• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
এক যুগেও হল ছাড়েননি ছাত্রলীগ নেতারা

এক যুগেও হল ছাড়েননি ছাত্রলীগ নেতারা

সংগৃহীত ছবি

শিক্ষা

এক যুগেও হল ছাড়েননি ছাত্রলীগ নেতারা

  • ঢাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ মে ২০১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অন্যসব হলের মতো হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে তীব্র আসন সঙ্কট। এরই মধ্যে অছাত্র ও বহিরাগতরা ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় হলের অনেক কক্ষে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না থাকায় হলটি তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছর হলে যে সংখ্যক ছাত্রের আসন বরাদ্দ দেওয়া হয় সে সংখ্যক সিট খালি থাকে না। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ছাত্রলীগ নেতারা কক্ষ দখল করে রাখায় বৈধ ছাত্ররা কক্ষ পাচ্ছেন না। গণরুমে অবর্ণনীয় কষ্টে জীবনযাপন করতে হচ্ছে প্রকৃত ছাত্রদের।

মুহসীন হলে অসংখ্য ছাত্রলীগ নেতা বসবাস করছেন এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে হলে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৫-০৬ সেশনে ভর্তি হওয়া মাকসুদ রানা মিঠু (কক্ষ নম্বর ৩৩৭) ও ইমতিয়াজ বাপ্পী বুলবুল (কক্ষ নম্বর ১১১)। দুজনই ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহসভাপতি। ইমতিয়াজ বাপ্পী গত বুধবার হল ছেড়েছেন। ১১ বছর ধরে হলে থাকেন একই কমিটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আল-আমিন (কক্ষ নম্বর ৩১৮), সহসভাপতি মনির (৫২৫), ছাত্রলীগ নেতা রেদোয়ান (৩২১) ও ঢাবি ছাত্রলীগের গত কমিটির আগের কমিটির এক নম্বর সাংগঠনিক সম্পাদক আপেল মাহমুদ সবুজ (কক্ষ নম্বর ৩১৭)। ৩৬১ নম্বর কক্ষে সৌরভ নামে একজন থাকেন। তিনি ৮ মাস ধরে ব্যাংকে চাকরি করছেন। ৪৪৩ নম্বর কক্ষটি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রানা নামে একজনের দখলে। ৬ মাস ধরে তিনি হলে থাকেন না, তার কক্ষটি তালা মারা। এ ছাড়া মুহসীন হলে অন্য হলের এবং কয়েকজন বহিরাগত থাকেন ছাত্রলীগ নেতাদের আশ্রয়ে। ৩৬২ নম্বর কক্ষে রুহুল নামে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য থাকেন। ৪৩৭ নম্বর কক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলাল, ১০১৫তে সান্ধ্যকালীন কোর্সের দুলাল, ১০২০-এ ঢাকা কলেজের কামাল, ১০২৮তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীফ, ১০১৪তে ঢাকা কলেজের ইমরান, ১০০৩-এ আমিরুল ইসলাম, ৪৫৪ নম্বর কক্ষে জিয়া হলের এক ছাত্র থাকেন। শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকরাও জানেন, সবচেয়ে বেশি অছাত্র এবং বহিরাগতরা মুহসীন হলে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমতে বিভাগ থেকে হল বরাদ্দ দেওয়া হয়। হল প্রশাসনের দায়িত্ব বরাদ্দ পাওয়া ছাত্রকে হলের কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করা। কিন্তু মুহসীন হলের প্রায় ৪০০টি কক্ষের একটি কক্ষও হল প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেই। হলে নিজেদের ইচ্ছামতো ছাত্র ওঠানো-নামানো করেন সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতারা। ছাত্ররা রাজনৈতিক কর্মসূচি করার শর্তে নেতাদের মাধ্যমে হলে ওঠেন। ছাত্রলীগ নেতারা যখন কর্মসূচিতে ডাকেন তখনই বের হতে হয় হলের ছাত্রদের।

দীর্ঘদিন ধরে হলে থাকার বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি সরকার জহির রায়হান ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অনেক কেন্দ্রীয় নেতা থাকেন। সিনিয়র হওয়ায় আমরা কিছু বলতে পারি না।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগের বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, এটা প্রশাসনের দায়িত্ব।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এটা হল প্রভোস্টের দায়িত্ব। তাকে বলা আছে, তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads