• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃপ্ত জাতি

বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

সংরক্ষিত ছবি

সম্পাদকীয়

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

দেশ গড়ার প্রত্যয়ে দৃপ্ত জাতি

  • প্রকাশিত ১০ জানুয়ারি ২০১৯

‘মৃত্যুর দুয়ার ভেঙ্গে অমরত্ব লভিয়াছ/তুমি জ্যোতির্ময়/পূর্ণ কর স্বাধীনতা মুক্ত কর ভয়/তোমারই হোক জয়।’ আজ স্বাধীন রাষ্ট্রের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। আজকের এই দিনে তথা ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ তিনি বীরদর্পে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন স্বাধীন বাংলাদেশে। স্বয়ং জাতির পিতা তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন- ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা।’

১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণার পর ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। রক্তগঙ্গায় ভিজে ওঠে বাংলার মাটি। বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায় বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু জাতির পিতার স্বাধীনতা ঘোষণার মাধ্যমে সর্বস্তরের জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনে বাংলার স্বাধীনতা। পৃথিবীর মানচিত্রে উদিত হয় নতুন দেশ— বাংলাদেশ।

বঙ্গবন্ধু তার মুক্ত মাতৃভূমি, স্বাধীন বাংলাদেশে যখন এলেন, সেদিন ছিল এক মহা উৎসবের আমেজ। বিমানবন্দর থেকে বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত রাস্তা ছিল লোকে লোকারণ্য। অবশেষে বন্দির নাগপাশ ছিন্ন করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বিজয়ের বেশে নামলেন বিমান থেকে। গোটা জাতি তেজোদীপ্ত ‘জয় বাংলা’ হর্ষধ্বনির মাধ্যমে তাদের অবিসংবাদিত প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানায়। সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লাখো জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষণা দেন, ‘রক্ত দিয়ে হলেও আমি বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাব।’ কথা রেখেছেন জাতির পিতা। কিছু বিপথগামী বিশ্বাসঘাতক সেনাসদস্যের হাতে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিজের কর্মসাধনার মধ্যেই বেঁচে আছেন। তিনি চিরঞ্জীব। এই ‘মৃত্যুহীন প্রাণের’ মৃত্যু নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে শোষণমুক্ত একটি সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করে চলেছে বর্তমান সরকার।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় এখন জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সামনে থেকে জাতিকে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি ইতোমধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রভূত সাফল্য দেখিয়ে বিশ্বে নন্দিত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের জনগণের মননে যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যমী, সৎ, নিষ্ঠাবান এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় রাখবেন- এমনটাই আশা করে দেশের মানুষ। রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে একটি গতিময়, স্বচ্ছ, দায়িত্বশীল এবং প্রত্যয়ী চিন্তা ও কার্যক্রমের কোনো বিকল্প নেই।

জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী আমরাও মনে করি, জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশীল রাষ্ট্র হিসেবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কোনো দ্বিতীয় নেই। এক্ষেত্রে বিশেষত তরুণ  ও আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিকশিত করতে হবে। তাদের মেধা, আধুনিকতা এবং মননশীলতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। জাতি আশা করে, বিশ্বনন্দিত নেত্রী শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সেই স্বপ্ন আগামী প্রজন্ম এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এ কাজে বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করা। আজকের দিনে এই হোক আমাদের দৃপ্ত অঙ্গীকার।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads