• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
সমৃদ্ধ অর্থনীতির সহায়ক

ই-কমার্স

প্রতীকী ছবি

সম্পাদকীয়

এগিয়ে চলেছে ই-কমার্স

সমৃদ্ধ অর্থনীতির সহায়ক

  • প্রকাশিত ২২ মার্চ ২০১৯

দেশে ই-কমার্সের আকার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে হিসাব এখন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা যায়, দেশে অনলাইন বাণিজ্যের বাজার বা ই-কমার্স মার্কেট বিগত বছরগুলোতে বড় হয়েছে চারগুণেরও বেশি। এক হিসাবমতে দেখা যায়, ২০১৪ সালে যার পরিমাণ ছিল ৪০০ কোটি টাকা, ২০১৭ সালে তা দাঁড়ায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকায়।

বাংলাদেশে সাত বছর ধরে শুরু হয়েছে ই-কমার্স বা অনলাইন কেনাকাটা। দেশে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখন শতাধিক। আর ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকনির্ভর ই-কমার্স উদ্যোক্তার সংখ্যা দশ হাজারের বেশি। বর্তমানে বাড়িতে বসে আনন্দের ছলে কেনাকাটা করার এই নতুন সংস্কৃতিতে তরুণরা অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এই কেনাবেচার পেমেন্ট হচ্ছে বিকাশ, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড এবং পণ্য হাতে পাওয়ার পর নগদ ক্যাশে। প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি পণ্য অনলাইনে লেনদেন হচ্ছে। আবার কোনো উৎসব বা দিবস ঘিরে অনলাইনে ৩০ হাজারের বেশি পণ্য লেনদেন হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে পোশাক, ইলেকট্রনিক পণ্য, পুরনো পণ্য, গৃহস্থালি ও শৌখিন পণ্য, গাড়ি, বাড়ি, প্লট, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং ভোগবিলাসের পণ্যের ক্রেতা বেশি।

বর্তমানে দেশে ই-কমার্স কর্মকাণ্ড দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি মাসে নতুন নতুন সাইটের আগমন ঘটছে। যদিও এ খাতের বর্তমান অবস্থা এবং ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে খুব একটা গবেষণা পরিচালিত হয়নি; তবে ক্যামুডটকমডটবিডি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত ধীরে ধীরে উন্নতি করছে এবং এ খাতে লেনদেন প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ই-কমার্সের ক্রেতারা মূলত শহরকেন্দ্রিক; তার মধ্যে ৮০ শতাংশ ক্রেতা ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের। বাকি ২০ ভাগ ক্রেতা হলেন নারায়ণগঞ্জ ও মেট্রোপলিটন শহর সিলেট। আর ৭৫ শতাংশ ই-কমার্স ব্যবহারকারীর বয়স ১৮ থেকে ৩৪-এর মধ্যে।

কিন্তু বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতের উন্নয়নে কতগুলো বিষয় জড়িত; যেমন— একটি সহায়ক উপযুক্ত জাতীয় নীতিমালা, সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ, আর্থিক লেনদেনের নিরাপত্তা, ধীরগতিসম্পন্ন ও ব্যয়বহুল ইন্টারনেট, ডেলিভারি চ্যানেল, ইন্টার-অপারেবল অবকাঠামো, দক্ষ ই-কমার্স প্রযুক্তি সহায়ক প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও মানবসম্পদ, আস্থাশীল ই-কমার্স পরিবেশ, ই-কমার্স খাতে ব্যাংকিং সুবিধা প্রদান এবং ই-কমার্স খাতের বিকাশে প্রণোদনা প্যাকেজের ব্যবস্থা করা। আর এক্ষেত্রে সরকারি নজরদারি প্রয়োজন।

মনে রাখতে হবে, অনলাইন শপিংয়ের ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে নারীরা এগিয়ে। ই-ক্যাব বলছে, অনলাইনে মোট ক্রেতার ৬০ শতাংশই নারী। সুতরাং নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও তাদের ক্ষমতায়নে উল্লেখিত বিষয়গুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। সুতরাং ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি অত্যাবশ্যক। সেই সঙ্গে একটি সহজ নীতিমালার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে এই ব্যবসাকে। জানা যায়, এ ধরনের একটি নীতিমালা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু সে নীতিমালা যেন ভোক্তা অধিকার আইনকে সুরক্ষা করে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি। আর এটা সম্ভব হলে কম মূল্যে ভালো মানের পণ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে এবং একই সঙ্গে টেকসই ও মজবুত হবে ই-কমার্স খাত।

একই সঙ্গে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতির সমৃদ্ধির ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করছি। সুতরাং এ খাতটি বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত হলেও, এক্ষেত্রে সরকারি নরজরাদি ও প্রণোদনাও জরুরি। এ প্রেক্ষিতে, সরকারের ভিশন-২০২১ : ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অধিকতর বেগবান হবে এবং সারা দেশে রফতানিযোগ্য বহুমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠা, পণ্য বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণ, পণ্যের প্রাধিকার নির্ধারণসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড গতিশীল হবে। আশা করি বিষয়টি বর্তমান সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads