• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯

সম্পাদকীয়

একটি দেশের মূল শক্তি তার সংস্কৃতি ও সভ্যতা

  • প্রকাশিত ২০ মার্চ ২০২১

হাসনাত আবদুল হাই

 

 

 

সংস্কৃতি সভ্যতার ভিত্তি। সভ্যতা সংস্কৃতির উন্নত রূপ। যখন সভ্যতা ছিল না, সংস্কৃতি ছিল। মানুষের জীবনযাপন শুরু হয়েছে সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে। উভয়ই হাত ধরাধরি করে চলেছে। প্রথমে জীবনযাপন হয়েছে, তারপর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে- এমন হয়নি। এর বিপরীতটাও ঘটেনি।

গুহাবাসী মানুষ যখন পশু শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেছে, সেই সময় থেকে মানুষের সংস্কৃতির সূচনা। প্যালিওলিথিক যুগের (খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০-খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০০ অব্দ) প্রাগৈতিহাসিক মানুষকে জীবনযাপনে গুহায় বাস করতে হয়েছে নিরাপত্তার জন্য। দলবদ্ধ হয়ে থাকতে হয়েছে পশু শিকারের উদ্দেশ্যে, হাতের ইঙ্গিতে অথবা মুখের নানা শব্দ উচ্চারণ করে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে দৈনন্দিন জীবনে যৌথ কাজ সম্পাদন করতে। পরিধেয় হিসেবে ব্যবহার করেছে গাছের বাকল, পশুর লোমশ চামড়া। ব্যবহার করতে হয়েছে প্রস্তরখণ্ড বা গাছের ডাল হাতিয়ার হিসেবে পশু শিকার ও আত্মরক্ষার জন্য, গুহার দেয়ালে এঁকেছে পশু শিকারের চিত্র ম্যাজিক ক্ষমতা অর্জনের জন্য, অবসর সময়ে তৈরি করেছে অলঙ্করণের জন্য পাথরের মালা, শ্রদ্ধা প্রকাশের উদ্দেশ্যে তৈরি করেছে পাথরের মাতৃকামূর্তি। এসব নিয়ে প্যালিওলিথিক যুগের মানুষের সংস্কৃতি। শুধু ধর্মবিশ্বাস আর আচার-অনুষ্ঠান ছিল না সেই সংস্কৃতিতে। তার পরিবর্তে ছিল গুহাচিত্রে পশু শিকারের দৃশ্য-অদৃশ্য শক্তির প্রতি বিশ্বাস, যা ধর্মীয় চেতনার পূর্বাভাস। প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষদের এক ধরনের জাদু বিশ্বাস বা ধর্মচৈতন্য থেকে ছবি আঁকার প্রেরণা এসেছে, যদিও প্রাকৃতিক কোনো ঘটনাকে তারা দৈবশক্তি বলে শনাক্ত করেনি। প্যালিওলিথিক যুগের সংস্কৃতির যে অংশ উন্নতির পথ প্রশস্ত করেছে তা হলো হাতিয়ারের উৎকর্ষ সাধন। প্রযুক্তির উন্নতিই মানুষকে উন্নততর সংস্কৃতির দিকে নিয়ে গেছে। এর অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে অন্যান্য ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক উন্নতি।

মানুষের সংস্কৃতির বিবর্তনের সঙ্গে যে দুটি বিষয় সম্পর্কিত তা হলো হাতিয়ার বা প্রযুক্তির ক্রমাগত উন্নতি এবং ধর্ম বিশ্বাস। প্রযুক্তি মানুষকে উন্নততর পর্যায়ে নিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে, ধর্ম বিশ্বাস তার মনে প্রশান্তি এনেছে, বিশেষ করে দুঃখের সময়ে এবং অনিশ্চয়তার ভেতর। বিজ্ঞান এই ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলেই ধর্মের যাত্রা অব্যাহত। যেসব সভ্যতা বর্তমানে বিদ্যমান তার প্রতিটির সঙ্গেই প্রযুক্তির উন্নতি ও ধর্ম বিশ্বাসের অক্ষুণ্নতা জড়িত। আইনস্টাইন যখন বলেন, ঈশ্বর দৃশ্যে মেলেন না। অর্থাৎ তার সৃষ্টিতে নিয়ম-শৃঙ্খলা রয়েছে, যেখানে বিজ্ঞানে ধর্মের স্বীকৃতি পাওয়া যায়।

মানুষই একমাত্র প্রাণী যে স্থিতাবস্থায় সন্তুষ্ট থাকেনি এবং এখনো নেই। তার কথা মেনে নিলে সংস্কৃতির নিরন্তর চলিষ্ণুতা এবং উৎকর্ষ অর্জনের প্রবণতাকে খাটো করে দেখা হয়। সংস্কৃতি যদি হয় জীবনযাপন তাহলে এই অভ্যাস ও চর্চা এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকতে পারে না। কেননা, জীবনযাপন স্থির-অনড়-অচল ব্যাপার নয়, পরিবর্তনের জন্য তা চ্যালেঞ্জের অপেক্ষা করে না। অবশ্য চ্যালেঞ্জ এলে তা অতিক্রম করার জন্য সংস্কৃতি আরো তৎপর হয় এবং জীবনযাপনে পরিবর্তন আসে আরো দ্রুত।

সংস্কৃতির অগ্রগতির বর্ণনায় সামনে অগ্রসর হওয়ার আগে এখানে একটা বিষয়ের উল্লেখ সমীচীন হবে, যাকে বলা যায় আগাম এক সমস্যার ব্যাখ্যা। সাধারণত সংস্কৃতির দুটি দিকের কথা বলা হয়ে থাকে। প্রথমত, এর বস্তুগত দিক, যা দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য অপরিহার্য। যেমন- খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয়। দ্বিতীয়ত, সংস্কৃতির সৃজনশীল অনুভূতিনির্ভর নান্দনিক দিক, যার অন্তর্ভুক্ত শিল্প-সাহিত্য। এর সঙ্গে যুক্ত করা প্রয়োজন ধর্মীয় বিশ্বাস, চেতনা ও আচার-অনুষ্ঠান। ধর্মকে বস্তুগত সংস্কৃতির অংশ যেমন বলা যায় না, নান্দনিক সৃষ্টির মধ্যেও তা পড়ে না। ধর্ম বস্তুনির্ভর বা অনুভূতিনির্ভর নয়, একান্তভাবেই বিশ্বাসনির্ভর। বস্তু নিয়ে এমনকি অনুভূতি নিয়েও যুক্তির অবতারণা করা চলে। কিন্তু ধর্ম একান্তভাবেই বিশ্বাসনির্ভর। যুক্তির ভিত্তিতে মতৈক্যে পৌঁছানো যায় সহজেই। কিন্তু ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে, গোষ্ঠী থেকে গোষ্ঠীতে, সম্প্রদায় থেকে সম্প্রদায়ে বিশ্বাসের পার্থক্য ঘটতে পারে। প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের প্রচলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মধ্যে এই কারণে বিবাদ-বিসম্বাদ এবং সংঘর্ষ হয়েছে। প্যাগান ধর্ম খ্রিস্টধর্মকে স্বীকার করেনি, খ্রিস্টধর্ম ক্ষমতা সঞ্চয় করে প্যাগান মন্দির ও মূর্তি ধ্বংস করেছে। হিব্রু ধর্মাবলম্বী ইহুদিরা খ্রিস্টানদের বিরোধিতা করেছে এবং অভিযোগ রয়েছে যে, তারাই যিশুখ্রিস্টকে রোমক শাসকদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে ক্রুশবিদ্ধ করায়। একই ধর্মের মধ্যে সংঘর্ষও ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে, যেমন ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাসীদের সঙ্গে প্রটেস্টান্টদের সংঘর্ষ। ধর্মযুদ্ধের প্রকৃষ্ট অথবা নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত একাদশ দশক থেকে ইউরোপে পোপের নির্দেশে জেরুজালেম ও এশিয়া মাইনর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মযুদ্ধ, যা প্রায় চারশ’ বছর চলেছিল। শেষ পর্যন্ত এটি কেবল ধর্মযুদ্ধ নয়, লুণ্ঠনযজ্ঞে পরিণত হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে, সংস্কৃতির প্রথম দুটি দিক, বস্তুগত পরিচয় এবং সৃজনশীল নান্দনিক কাজ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীর মধ্যে ঐক্যের বন্ধন (মূর্তি তৈরি বা প্রতিকৃতি নির্মাণ তার ব্যতিক্রম) সৃষ্টি করলেও ধর্মীয় বিশ্বাস অতীতে সংঘর্ষের কারণ হয়েছে এবং এখনো এর দৃষ্টান্ত বিচ্ছিন্নভাবে হলেও পাওয়া যাচ্ছে (এখনো ইউরোপে মুসলিম উগ্রপন্থিদের হামলা) কিন্তু এর ভিত্তিতে যদি বলা হয় যে, কম্যুনিজমের পতনের পর ভবিষ্যতে সংঘর্ষ ধর্মভিত্তিক সভ্যতার ভিত্তিতেই হবে, তাহলে অতিরঞ্জন শুধু নয় সেই ভবিষ্যদ্বাণীকে বলতে হবে অবাস্তব।

সংস্কৃতির উন্নতি সরলরৈখিকভাবে অগ্রসর হয়নি। এই উন্নতি নির্ভর করেছে প্রতিকূল পরিবেশের চ্যালেঞ্জ (টয়েনবির ব্যাখ্যা অনুযায়ী) এবং সর্বোপরি মানুষের উদ্ভাবনী শক্তির জন্য। যেখানে উদ্ভাবনী শক্তি প্রবল ছিল না সেই সব অঞ্চলে এখনো মানুষ আদিম জীবনযাপন করে। আবার যেখানে কৃষি-সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পের প্রসারে অগ্রসর হতে পারেনি, সেসব সংস্কৃতি এক স্থানে স্থির হয়ে থেকেছে, উন্নত স্তরে প্রবেশ করতে পারেনি। যেমন- কার্ল মার্কস উপনিবেশের আগে ভারতবর্ষ সম্বন্ধে ‘অচলায়তনের সংস্কৃতির’ কথা বলেছেন, যার মধ্যে একই চক্রের ভেতর মানুষের জীবন আবর্তিত হয়েছে। উপনিবেশ স্থাপিত হওয়ার পরই ভারতের কৃষি-সংস্কৃতি শিল্প-সংস্কৃতি অর্থাৎ উন্নত পর্যায়ে পৌঁছানোর সুযোগ পেয়েছে। এটা ঔপনিবেশিকতার ভালো দিক, কিন্তু এর জন্য মন্দ দিকগুলো সমালোচনার ঊর্ধ্বে বলা যায় না। সংস্কৃতির উন্নতি সরলরৈখিক এবং অব্যাহত না হওয়ার জন্যই পৃথিবীর সব দেশে নিও-লিথিক যুগ (প্রাগৈতিহাসিক) থেকে সভ্যতার ঐতিহাসিক যুগের সূচনা হয়নি। আবার সংস্কৃতির উন্নতি ব্যাহত হওয়ার ফলে অনেক সভ্যতা বিলুপ্তও হয়ে গেছে। সভ্যতার চালিকাশক্তি সংস্কৃতির স্থবিরতার জন্যই ভারত ও চীনের প্রাচীন সভ্যতা ইউরোপের মতো আধুনিকতার বিশেষ উন্মেষ ঘটাতে পারেনি। ঔপনিবেশিক শাসনের মাধ্যমে ইউরোপীয় সভ্যতা ভারতে সভ্যতার পুনর্জীবনের সুযোগ এনে দিয়েছে। চীন দেশে ইউরোপীয় সভ্যতা একইভাবে প্রভাব বিস্তার করেনি, যার জন্য প্রাচীন চীন সভ্যতায় নতুন প্রাণসঞ্চারে বিলম্ব ঘটেছে।

আর্নল্ড টয়েনবি সভ্যতার উল্লেখ না করে তার স্থানে ‘সমাজের’ কথা বলেছেন। তার মতে, সভ্যতা বিমূর্ত ধারণা, কিন্তু সমাজ তার বিপরীত। ক্লদ-লেভি স্ট্রমের মতে, সভ্যতা ও সমাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই, তারা একে অন্যের পরিপূরক। ফরাসি ঐতিহাসিক ব্রদেলও বলেছেন, সমাজের বিভিন্ন অংশের (বস্তুগত ও অবস্তুগত) বিশ্লেষণ করলেই সভ্যতার বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু সমাজ মানুষের যৌথ বসবাসকে কেন্দ্র করে গঠিত হয়, তার কেন্দ্রে থাকে সংস্কৃতি, যা সেই বসবাসকে কংক্রিট বা মূর্ত ও নির্দিষ্ট রূপদান করে। এই কারণে সভ্যতার ভিত্তি অথবা সমার্থক হিসেবে সংস্কৃতির উল্লেখই যথাযথ মনে হয়।

সংস্কৃতির উন্নতির অভাবে সমাজ চলিষ্ণু হয় না। সভ্যতারও বিকাশ ঘটে না। সভ্যতা যে টিকে থাকে, উন্নতির পথে এগিয়ে যায়, তার পেছনেও কাজ করে ক্রমাগত উন্নতিশীল সংস্কৃতি। এই উন্নতিশীল সংস্কৃতি ছাড়া সভ্যতার যেমন বিকাশ ঘটে না, তার অগ্রযাত্রাও নিশ্চিত হয় না। তবে ব্রদেলের একটি উক্তি মেনে নেওয়া যায় : সংস্কৃতি নগরের সৃষ্টি করতে পারে, নাও পারে। যদিও সভ্যতার জন্য নগরের আবির্ভাব একটি পূর্ব শর্ত। কিন্তু এই মন্তব্যে ব্রদেল প্রকারান্তরে সংস্কৃতির চলিষ্ণুতার গুরুত্বই স্বীকার করেছেন এবং সভ্যতার পূর্বশর্ত হিসেবে নগরায়ণকে প্রকারান্তরে মেনে নিয়েছেন। সভ্যতার কারণ হিসেবে ‘নগর বিপ্লবের’ কথা বলেছেন প্রত্নতাত্ত্বিক গর্ডন চাইল্ড, (ম্যান মেকস্ হিমসেলফ, ১৯২৬)। এটা সত্যি যে, ছোট শহর থেকে বড় নগরের প্রতিষ্ঠা না হলে সভ্যতার বিকাশের জন্য যে প্রশাসন ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো, শিল্পের প্রসার, ব্যবসা-বাণিজ্য (বৈদেশিকসহ), যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, শিক্ষার প্রসার ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন সম্ভব হতো না। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যায় বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের প্রয়োজন মেটানো, সমাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বাহিনী সৃষ্টি, স্থাপত্যশিল্পের উন্নতির মাধ্যমে নগরের প্রয়োজন মেটানো ও শ্রী বৃদ্ধি, লিখন পদ্ধতির ব্যবহার করে শাসনকাজ থেকে শুরু করে সাহিত্য ও দর্শন চর্চা এবং শাসক ও পুরোহিত শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া শিল্পকর্মের প্রসার ও উন্নতি সম্ভব হতো না, কেননা ছোট জনপদের (শহরের) পক্ষে এসব বিশাল ও বহুমুখী দায়িত্ব পালন হতো সাধ্যের অতীত। ছোট শহরের শাসক শ্রেণি জনগণের আনুগত্য লাভেও ব্যর্থ হতো, যার জন্য রাজস্ব আদায় হতো সীমিত। এসব কারণে সভ্যতার বিকাশে নগরায়ণ ছিল অপরিহার্য। কিন্তু ‘নগর-বিপ্লব’ বলা হলে তাকে স্বয়ম্ভূ হিসেবে দেখা যায়, তার পেছনে সংস্কৃতির যে ক্রমাগত উন্নতির প্রক্রিয়া তা গৌণ হয়ে যায়। সভ্যতার ব্যাখ্যায় যা বলা হয়েছে, নগর বিপ্লবের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য : সংস্কৃতির ক্রমবিকাশই নগরের প্রতিষ্ঠা করেছে। সব দেশে নয়, অন্তত একই সময়ে নয়, কিন্তু যখনই সভ্যতার পাদপীঠ হিসেবে নগরের পত্তন হয়েছে, সংস্কৃতির ধারাবাহিকতায়ই তা হয়েছে। সভ্যতা যেমন সংস্কৃতি নিরপেক্ষ নয়, ‘নগর বিপ্লবও’ তেমনই বলা যায়।

সংস্কৃতি সভ্যতার বিকাশ ঘটায়। কিন্তু সেখানেই তার যাত্রা শেষ হয় না। সংস্কৃতি মানুষের জীবনযাপনের মিথস্ক্রিয়া। যে সভ্যতা উন্নত সংস্কৃতির অবদান, সেই-ই তার ভবিষ্যৎ উৎকর্ষসাধনের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করবে, পৃষ্ঠপোষকতা দেবে, লালন-পালন করবে। এই পর্যায়ে এসে সংস্কৃতি আর সভ্যতা হয়ে যাবে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার যোগফল। যে সভ্যতা এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে তার স্থবিরতা দেখা দেবে যা একসময় পতন অবশ্যম্ভাবী করে তুলবে। অতীতে অনেক সভ্যতার ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেক দেশে সংস্কৃতি এখন এমন অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছেছে, স্বতঃস্ফূর্ততা অর্জন করেছে এবং তার আন্তর্জাতিকতার সম্পর্ক এখন এমন যে সে নিজের গতিতেই অগ্রসর হবে বলে মনে হয়। শুধু সমস্যা হলো তার গতি-প্রকৃতি ও লক্ষ্য নিয়ে। এখন স্বাধীনতার ৫০ বছরে ওই দিকটিতে নজর দিতে হবে। বাঙালির সংস্কৃতির একটা শক্তি আছে। ওই শক্তিটিকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে উন্নয়নশীল দেশের অগ্রযাত্রায়।

 

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাবেক সচিব

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads