• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

একাদশ সংসদ নির্বাচন

ইসির কাজে শৈথিল্য কাম্য নয়

  • প্রকাশিত ২০ ডিসেম্বর ২০১৮

আমরা মনে করি, যেসব এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে, সেসব ক্ষেত্রে ইসিরও শক্ত ভূমিকা থাকা উচিত। নির্বাচনে সহিংসতার ব্যাপারেও কঠোর হতে হবে ইসিকে। এবারের নির্বাচনের মনোনয়ন সংগ্রহ এবং প্রচার-প্রচারণার শুরুতে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী মারা গেছেন। এটা দুঃখজনক। এখনই যদি সহিংসতা বন্ধ না হয় তাহলে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে সহিংসতা ততই বাড়বে, প্রাণহানির আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে প্রচার-প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ দায়েরের ধুম লেগেছে। প্রতিদিনই ইসিতে লিখিত অভিযোগ করছেন বিভিন্ন দল ও প্রার্থীরা। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে প্রায় শতাধিক হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইসি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তদন্তের নির্দেশ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দেশের সাধারণ ভোটারদের মাঝে ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

নির্বাচনের আগে সহিংসতা হতে পারে, এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই আশঙ্কাই সত্যে পরিণত হচ্ছে। আগাম সতর্কতা জানানোর পরও সহিংসতা রোধে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অর্থাৎ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল না। এটা ঠিক, দেশজুড়ে নির্বাচনের যে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে, তার প্রতিটির শৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন কাজ। তারপরও আমরা বলব, নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যদি কর্মতৎপর থাকেন, প্রশাসন যদি নির্বাচন কমিশনকে পরিপূর্ণ সহায়তা প্রদান করে, তাহলে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা রোধ করা কঠিন কিছু হবে না।

আমরা অতীতে দেখেছি, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনকে বরাবরই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। এমনকি যখন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে, তখনো অভিযোগ উঠেছে। বিশ্বের অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কমিশনকে এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক জোট ও দলের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশনকে এমন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে যাতে কোনো দলই তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে না পারে। বলা বাহুল্য, এবারের নির্বাচন দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হয়, তবে দেশ রাজনৈতিক সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার মধ্যে পড়তে পারে। এতে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়ন ব্যাহত হবে।

দেশের এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে এবারের নির্বাচনটি অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমরা আশা করব, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাবেন। এ ক্ষেত্রে ইসিকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। যেসব অভিযোগ দায়ের হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নির্বাচন ঘিরে ইসির কার্যক্রম নিয়ে যাতে কোনো প্রকার পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের অভিযোগ না ওঠে, সে দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। দেশবাসী প্রত্যাশা করছে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads