• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার

প্রয়োজন বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ

  • প্রকাশিত ০২ জানুয়ারি ২০১৯

নতুন বছর ২০১৯-এর শুরুতে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।  দেশের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়ে এ কথাই প্রমাণ করেছে যে, তারা দেশের উন্নয়নপ্রত্যাশী। মানুষ এখন উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে। কেননা চলতি সরকারের ধারাবাহিকতায় গত দশ বছরে দেশে প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আর এর পেছনে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১।

আমরা জানি, উন্নয়নের নেপথ্যে দেশের ব্যবসায়ী সমাজের ভূমিকা অনন্য। কেননা সরকারের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিবাচক ফল বয়ে আনে। আর ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বিকাশে সরকারের সহযোগী পরিবেশ সহায়ক ভূমিকা রাখে। মোটকথা উন্নয়ন, সরকারের নীতি এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ— সবমিলিয়ে একটি দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে। সুতরাং দেশে উচ্চহারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে অবশ্যই বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কেননা প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ ও সরকারের শিল্পবান্ধব ভূমিকার মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। আমাদের দেশের বাস্তবতায় যে পরিমাণ বিনিয়োগ হওয়া উচিত, সে তুলনায় দেশে বিনিয়োগ অনেক কমই হয়। তার কারণ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি। বিনিয়োগে সরকারের উদার দৃষ্টিভঙ্গি না থাকলে বিনিয়োগ বিকশিত হওয়ার সুযোগ আর তেমন থাকে না। বাস্তবিক পক্ষে দেশের অর্থনীতিতে যে পরিমাণ অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় হয়, বিনিয়োগের পরিমাণ সে হারকে ছুঁতে পারে না। অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলো প্রধানত শিল্পকে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কৌশল হিসেবে বিবেচনা করে। এর ফলে দেখা গেছে পাশ্চাত্যের দেশগুলো নিজেদের উন্নয়নের স্বার্থে শিল্প বিপ্লব ঘটিয়েছে, যা উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশগুলোতে খুব একটা দেখা যায় না।

এক্ষেত্রে আশাবাদের খবর হলো— শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দেশের ব্যবসায়ী শ্রেণিকে নানাভাবে বিনিয়োগে উৎসাহ জোগাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার প্রতিফলনও সামগ্রিকভাবে দেশের উন্নয়নে দৃশ্যমান হচ্ছে। আমরা মনে করি, সর্বতোভাবে দেশীয় শিল্প বিকাশ নীতি বাস্তবায়ন হলে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আমাদের দেশের ব্যবসায়ী নেতারা একাদশ সংসদ নির্বাচনে উন্নয়নের অভিলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাতেই ভরসা রেখেছেন। কেননা তারা নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানিয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে আশা করা যায়, নতুন সরকার দেশের সব ব্যবসায়ীকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শিল্প-কলকারখানা স্থাপনের মাধ্যমে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নেবে। এর ফলে উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং রফতানি ত্রিমাত্রিক সফলতা পাবে। পাশাপাশি জেলা-উপজেলায় শিল্প বকশিত হলে বড় শহর ও নগরে মানুষের চাপ কমবে। তাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে বাংলাদেশে উন্নয়ন কার্যক্রম আরো ত্বরান্বিত হবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য শিল্প উদ্যোগ একটি সামাজিক, ব্যক্তিক, রাষ্ট্রীয় ও মনস্তাত্ত্বিক বোধ পরিবর্তনের আন্দোলন। কাজেই অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শিল্প বিকাশ নীতিকে অগ্রাধিকারের মানসিকতায় নিয়ে আসার বিকল্প নেই। কেননা শিল্পকে বিকশিত হতে না দিলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বন্ধ হবে। ফলে সরকারের ওপর কর্মসংস্থান সৃষ্টির চাপ বাড়বে। আমরা আশাবাদী, নতুন সরকার দেশের ব্যবসায়ী সমাজকে নিয়ে আগামীর উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পথ-নকশা অঙ্কন করবে। দেশের মানুষও সে প্রত্যাশায় বিপুল সমর্থনে পুনরায় ক্ষমতাসীন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোটকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads