিত হোক বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads