• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
দরকার করোনার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ

প্রতীকী ছবি

সম্পাদকীয়

দরকার করোনার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ

  • শাহ আহমদ রেজা
  • প্রকাশিত ০১ এপ্রিল ২০২০

কথায় কথায় ‘আসলে’, ‘কিন্তু’ আর ‘ব্যস্ততম’ ধরনের কিছু শব্দের ভুল ও যথেচ্ছ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বিরক্ত করে তোলা টেলিভিশন রিপোর্টারদের একজন সম্প্রতি ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করেছেন। কোনো এক টিভি চ্যানেলের নারী রিপোর্টার তিনি। গত ২৩ মার্চ সর্বশেষ করোনা পরিস্থিতি এবং সরকারের কার্যক্রম ও সফলতা সম্পর্কে অবহিত করার জন্য সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক। প্রধানমন্ত্রীর পর সবচেয়ে ক্ষমতাধর মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও যখন স্বীকার না করে পারেননি যে, করোনা মোকাবিলায় সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে এবং এসব সংগ্রহের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে, তখনো স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেদিন বলছিলেন, সরঞ্জাম তথা পিপিইর বা পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্টের ‘এখনো তেমন প্রয়োজন নেই’!

এ পর্যন্ত এসে পাঠকরা ভাবতে পারেন, এখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘জ্ঞানের বহর’ নিয়েই সম্ভবত উপহাস করা হবে। অন্যদিকে আমার উদ্দেশ্য ওই টিভি রিপোর্টারের একটি জিজ্ঞাসার উল্লেখ করা। করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মন্ত্রী যখন মাস্ক পরা এবং আক্রান্ত-অনাক্রান্ত নির্বিশেষে অন্য মানুষজন থেকে অন্তত তিন ফুটের দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছিলেন তেমন এক সময়েও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে ঘিরে রেখেছিলেন জনা পঞ্চাশেক আমলা ও কর্মচারী। এ কথাটাই প্রশ্নের আকারে তুলে ধরতে গিয়ে ওই টিভি রিপোর্টার গুনে গুনে বলেছিলেন, মাননীয় মন্ত্রী, আপনার পেছনে ৩৭ জনকে দেখা যাচ্ছে ঠেসাঠেসি করে দাঁড়িয়ে থাকতে, যাদের কারো মুখে বা দেহেই কোনো মাস্ক বা রোগ প্রতিরোধের কোনো সরঞ্জাম নেই। মন্ত্রীর দু’পাশে যারা বসে ছিলেন তাদের মুখেও মাস্ক ছিল না। এমনকি স্বয়ং স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন কোনো রকম প্রতিরোধক ছাড়া। এভাবে জানানোর পর ওই রিপোর্টারের প্রশ্ন ছিল, আপনারাই যেখানে সচেতনতার প্রমাণ দিচ্ছেন না সেখানে জনগণ কেন আপনাদের কথায় উদ্বুদ্ধ হবে? বলা বাহুল্য, প্রশ্ন শুনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী যাকে বলে ‘লা-জবাব’ হয়ে গিয়েছিলেন! এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও হাসি-তামাশার ঝড় বয়ে গেছে।

এত কথা কিন্তু অকারণে বলা হচ্ছে না। বলার কারণ, রাজনৈতিক কোনো বিশেষ উপলক্ষ ও কর্মসূচির কারণে তো বটেই, ‘জ্ঞানের বহরের’ কারণেও সরকারের পক্ষ একদিকে করোনার বিষয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সুচিন্তিত নীরবতা অবলম্বন করা হয়েছে, অন্যদিকে কর্তাব্যক্তিরা দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন অনেক বিলম্বে। মূলত সে কারণেই বাংলাদেশে বহু মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে— সময় থাকতে ব্যবস্থা নেয়া হলে যারা আক্রান্ত হতো না। আক্রান্তদের প্রকৃত সংখ্যার ব্যাপারে দায়িত্বশীল মহলগুলো মুখে কুলুপ এঁটে রাখলেও প্রতিদিন দু’একজন করে মানুষের মৃত্যুও ঘটছে। বিশ্বের দেশে দেশে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ও বিস্তারের পরিপ্রেক্ষিতে তো বটেই, কোনো প্রতিষেধক বা চিকিৎসা না থাকার কারণেও এমন অবস্থাই স্বাভাবিক। আসলেও প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে অনেকে।

কিন্তু সঠিক তথ্য জানা যাচ্ছে না প্রধানত দুটি কারণে। প্রথমত তথ্য গোপন করার ব্যাপারে সরকারের অঘোষিত নির্দেশনা এবং দ্বিতীয়ত করোনা শনাক্ত করার কিট বা সরঞ্জামের অভাব। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ‘প্রয়োজন নেই’ বললেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকা করোনার কারণে জেলায় জেলায় তো বটেই, উপজেলা পর্যায়েও যেখানে পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা দরকার ছিল সেখানে সারাদেশে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানে সকল পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানের নাম আইইডিসিআর— রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সংক্রমণের পাশাপাশি জনমনে আতংক বেড়ে চলায় স্বাভাবিক কারণেই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিদিন শত শত মানুষ গিয়ে ভিড় জমাচ্ছে।

কিন্তু প্রধানত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কিট বা যন্ত্রপাতির অভাবে অধিকাংশ মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই সম্ভব হচ্ছে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত ৫৫ দিনে সন্দেহজনক মাত্র ৩২৬ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পেরেছে আইইডিসিআর। এমন অবস্থার অর্থ, অতি সীমিত লোকবল ও যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জাম নিয়ে কোনোভাবে কাজ চালাচ্ছে আইইডিসিআর। ফলে মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ যেমন অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে, তেমনি প্রতিদিন শত শত মানুষ সারাদিন অপেক্ষা করে পরীক্ষা ছাড়াই নিজেদের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। সর্বশেষ খবরে অবশ্য জানা গেছে, আইইডিসিআরের পাশাপাশি আরো চার-পাঁচটি হাসপাতালে সীমিত আকারে পরীক্ষা ও চিকিৎসার কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং শুরু হতে চলেছে।  

এদিকে বেশ কিছুদিন পর্যন্ত নীরবতা অবলম্বনের পর দেশে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্বের কথা স্বীকার করলেও প্রতিরোধের নামে সরকার এমন কিছু প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে যেগুলো জনমনে স্বস্তির পরিবর্তে উল্টো ভীতি-আতংক ও সংশয়ের সৃষ্টি করেছে। উদাহরণ দেয়ার জন্য স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার এবং হল-হোস্টেল খালি করার এবং সবশেষে অফিস আদালত বন্ধ করে দেয়ার কথা উল্লেখ করা যায়। সরকারের এই লকডাউনের সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের ফলে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা অনেকাংশে ফাঁকা হয়ে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা তো বটেই, রাজধানীর অধিকাংশ মানুষও ঢাকা ছেড়ে নিজেদের গ্রাম ও মফস্বলের বাড়িতে চলে গেছেন। সে কারণে এরই মধ্যে রাজধানী জনমানবশূন্য হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এমন অবস্থার দুটি আশংকাজনক বিশেষ দিক রয়েছে। প্রথমত, বিপুল সংখ্যায় মানুষ ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার ফলে কেনাবেচা কমলেও লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। বাজারে এর যেমন ভীষণ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তেমনি আয়-রোজগার কমে যাচ্ছে দিনমজুর ও ফুটপাতের হকারসহ সেইসব শ্রেণির— যারা দিন এনে দিন খেয়ে কোনোভাবে বেঁচে থাকে। যাত্রী কমে যাওয়ায় রিকশা ও সিএনজি চালকেরাও প্রচণ্ড অর্থকষ্টে পড়তে শুরু করেছে। এক কথায় বিপদ বেড়ে যাচ্ছে নিম্নবিত্ত ও গরিব মানুষদের। তাদের সামনে আয়-রোজগারের কোনো পথই খোলা থাকছে না। তেমন অবস্থায় স্বাভাবিক নিয়মেই রাতারাতি বেড়ে যেতে পারে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মতো বিভিন্ন অপরাধ।

আশঙ্কার দ্বিতীয় কারণ হলো, রাজধানী ছেড়ে গ্রাম ও মফস্বল শহরগুলোতে যে লাখ লাখ মানুষ গেছে, তাদের অনেকের দেহেই করোনার ভাইরাস থাকতে পারে বলে ধরে নেয়া যায়। বড়কথা, করোনার ভাইরাস যে রয়েছে সেকথা প্রায় কারোই জানা নেই। ফলে তারা আত্মীয়স্বজনসহ পরিচিতজনদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মেলামেশা করবে, করছেও। সে কারণে জেলা ও উপজেলার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে করোনা। আক্রান্ত ও বিপন্ন হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে করোনা ভাইরাসের যেহেতু এখনো কোনো ওষুধ বা ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না এবং খোদ রাজধানীর হাসপাতালগুলোতেও যেহেতু চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না, সেহেতু ধরেই নেওয়া যায়, জেলা ও উপজেলাসহ মফস্বলেও আক্রান্তরা কোনো চিকিৎসা পাবে না। তাছাড়া করোনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা সম্পর্কেও খুব কম মানুষেরই এখন পর্যন্ত জ্ঞান বা ধারণা রয়েছে। ফলে লাখ লাখ মানুষ শুধু আক্রান্তই হবে না, তাদের মধ্যে বড় একটি অংশের মৃত্যুও ঘটতে থাকবে। এভাবে সমগ্র বাংলাদেশই ভয়াবহ মহামারীর অসহায় শিকারে পরিণত হতে পারে।

এমন নিশ্চিত ভীতিকর অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতেই সরকারের উচিত সর্বতোভাবে উদ্যোগী হয়ে ওঠা। প্রথম ক্ষেত্রে সরকারকে করোনা সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে যে, আক্রান্ত হলেই মানুষের মৃত্যু ঘটে না। সেজন্য পিটিয়ে বা কান ধরে ওঠ-বস করিয়ে ভীত ও আতংকিত করার পরিবর্তে জনগণকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে মনোযোগী করতে হবে। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি শরীরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, যাতে করোনার ভাইরাসে আক্রান্ত না হতে হয়। জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার এবং বেশি মানুষের সঙ্গে মেলামেশা না করার ব্যাপারেও মানুষকে সচেতন করতে হবে।

অন্যদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপারে, যাতে চুরি-ছিনতাই এবং ডাকাতির মতো অপরাধ সংঘটিত না হতে পারে। সরকারকে সেই সাথে একদিকে পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, অন্যদিকে নিম্ন আয়ের গরিব মানুষদের জন্য স্বল্পমূল্যে এবং সম্ভব হলে বিনামূল্যে চাল-ডাল-তেল ও আটার মতো খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে। শুনতে অসম্ভব মনে হলেও বিশেষ করে কানাডার দৃষ্টান্ত স্মরণ করলে দেখা যাবে, সদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছুই সাধ্যাতীত নয়। এখন বেশি দরকার আসলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর কবল থেকে দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য সচেষ্ট হয়ে ওঠা। সদিচ্ছা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা থাকলে এবং দুর্নীতি প্রতিহত করা গেলেই সেটা সম্ভব হতে পারে।

একথা অবশ্যই বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশ এরই মধ্যে বিপজ্জনক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ওদিকে করোনাকে যেহেতু আন্তর্জাতিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে সেহেতু স্বাস্থ্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের দুর্বলতা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারের উচিত আইইডিসিআর তথা একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করার পরিবর্তে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বারডেম ও বিএসএমএমইউসহ রাজধানীর ছোট-বড় সকল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে জরুরি ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন কিট বা যন্ত্রপাতি কেনা, আমদানি করা। হঠাৎ শুনতে খারাপ লাগলেও সত্য হলো, আমদানির জন্য অর্থ কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, এটা অনেক পুরনো খবর যে, দেশ থেকে লক্ষ হাজার কোটি টাকা অবৈধ পথে পাচার হয়ে গেছে। এখনো পাচার হচ্ছে। সেই সাথে রাজনৈতিক কর্মসূচি উদযাপনের নামেও টাকা যথেষ্টই ওড়ানো হয়েছে। এজন্যই প্রশ্ন যেখানে মানুষের জীবন বাঁচানোর, সেখানে অর্থ না থাকার যুক্তি ধোপে টিকতে পারে না।

সরকারের উচিত যন্ত্রপাতি বা পিপিই ধরনের সরঞ্জাম আমদানির ব্যাপারে বেসরকারি খাত এবং বক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকেও উৎসাহিত করা। প্রয়োজনে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া। বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে করোনা শনাক্ত করা সহজসাধ্য হয়ে উঠবে এবং আক্রান্ত ও আতংকিত নির্বিশেষে সবার পক্ষেই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সময়ের ব্যাপারে পরিণত হবে। এজন্যই সচেতন সকল মহল আশা করেন, চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি করোনা শনাক্ত করার ব্যাপারেও সরকার কালক্ষেপণ না করে তৎপর হয়ে উঠবে। স্মরণ করা দরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশেষজ্ঞরা করোনা প্রতিরোধের ব্যাপারেই অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, ‘আতংকিত না হয়ে আগে পরীক্ষা করুন।’

এদিকে উদ্বেগের বিষয় হলো, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন ‘পরীক্ষা করুন’ কথাটাকে স্লোগানে পরিণত করেছে বাংলাদেশের মতো ঘন বসতির দেশে তখনো করোনা পরীক্ষারই ব্যবস্থা করা যায়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরং ২৩ মার্চও বলেছেন, ওসব সরঞ্জামের ‘প্রয়োজন নেই’! এমন অবস্থা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাছাড়া চিকিৎসার তুলনায় করোনা প্রতিরোধের জন্য সতর্কতাকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রধান ব্যবস্থা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও সরকারের উচিত সবার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। সরকারকে সেই সঙ্গে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেও সুপরিকল্পিত প্রচারণা চালানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ওষুধপত্র সহজলভ্য করতে হবে। কালোবাজারি ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ী নামধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশপ্রেমিকরা চান, সরকারের উদাসীনতার কারণে বাংলাদেশে যাতে করোনার বিস্তার না ঘটতে পারে, যাতে বিনা চিকিৎসায় একজন মানুষেরও মৃত্যু না ঘটে। এজন্য দরকার করোনার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ এবং এই যুদ্ধে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।

 

লেখক : সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads