• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
পথ হারাবে না দেশ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

ছবি : সংগৃহীত

সম্পাদকীয়

বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন

পথ হারাবে না দেশ

  • প্রকাশিত ১৭ মার্চ ২০১৯

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে নেতার জন্ম না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হতো না। হাজার বছরের শাসন-শোষণে নিঃশেষিত বাঙালি জাতিকে তিনি শেষবারের মতো রুখে দাঁড়াতে বলেছিলেন। বিনিময়ে জীবন দিয়ে হলেও পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ফেলার অঙ্গীকার করেন। এই মহান নেতা আমাদের স্বাধীন দেশের নাগরিকের মর্যাদা উপহার দিয়েছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। আজ ১৭ মার্চ তার জন্মদিন। বাঙালির আনন্দের দিন, উৎসবের দিন।

বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেন এক মধ্যবিত্ত পরিবারে। যে পরিবারে কয়েক পুরুষ আগেই শিক্ষার আলো প্রবেশ করেছে। একসময় তারা উচ্চবিত্ত এবং প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এমন এক পরিবারে ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি দুর্বল ছিলেন। কী করে এ জাতির মুক্তি হবে, উন্নতি হবে— এটা ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। তাই কৈশোর থেকে তার আচরণ ছিল অন্যদের থেকে ভিন্ন, মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়া ছিল তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। অভাবী-অনাথ শিশু থেকে বয়স্ক-বৃদ্ধ, দুর্বল নির্যাতিত— সবাই কিশোর খোকার মমতামাখা হাতের ছোঁয়া পেয়েছিল। সাহায্য-সহযোগিতার মন ও মানসিকতা নিয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির বঙ্গবন্ধু। তাই এ দেশের মানুষের কাছে তিনি ছিলেন স্বপ্নপুরুষ। তিনি যেমন খেটে খাওয়া মানুষের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন, তেমনি তাকে এক নজর দেখার জন্য পথে-প্রান্তরে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতো।

আর তাই আবালবৃদ্ধবনিতার তথা আপামর বাঙালির এই নেতার জন্মদিনটিকে শিশু দিবস ঘোষণা করে সরকার দূরদর্শিতারই পরিচয় দিয়েছে। টুঙ্গিপাড়ার খোকা যে শিশু-কিশোরদের ভালবাসতেন, পরবর্তীকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবও সেই শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যৎ ভাবনায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন দেশমাতৃকার সেবায়। এখন, আজ আমাদের প্রচেষ্টা হওয়া উচিত বঙ্গবন্ধুর চিন্তাকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। তার স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করা। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর যে বার্তা বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন, যে স্বপ্ন তিনি আজীবন লালন করেছেন; আমাদের সে পথেই হাঁটা প্রয়োজন। তা না হলে কাঙ্ক্ষিত সোনার বাংলা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আবারো আমরা পিছিয়ে পড়ব।

বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়তেই আমাদের মানসচোখে ভেসে ওঠে সেই সুপুরুষ বাঙালি— ব্যাক ব্রাশ করা চুল, পরনে ধবধবে সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি ও কালো মুজিব কোট, কাঁধে জড়ানো কাঁঠালিচাঁপা রঙের শাল। আজো আমাদের চিত্তে ধমনিতে রক্তকণিকায় ঝড় ওঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করলে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বলেই মাত্র নয় মাসে আমরা পাকিস্তানি হানাদারদের পরাস্ত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পেরেছি। অথচ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট কেবল বঙ্গবন্ধু ছিলেন না বলেই আমরা বিনা যুদ্ধে পরাজয় বরণ করি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই আত্মসমর্পণ করি। প্রমাণিত হয়, একটি জাতির জন্য নেতৃত্বের কত প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে শুধু আজ বাঙালিদের নেতাই হতেন না, তিনি হতেন বিশ্বনেতা। বিশ্বনেতা হওয়ার এই সূর্য সম্ভাবনাকে যারা নস্যাৎ করেছে, বাংলার পবিত্র মাটিতে তাদের ঠাঁই হওয়া উচিত নয়। এই সত্যটি আমরা যদি মনে না রাখি, তবে আমাদের রাজনীতি নিয়ত চোরাবালিতে হোঁচট খেতে থাকবে। সেই অমানিশার কথা স্মরণ করে জাতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিনে পুনরায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। পথ হারাবে না দেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads