• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
জরিমানা বাতিলে মাঠে বিসিএস শিক্ষা সমিতি

বিসিএস শিক্ষা সমিতির লোগো

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

জরিমানা বাতিলে মাঠে বিসিএস শিক্ষা সমিতি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০১৮

দ্বৈত ভর্তির নাম করে শিক্ষার্থীদের ওপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্রাতিরিক্ত ফি ধার্য করার প্রতিবাদে মাঠে নেমেছে বিসিএস শিক্ষা সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ বিদেশে থাকায় রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সমিতির সভাপতি ও রাজধানীর সরকারি কাজী নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার।

সরকারি কলেজের শিক্ষক সংগঠনের নাম বিসিএস শিক্ষা সমিতি। গত কয়েকদিনে সারা দেশের বহু অধ্যক্ষ জরিমানা না নেওয়ার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি দিয়েছেন। উপাচার্যকে পাঠানো চিঠির অনুলিপি শিক্ষামন্ত্রী ও সচিবকেও দিয়েছেন অধ্যক্ষরা। এ ছাড়া সারা দেশের কলেজ শিক্ষকরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন।

বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খন্দকার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ফরম ফিলাপের নাম করে জরিমানা আদায় করাটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যায় সিদ্ধান্ত। জরিমানা না নেওয়ার জন্য আমরা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জানিয়েছেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে জরিমানা করার সুযোগ নেই। কাজেই উপাচার্য দেশে আসার পর জরিমানা কমানো হবে কি না এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বিসিএস শিক্ষা সমিতির সভাপতি আরো বলেন, উপাচার্য দেশে ফিরে আসার পর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হলে সমিতি আন্দোলন শুরু করবে। তিনি জানান, জরিমানার টাকা বিশ্ববিদ্যালয় রদ না করলে স্নাতক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার বেড়ে যাবে। বহু শিক্ষার্থী টাকা দিতে না পেরে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে।

একাধিক শিক্ষক বলেছেন, মাত্রাতিরিক্ত জরিমানার কারণে মফস্বলের ছেলেমেয়েরা বহু কষ্টেও টাকা জোগাড় করতে পারেনি। ফরম পূরণের সময় বিভাগে বসে শিক্ষার্থীদের আকুতি দেখে খারাপ লাগে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখেই শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করছেন বলে জানান।

এদিকে, ২০১৬-১৭ সেশনের দ্বৈত ভর্তি বাতিলের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা আদায় এবং হয়রানির প্রতিবাদে এবং মাস্টার্স ও এলএলবি কোর্সে একই সঙ্গে অধ্যয়ন পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল রোববার সকালে গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।

তা ছাড়া সিলেটের এমসি কলেজের প্রধান ফটকে ‘জরিমানার নামে ব্যবসা মানি না’, ‘অযৌক্তিক জরিমানা থেকে মুক্তি চাই’ প্রভৃতি স্লোগান নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৬-১৭ সালে স্নাতক (পাস) কোর্সে ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী পরের বছর স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়। কিন্তু ওই সময় শিক্ষার্থীরা আগের ভর্তি বাতিল না করেই পাস কোর্স থেকে সম্মান কোর্সে ভর্তি হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা বলছে, ভর্তি বাতিলের জন্য কলেজগুলোয় আবেদন করেছিল। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বলছে ভর্তি বাতিলের আবেদন পায়নি। তবে সারা দেশে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কত ঠিক তা জানা যায়নি।

কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনে ভর্তি বাতিল করে পরের সেশনে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর আকস্মিক জরিমানা ধার্য করেছে। গত ১৭ মে প্রতিষ্ঠানটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০১৬-১৭ সেশনে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিলের আবেদন করেছে তাদের ভর্তি বাতিল হয়নি। যারা প্রথম বর্ষের সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে তাদের ৭ হাজার ৫০০, এবং যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। একইভাবে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পূর্বে মাস্টার্স (নিয়মিত/প্রাইভেট) প্রোগ্রামে যে সকল শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পূর্বে মাস্টার্স (প্রফেশনাল) প্রোগ্রামে যে সকল শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি তাদের জরিমানা বাবদ ৭ হাজার ৫০০ টাকা ও ভর্তি বাতিল ফি বাবদ ৭০০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আদেশের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads