• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
সুলতানা সাইয়েমার পরে কে

সংগ‍ৃহীত ছবি

সম্পাদকীয়

সুলতানা সাইয়েমার পরে কে

  • মহিউদ্দিন খান মোহন
  • প্রকাশিত ০৪ এপ্রিল ২০২০

‘আদল্লি পাইলে লাই (আশকারা), আনতে কইলে গোবরলাদা, ঠেইল্লা আনে গাই’। আমাদের বিক্রমপুর অঞ্চলে বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। এর মর্মার্থ হলো, কাউকে আশকারা দিলে তার এমন বাড়বাড়ন্ত হয় যে, তাকে যা করতে বলা হয়, তার অতিরিক্ত করতে গিয়ে ঝামেলা বাধিয়ে ফেলে। এক কথায় সীমা লঙ্ঘন করে সে। এই সীমা লঙ্ঘনের চিত্র আমরা হামেশাই দেখতে পাচ্ছি। আর সে চিত্র সুখকর তো নয়ই, বরং তা নিয়ন্ত্রণহীনতারই বহিঃপ্রকাশ। গত ২৭ মার্চ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চিনাটোলা বাজারে যে ঘটনা জনপ্রশাসনের একজন কর্মকর্তা ঘটিয়েছেন, তাকে ন্যক্কারজনক বললেও কম বলা হয়। ঘটনাটি এখন সবাই অবগত। তারপরও আলোচনার সুবিধার্থে এখানে তার কিছুটা উল্লেখ করছি। ওই উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এলাকায় যাতে জনসমাগম না ঘটে এবং করোনা প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত নির্দেশনা সবাই মানছে কি না তা দেখার জন্য। তিনি অভিযানের একপর্যায়ে উল্লিখিত বাজারে এসে পেয়ে যান মুখে মাস্কবিহীন তিন বৃদ্ধকে। একজন দিনমজুর, কষ্টেশিষ্টে দিন চলে তার। আরেকজন নিজের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে কোনোরকমে পরিবারসহ জীবনধারণ করেন। অপরজন ভ্যানচালক, পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাড়ের জন্য যাকে প্রতিদিন রাস্তায় নামতে হয়। এই তিনজনকে মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখে কর্তব্য-কর্মের তীব্র চেতনা জেগে ওঠে ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ার অন্তরে। তাদেরকে করোনার ঝুঁকি এড়াতে মাস্ক ব্যবহারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে কোনো কিছু না বলে অপরাধের শাস্তি হিসেবে কান ধরে প্রকাশ্য রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখলেন। শুধু তা-ই নয়, তাদের ছবিও তুললেন তার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায়। মুহূর্তে সাইয়েমা হাসানের কর্তব্যপরায়ণতার খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিসহ ভাইরাল হয়ে যায়। নিন্দা-প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। গণমাধ্যমেও গুরুত্ব পায় খবরটি। করোনাজনিত কারণেই হয়তোবা সরকারের টনকও নড়ে ত্বরিত গতিতে। পরদিনই সাইয়েমাকে প্রত্যাহার করা হয় মনিরামপুর থেকে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তাকে সংযুক্ত করা হয়। আইন প্রয়োগ বা কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে সাইয়েমা হাসানের এই শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহারের উদাহরণ বই কিছু নয়। এ যেন ‘ধরে আনতে বললে বেঁধে আনে, বেঁধে আনতে বললে মারতে মারতে আনে’ প্রবাদ কিংবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘দুই বিঘা জমি’ কবিতার সেই লাইনের বাস্তবরূপ— ‘রাজা যত বলে পারিষদ দলে বলে তার শতগুণ।’ আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে এমন পারিষদবর্গের অভাব কখনোই ছিল না। এদের কারণে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়, জনগণের কাছে হতে হয় হেয়প্রতিপন্ন। এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে পাঠানো হয়েছিল কোথাও যাতে জনসমাগম সৃষ্টি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে, প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু তিনি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিষ্টাচারের সীমা লঙ্ঘন করলেন। পিতার বয়সি তিন বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে অপমানজনক শাস্তি দিয়ে খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।

এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানের এ কীর্তিতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তার ওপর ভিত্তি করে গত ২৯ মার্চ আমাদের সময় ‘গুটিকয় কর্মকর্তায় প্রশ্নবিদ্ধ প্রশাসন’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, সাইয়েমার মতো গুটিকয় কর্মকর্তার কারণে পুরো প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। সুতরাং তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। না হলে এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনা বাড়তেই থাকবে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এটাকে  বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করলেও অত্যন্ত গর্হিত ও নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছেন। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান ফেসবুকে এক মন্তব্যে লিখেছেন, ‘আমি লজ্জিত, ব্যথিত, ও ক্ষুব্ধ। উচ্চ পর্যায় থেকে গাইডলাইন না দেওয়ায় অন্য দেশের অব্যবস্থাগুলো অনুসরণে উৎসাহী হয়েছেন মূর্খ কেউ কেউ। সবাই নয়। এজন্য গাইডলাইন দরকার, যেন কেউ তার ইচ্ছামতো আচরণ করতে না পারে।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শফিক হাসান লিখেছেন, ‘সাইয়েমা হাসান কি ব্রিটিশ নাকি পাকিস্তানি নাগরিক?’ তিনি আরো লিখেছেন, ‘আজকাল চাকরিতে ঢুকে একেকজন জমিদার বনে যান। জুনিয়রদের চালচলন, আচার-ব্যবহার দেখলে নিজেকে অসহায় মনে হয়।’ অপরদিকে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন পত্রিকাটিকে বলেছেন, ওই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই দুঃখিত। যা ঘটেছে তাতে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে তার হয়ে সরি বলা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। তাদের আচরণের জন্য আমাদেরকে বিব্রত হতে হয়। এ ঘটনায় আমরা অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি।’

সাইয়েমা হাসান কর্তৃক অপমানিত তিন বৃদ্ধের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী আফিসারকে। তিনি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের পরিবারের জন্য খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য দিয়ে এসেছেন। বৃদ্ধদের একজন দুঃখ করে বলেছেন, ‘আমার নাতনির সমান বয়সি একটি মেয়ের কাছে এমনভাবে অপমানিত হওয়ার কথা কোনোদিন ভুলব না।’ সত্যিই তো! এমন অপমানের জ্বালা কি কখনো প্রশমিত হয়? যে লোকটি রাস্তায় বেরোলে মুরুব্বি হিসেবে অনেকেই তাকে সালাম দেয়, সেই তিনি যখন মেয়ে বা নাতনির বয়সি কারো দ্বারা প্রকাশ্যে এভাবে অপমানিত হন, তখন তার অন্তরে যে মর্মজ্বালা সৃষ্টি হয়, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই অনুভব করতে পারে। এ ঘটনায় ওই তিন বৃদ্ধ নিজেদের পরিবার বা প্রতিবেশীদের কাছে কতটা শরমিন্দা হয়েছেন তা ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না।

প্রশ্ন হলো, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কারো কারো মধ্যে এ রকম ঔপনিবেশিক মনোবৃত্তি সৃষ্টি হলো কেন? কেন তারা নিজেদের প্রজাতন্ত্র তথা জনসাধারণের সেবকের পরিবর্তে প্রভুর আসনে কল্পনা করতে শুরু করলেন? কোথা থেকে তারা এরকম ঔদ্ধত্যের আশকারা পাচ্ছেন? মাত্র কয়েকদিন আগে কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীন তার ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে জন্ম দিয়েছিলেন আরেক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত। নিজের অবৈধ স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করায় একজন সাংবাদিককে মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে এনে নির্যাতন চালাতে দ্বিধা করেননি তিনি। তার ঔদ্ধত্য এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, অধীন কর্মকর্তাদের ক্যাডার বাহিনীর মতো ব্যবহার করার আগে একবার ভাবেননি এর ফল কী হতে পারে। হয়তো তার মধ্যে এমন ধারণা সৃষ্টি হয়েছিল, জেলার অধিকর্তা হিসেবে তিনি যা বলবেন, সবাই তা-ই বিশ্বাস করবে। হয়তো প্রতিবাদী কাউকে বশে আনার জাদুমন্ত্রটাও তার জানা ছিল। ভেবেছিলেন মফস্বলের একজন সাংবাদিককে নির্যাতন করে মিথ্যা মামলায় জেল দিলেও কেউ তার (ডিসির) কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু তিনি এটা ভুলে গিয়েছিলেন, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। পচা শামুকেও যে পা কেটে যেতে পারে, ডিসি সুলতানা নিশ্চয়ই এখন তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারছেন। ঠিক তেমনি ভাবনা হয়তো আচ্ছন্ন করে রেখেছিল মানিরামপুরের এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে। তিনি হয়তো মনে করেছিলেন, প্রত্যন্ত গ্রামের এই হতদরিদ্র তিন বৃদ্ধকে এভাবে ‘শাস্তি’ দিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতনদের কাছ থেকে বাহ্বা কুড়াবেন। কিন্তু বিধি বাম। পচা শামুকে পা কেটেছে তারও। গর্হিত এ কাজকে কেউ সমর্থন তো করেইনি, উল্টো এখন তাকেই ভোগ করতে হচ্ছে শাস্তি। পবিত্র কোরআন শরিফে বলা হয়েছে— ‘তোমরা সীমা লঙ্ঘন করো না, সীমা লঙ্ঘনকারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না।’ তা সত্ত্বেও আমাদের মধ্যে কেউ কেউ সীমা লঙ্ঘন করতে দ্বিধা করে না। ক্ষমতা এমনই এক জাদুকাঠি যে, এর সংস্পর্শে কেউ কেউ হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন। কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়, তা যেন তারা বিস্মৃত হন। সেইসাথে তারা এটাও বিস্মৃত হন যে, ‘ন্যাচারাল জাজমেন্ট’ বলে একটা কথা আছে। ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের ক্ষমতা নিমিষেই তিরোহিত হওয়ার অসংখ্য নজির থাকা সত্ত্বেও কেউ সতর্ক হন না। ক্ষমতার দম্ভে তারা কাউকে তোয়াক্কা করতে চান না। তেমনি ভাব পোষণ করে ফেনীর সোনাগাছি থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন আজ কারাপ্রকোষ্ঠের অন্তরালে মাশুল দিচ্ছেন।

এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানের ঘটনা নিয়ে যখন দেশব্যাপী তোলপাড়, ঠিক তখনই ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সে কারণে মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর এসেছে বরগুনা জেলার আমতলী থেকে। ঘটনার হোতা আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল বাসার ও ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি। হত্যা মামলার আসামিকে না পেয়ে মামলার অভিযোগে নাম না থাকা সত্ত্বেও ধরে আনেন তার সৎভাই শানু হাওলাদারকে। থানায় এনে চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। ছেড়ে দেওয়ার জন্য পরিবারের কাছে দাবি করা হয় তিন লাখ টাকা। দরিদ্র শানু হাওলাদারের পরিবার ব্যর্থ হয়েছিল থানা কর্মকর্তাদের খাই মেটাতে। পরিণতিতে লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। ওসি অবশ্য বলার চেষ্টা করেছেন, শানু আত্মহত্যা করেছে। তবে শানুর পরিবারের দাবি নির্যাতন চালিয়ে পুলিশ তাকে হত্যা করে আত্মহত্যার গল্প সাজিয়েছে। আমতলী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যন মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেছেন, পুলিশ টাকার জন্য নির্যাতন চালিয়ে শানুকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও এএসআই আরিফুর রহমানকে। ঘটনাটি যে অর্থলোভ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের আরেকটি উদাহরণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একইসঙ্গে এটাও বলে দেয়, ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কারো কারো বাড় কতটা বেড়েছে। ওসি হয়তো নিজেকে আমতলীর রাজাধিরাজ মনে করেছিলেন। তাই আসামি না হওয়া সত্ত্বেও নিরীহ শানুকে ধরে গরাদে ঢুকিয়ে অর্থ আদায়ের অপচেষ্টা করেছিলেন। প্রশাসনের এক শ্রেণির কর্মকর্তার নৈতিক অধঃপতন কতটা হয়েছে আমতলীর ঘটনা আর সর্বশেষ উদাহরণ বলা যায়।

প্রজাতন্ত্রের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারী, তার প্রায়ই বিস্মৃত হন যে, এ রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আর রাষ্ট্রের সে মালিকদের সেবা করার জন্যই তাদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের বেতন-ভাতার টাকাও জোগান দেন মালিকরা ট্যাক্সের মাধ্যমে। তারা যে প্রভু নন সেবক, এটাও তারা  ভুলে যান। আর তার ফলেই কুড়িগ্রাম, জামালপুর, সোনাগাজি, মনিরামপুর, আমতলীর ঘটনাগুলো ঘটে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এ ধরনের ঘটনা ও তার পরিণতি জানার পরও তারা থামছে না! একটার পর একটা ঘটনা মানুষের বিস্ময়ের মাত্রাকে কেবল বাড়িয়েই চলেছে! এর শেষ কোথায় কে জানে। সুলতানা, সাইয়েমার পর আবার কে সংবাদ শিরোনাম হন সেটাই চিন্তার বিষয়।

 

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads