• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
বেসরকারিতে শিক্ষক হওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৩৫

৩৫ বছরের পর কেউ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হতে পারবেন না

প্রতীকী ছবি

শিক্ষা

বেসরকারিতে শিক্ষক হওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৩৫

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৪ জুন ২০১৮

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হওয়ার বয়সসীমা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে সরকার। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ৩৫ বছরের পর কেউ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হতে পারবেন না। গতকাল রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভায় শিক্ষক নিয়োগের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করে এই প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের উপস্থিতিতে পরবর্তী সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।

পঞ্চদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের স্বার্থে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা এবং মহিলা কোটা নির্ধারণে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন।

সভাশেষে অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) জাবেদ আহমেদ বলেন, আদালতের রায়ের পর নিবন্ধিতদের চাকরিতে যোগ দেওয়ার বয়সসীমা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে আমাদের কাছে চিঠি পাঠায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে গতকাল আমরা সভা করেছি। সভায় শিক্ষকদের চাকরিতে যোগ দেওয়ার বয়সসীমা ৩৫ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই সুপারিশে সবাই একমত হয়েছেন। আগামী সপ্তাহে শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে পরবর্তী সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, সারা দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে পুরুষ-মহিলাদের আলাদা করে তালিকা তৈরি করতেও এনটিআরসিএকে নির্দেশ দেওয়া হবে।

এর আগে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও নানা জটিলতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাচ্ছিলেন না প্রার্থীরা। বর্তমানে সারা দেশে এনটিআরসিএ’র নিবন্ধিত ছয় লাখ প্রার্থী চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে নিবন্ধিত প্রার্থীরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে এ পর্যন্ত ২৫০টি মামলা করেন। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত আদালত ১৬৬টি মামলার রায় দেন। আদালতে মামলার কারণে গত দুই বছর ধরে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগে সুপারিশ করা হলেও তাদের নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। সারা দেশে বেসরকারি স্কুল-কলেজে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে দেশের প্রায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

১৬৬টি মামলা নিষ্পত্তি করে আদালতের দেওয়া রায়ে সাতটি নির্দেশনা ছিল। এগুলো হলো- বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিবছর নিবন্ধন পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। তিন মাসের মধ্যে জাতীয়ভাবে নিবন্ধিত সব শিক্ষকের একটি মেধাতালিকা প্রণয়ন করতে হবে। এনটিআরসিএ সুপারিশকৃত শিক্ষকদের যোগদান করতে দেওয়া না হলে ৬০ দিনের মধ্যে সেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি বাতিল করতে হবে। সংশ্লিষ্ট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পুনরায় কমিটি গঠন করতে হবে। আদালতের এসব নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত সভা করা হয়।

এনটিআরসিএ’র সদস্য মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, গত ১১ এপ্রিল আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পেয়েছি। রায়ে যেসব নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের যোগদানের বয়সসীমা নির্ধারণ করা হলে নিবন্ধিত প্রার্থীদের মেধাতালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হবে। যোগদানের এই বয়সসীমা নির্ধারণ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মেধাতালিকা তৈরি করা হবে। এরপর এনটিআরসিএ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads