• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

সম্পাদকীয়

তাপমাত্রার পারদ কমবে

শীতের চাদরে ঢাকা বাংলাদেশ

  • প্রকাশিত ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

গ্রিনহাউজের প্রভাব, বনভূমি হ্রাস, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, উষ্ণায়ন প্রভৃতি কারণে পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বঙ্গীয় ব-দ্বীপ খ্যাত ষড়ঋতুর বাংলাদেশের প্রকৃতিতেও ঘটেছে পালাবদল। আর তাই শীত মৌসুম শুরু হলেও এর প্রভাব জনজীবনে এসে লাগে ধীরে-সুস্থে। তবে এবার বাংলা কার্তিক মাসের শেষ দিকেই দেশের গ্রামাঞ্চলে শীতের আমেজ শুরু হয়। আর সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফেথাই’র কারণে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় এখন সারা দেশেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাতে শীতের তীব্রতা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আসছে শৈত্যপ্রবাহ।

এসবের দরুন এখন রাজধানী ঢাকায়ও শীত জেঁকে বসেছে। দেশের সবচেয়ে শীতকাতুরে অঞ্চল হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলে ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিগত ৫০ বছরের মধ্যে গত বছর দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিবছর দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে চলে শৈত্যপ্রবাহ। হিমালয় থেকে নেমে আসে এই হিমশীতল বায়ু। শীতের সঙ্গে ঘনকুয়াশায় হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গোটা জনজীবন। মূলত বাংলা পৌষ মাসেই দেখা দেয় ছোট-বড় কিংবা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ। পৌষের তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সারা দেশের জনজীবন। তাপমাত্রা কেবল নামতেই থাকে। এর ফলে জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। এ সময় শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে শিশু ও বয়স্করা। এমনকি শিশু ও বয়স্কদের মৃত্যুর খবরও শোনা যায়।

এই হাড় কাঁপানো শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ে শ্রমজীবী ও ছিন্নমূল মানুষ। তাদের নিত্যদিনের স্বাভাবিক কার্যক্রমের বিঘ্ন ঘটে। ছিন্নমূল মানুষেরা গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করে থাকে। এমতাবস্থায় সরকারিভাবে এসব নিম্নআয়ের ছিন্নমূল মানুষের জন্য শীতবস্ত্র বিতরণের কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। সম্প্রতি শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ আয়ের মানুষও গরম কাপড়ের সন্ধানে ছুটছেন ফুটপাত থেকে শপিং মলসহ বিভিন্ন মার্কেটে। শীতের তীব্রতাসহ বিভিন্ন রোগ থেকে নিজের সুরক্ষায় নিচ্ছেন নানান ধরনের ব্যবস্থা। এই সচেতনতা শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে হবে। তার জন্য কাজ করতে হবে সরকার এবং উন্নয়ন সংস্থাসহ সমাজকর্মী ও গণমাধ্যমকে।

এখন নির্বাচনী উত্তাপে সরগরম সারা দেশ। তথাপি প্রকৃতির বিরূপ আচরণ থেকে জনজীবন বাঁচাতে সবার আগে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের দায়িত্বরত সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে। শুধু রাষ্ট্রীয়ভাবে নয়, সমাজের বিত্তশালীদেরও এক্ষেত্রে এগিয়ে আসা জরুরি। আমরা আশা করি, আরো কঠিন কোনো শীতের তীব্রতা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনই যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বিশেষ করে আমাদের নজর দিতে হবে ছিন্নমূল খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বয়স্কদের প্রতি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads