আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা গ্রন্থ ‘কারাগারের রোজনামচা’ সম্পর্কে নিশ্চয়ই বিস্তারিত জানানোর প্রয়োজন পড়ে না। গণতন্ত্র এবং পাকিস্তানের অবহেলিত ও শোষিত প্রদেশ পূর্ব বাংলার— বর্তমান বাংলাদেশের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথমে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে সভাপতি করে গঠিত দল আওয়ামী (মুসলিম) লীগের যুগ্ম সম্পাদক এবং ১৯৫৩ সাল থেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শেখ মুজিবকে বহুবার গ্রেফতার হতে এবং কারাগারে বন্দি জীবন কাটাতে হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পরও তাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবার গ্রেফতার হয়েছিলেন ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ। পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে পর্যায়ক্রমিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ‘পশ্চিম পাকিস্তানের’ রাজধানী লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে ঐতিহাসিক ৬ দফা উপস্থাপন করার পর শুরু হয়েছিল তাকে গ্রেফতারের অঘোষিত অভিযান। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলাও দায়ের করেছিল সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের সরকার। ৬ দফার পক্ষে জনমত গঠনের জন্য প্রদেশের— বর্তমান বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে জনসভায় বক্তৃতা করে বেড়িয়েছেন শেখ মুজিব। প্রতিটি উপলক্ষেই মামলা যেমন দায়ের করা হয়েছে তেমনি কারাগারেও ঢোকানো হয়েছে তাকে। তিনিও আদালতের মাধ্যমে জামিন নিয়ে বেরিয়ে এসেছেন। মামলা-গ্রেফতার-জামিন এবং আবারো মামলা— এভাবেই চলেছে ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ থেকে ৯ মে পর্যন্ত— যেদিন তাকে শেষবারের মতো গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর আর জামিন পাননি তিনি। তাকে বরং নতুন ধরনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তিনি এমনকি দণ্ডিতও হয়েছেন। ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থের শুরুটাও এ সময় থেকেই করেছেন শেখ মুজিব।
গত ৩০ জানুয়ারি একই শিরোনামে প্রকাশিত নিবন্ধে এ বিষয়ে অল্পকথায় লিখেছিলাম। তখনো ‘বঙ্গবন্ধু’ হননি শেখ মুজিব। তিনি পরিচিত ছিলেন ‘৬ দফাপন্থি’ নামে পরিচিত আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে। অন্য একটি আওয়ামী লীগকে বলা হতো ‘পিডিএমপন্থি’ আওয়ামী লীগ— যার সভাপতি ছিলেন ‘পশ্চিম পাকিস্তানের’ ধুরন্ধর রাজনীতিক নওয়াবজাদা নসরুল্লাহ খান। এর ‘পূর্ব পাকিস্তান’ শাখার সভাপতি ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম খান। সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও এই সালাম খানই আগরতলা (ষড়যন্ত্র) মামলায় শেখ মুজিবের পক্ষে প্রধান আইনজীবী হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সেটা এমন এক সময় ছিল, যখন কোনো আইনজীবীই শেখ মুজিবের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস পাননি।
১৯৬৯ সালে ‘বঙ্গবন্ধু’ হওয়ার এবং তার মুক্তির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পেছনে বিশেষ ভূমিকা ছিল আগরতলা (ষড়যন্ত্র) মামলার। আইয়ুব সরকার অভিযোগ করেছিল, ভারতের বাংলাদেশ সংলগ্ন রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় নাকি ভারতের সাহায্য নিয়ে ‘পূর্ব পাকিস্তান’কে বিচ্ছিন্ন ও স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল এবং শেখ মুজিব নাকি প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন! এই মামলায় শেখ মুজিবকে প্রধান তথা এক নম্বর অভিযুক্ত বা আসামি করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনী ও প্রশাসনে কর্মরত অনেক বাঙালিকে ১৯৬৭ সাল থেকেই মামলার আসামি করে গ্রেফতার করা হচ্ছিল। ১৯৬৬ সালের ৯ মে থেকে বন্দি শেখ মুজিবকে এক নম্বর আসামি করে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৯৬৮ সালের ১৭ জানুয়ারি গভীর রাতে। এই প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানে তখন পর্যন্ত প্রচলিত বিধি ও নিয়মের চরম লঙ্ঘন করেছিল সরকার। কারণ এসব বিধি ও নিয়মের মধ্যে একটি ছিল রাতে মুক্তি না দেওয়া। আদালত থেকে আদেশ এলেও বিকেল পাঁচটা বেজে গেলে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হতো পরদিন সকাল দশটার পর। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটেছিল শেখ মুজিবের ক্ষেত্রে। তিনি আপত্তি জানালেও জেল কর্তৃপক্ষ মুক্তি দেওয়ার নাম করে তাকে রাত ১২টার পর ডেপুটি জেলরের অফিস কক্ষে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে আগে থেকে অপেক্ষা করছিল সেনাবাহিনীর অফিসার ও জওয়ানরা। তারা গিয়েছিল শেখ মুজিবকে নতুন এক মামলায় তথা আগরতলা মামলায় গ্রেফতার করার জন্য।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ মুজিব লিখেছেন, “আমি ডেপুটি জেলর সাহেবের রুমে এসে বসতেই একজন সামরিক বাহিনীর বড় কর্মকর্তা আমার কাছে এসে বললেন, ‘শেখ সাহেব, আপনাকে গ্রেপ্তার করা হলো।’ আমি তাকে বললাম, নিশ্চয় আপনার কাছে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা আছে। আমাকে দেখালে বাধিত হব। তিনি একজন সাদা পোশাক পরিহিত কর্মচারীকে বললেন পড়ে শোনাতে। তিনি পড়লেন, ‘আর্মি, নেভি ও এয়ারফোর্স আইন অনুযায়ী গ্রেপ্তার করা হলো।’ আমি বললাম, ঠিক আছে, চলুন কোথায় যেতে হবে।” (পৃষ্ঠা ২৫৪-৫৫)
সামরিক বাহিনীর ওই কর্মকর্তার সঙ্গে জেলের বাইরে এসে শেখ মুজিব দেখেছিলেন একটি গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে এবং চারদিকে সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা পাহারায় রয়েছে। একজন মেজর তাকে গাড়িতে উঠতে বললেন। তিনি উঠলেন। তার দুই পাশে বসলো দুজন সশস্ত্র সৈনিক। এরপর শেখ মুজিব লিখেছেন, “গাড়ি নাজিমুদ্দীন রোড হয়ে রমনার দিকে চলল।... ভাবলাম, কোথায় আমার নূতন আস্তানা হবে। কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিছুই তো জানি না। গাড়ি চলল কুর্মিটোলার দিকে।...”
শেখ মুজিব আরো লিখেছেন, “বহুকাল পর ঢাকা শহর দেখছি, ভালই লাগছে। মনে মনে শেরে বাংলা ফজলুল হক, জননেতা সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দীনের কবরকে সালাম করলাম।... (গাড়ি) শাহবাগ হোটেল পার হয়ে, এয়ারপোর্টের দিকে চলেছে। এয়ারপোর্ট ত্যাগ করে যখন ক্যান্টনমেন্ট ঢুকলাম তখন আর বুঝতে বাকি রইল না। মনে মনে বাংলার মাটিকে সালাম দিয়ে বললাম, ‘তোমাকে আমি ভালবাসি। মৃত্যুর পর তোমার মাটিতে যেন আমার একটু স্থান হয়, মা’।’’ (পৃষ্ঠা ২৫৬-৫৭)
এভাবে আবেগের প্রকাশ ঘটালেও শেখ মুজিব কিন্তু তার এ গ্রন্থে আগরতলা মামলার আসামি হিসেবে বেশি কিছু লিখতে পারেননি। এর কারণ, প্রধানমন্ত্রী এবং লেখকের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা গ্রন্থে তার লেখা ভূমিকায় জানিয়েছেন, পিতা মুজিব যখনই এবং যতবারই জেলে গেছেন ততবারই মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব তাকে লেখার জন্য খাতা তো পৌঁছে দিয়েছেনই, তাগিদও দিয়েছেন লেখার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভূমিকায় আরো জানিয়েছেন, ‘আমার মায়ের প্রেরণা ও অনুরোধে আব্বা লিখতে শুরু করেন। যতবার জেলে গেছেন আমার মা খাতা কিনে জেলে পৌঁছে দিতেন। আবার যখন মুক্তি পেতেন তখন খাতাগুলি সংগ্রহ করে নিজে সযত্নে রেখে দিতেন।’ (পৃষ্ঠা ১৬)
কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটেছিল আগরতলা (ষড়যন্ত্র) মামলায় নেতা শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করার পর। ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থে আগরতলা মামলা প্রসঙ্গে শেখ মুজিব খুব সামান্যই লিখতে পেরেছিলেন। আর এর প্রধান কারণ ছিল, লেখার জন্য তাকে কাগজ-কলম দেওয়া হয়নি। শেখ মুজিব লিখেছেন, ‘পাঁচ মাস পর খাতা পেয়েছি। তাই দিন তারিখগুলি আমার মনে নাই, ঘটনাগুলি যতদূর মনে পড়ে তা-ই লিখে রাখছি।’ (পৃষ্ঠা ২৫৯)
হিসাব করলে দেখা যাবে, ‘পাঁচ মাস পর’ অর্থাৎ ১৯৬৮ সালের জুন মাসের কোনো এক সময় সরকার তাকে খাতা ও কলম দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। গ্রন্থের ২৫১ পৃষ্ঠায় জানানো হয়েছে, বেগম মুজিব ৩২০ পৃষ্ঠার একটি রুল টানা খাতা তার কাছে পাঠিয়েছিলেন। সে খাতারও মাত্র ৫২ পৃষ্ঠা তিনি লিখতে পেরেছিলেন। গ্রন্থে এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৬ পৃষ্ঠা। (২৫২ থেকে ২৬৭)
ওদিকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়ার পর প্রথম দু-তিন মাস পর্যন্ত নেতার পরিবারের সদস্যদের একথা পর্যন্ত জানতে দেওয়া হয়নি যে, তাকে কোথায় এবং কী অবস্থায় রাখা হয়েছে। শেখ মুজিব নিজে শুধু অনুমান করতে পেরেছিলেন, তাকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কোনো এক অফিসার্স মেসে রাখা হয়েছিল। বেশ কিছুদিন পর্যন্ত এর বেশি কিছু জানার সুযোগ পাননি তিনি। কারণ অফিসার্স মেসের যে কক্ষটিতে তাকে রাখা হয়েছিল, সে কক্ষের প্রতিটি জানালা লাল রং দিয়ে রঙিন তো করা হয়েছিলই, সেগুলো দিনের বেলায়ও খোলা হতো না। পরিবর্তে সবসময় বৈদ্যুতিক লাইট জ্বালিয়ে রাখা হতো। ফলে রাত ও দিন তার কাছে একই রকম মনে হতো।
কক্ষটিতে দুটি বিছানা ছিল। একটি শেখ মুজিবের জন্য, অন্যটিতে থাকত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কোনো সশস্ত্র অফিসার। তারা পালাক্রমে ডিউটি করত, শেখ মুজিবকে পাহারা দিত। শেখ মুজিব জানিয়েছেন, ওই অফিসারদের ওপর হুকুম থাকত, পারিবারিক, রাজনৈতিক, সামরিক কোনো বিষয় নিয়েই তারা আলাপ করতে পারবে না। শুধু আবহাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে হাঁ বা না সূচক উত্তর দেওয়ার ব্যাপারে কোনো আপত্তি বা নিষেধ ছিল না। এ প্রসঙ্গে শেখ মুজিব লিখেছেন, “কথাবার্তা না বলে দু’জন লোক একই কামরায় নীরবে বসে থাকতে হবে। আর অফিসার ভদ্রলোকের কাজ হলো, আমাকে চোখে চোখে রাখা যাতে আমি ভাগতে চেষ্টা না করি বা আত্মহত্যা করতে না পারি।” (পৃষ্ঠা ২৫৭)
এভাবেই কঠোর নজরদারির এবং প্রচণ্ড মানসিক নির্যাতনের মধ্যে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছিল আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবকে। এরই মধ্যে ব্রিগেডিয়ার আকবর এবং রিজভি নামের দুজন অফিসার শেখ মুজিবকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে আরো কিছু লেখার আগে জানানো দরকার, এই রিজভি সাহেবই একদিন শেখ মুজিবের ধানমন্ডির বাড়িতে গিয়ে বেগম মুজিবকে জানিয়ে এসেছিলেন, তার স্বামী ভালো আছেন। তিনি যে সত্যিই গিয়েছিলেন তার প্রমাণ হিসেবে মিস্টার রিজভি শেখ মুজিবের জন্য কিছু (‘এরিনমোর’) তামাকও নিয়ে এসেছিলেন, যা তিনি পাইপ দিয়ে খেতেন। মিস্টার রিজভি আরো জানিয়েছিলেন, বেগম মুজিবসহ তার পরিবার সদস্যরাও ভালো আছেন। (পৃষ্ঠা ২৬৩)
আনুষ্ঠানিকভাবে আগরতলা (ষড়যন্ত্র) মামলার শুনানিসহ কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত দিনের পর দিন ধরে শেখ মুজিবকে জিজ্ঞাসাবাদ তথা ইন্টারোগেশন করা হয়েছিল। জবাবে শেখ মুজিব বলেছিলেন, “আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কেন আমাকে ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত করা হয়েছে? আপনারা তো আমার সম্বন্ধে জানেন। আমি তো গোপন ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করি না।... স্বায়ত্তশাসনের দাবী তো ১৯৪৯ সাল থেকে আমি করতে শুরু করেছি। পার্লামেন্টে প্রাদেশিক আইনসভার বাইরে ও ভিতরে আমি প্রচার করেছি। তারপর ছয় দফা প্রোগ্রাম দিয়েছি ১৯৬৬ সালে। বই ছাপিয়েছি, বক্তৃতা করেছি।... আমি পাকিস্তানের অমঙ্গল কামনা করি নাই। দুই অঞ্চলকে আলাদা করতেও চাই নাই। কারণ সংখ্যাগুরু অঞ্চল (‘পূর্ব পাকিস্তান’) সংখ্যালঘুদের (‘পশ্চিম পাকিস্তান’) ভয়ে আলাদা হতে পারে না। আর এমন কোনো নজির ইতিহাসে নাই। আমি বুঝতে পেরেছি আমাকে আপনারা রাজনীতি করতে দিবেন না।...” (পৃষ্ঠা ২৬০)
ইন্টারোগেশনের জবাবে আরো অনেক কথাই শেখ মুজিব বলেছিলেন। সেসবের উল্লেখে যাওয়ার পরিবর্তে এখানে দু-একটি তথ্য জানিয়ে রাখা দরকার। এরকম একটি তথ্য হলো, আত্মপক্ষ সমর্থন করে রাখা বক্তব্যের একপর্যায়ে বন্দি নেতা শেখ মুজিব পাকিস্তানের সেনা অফিসারদের অনুরোধ করেছিলেন, তারা যাতে তার লেখা একটি চিঠি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। চিঠি লেখার কারণ জানাতে গিয়ে শেখ মুজিব জানিয়েছেন, তার তখন পর্যন্ত ধারণা ছিল, প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ‘অন্যায়ভাবে কাউকে কষ্ট দেওয়ার পক্ষপাতী নন’ এবং ‘তিনি ইচ্ছা করলে (ষড়যন্ত্র মামলার বিষয়টিতে) হস্তক্ষেপ করতে পারেন।’ (পৃষ্ঠা ২৬১) এই অনুরোধের জবাবে অফিসাররা বলেছিলেন, ‘চিঠি আমরা নিতে পারব না। তবে যদি টেপরেকর্ডে আপনি কিছু বলতে চান বলে দিবেন— আমরা তাকে (অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানকে) শুনাবো।’
আগরতলা (ষড়যন্ত্র) মামলাসহ বঙ্গবন্ধুর কারাগারের জীবন সম্পর্কে দু-একটি মাত্র নিবন্ধে লেখা সম্ভব নয়। আগামীতেও এ বিষয়ে লেখার ইচ্ছা রইল।
লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক