• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুই প্রস্তাবনা

প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত দুটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন অনশনরত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

এমপিওর দাবিতে অনশন

প্রধানমন্ত্রীর কাছে দুই প্রস্তাবনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৮

স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত দুটি প্রস্তাবনা দিয়েছেন অনশনরত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে ‘নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের’ সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে এ প্রস্তাবনা জমা দেন। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওয়াহিদা আক্তার সেটি গ্রহণ করেন বলে বাংলাদেশের খবরকে জানান শিক্ষক নেতারা।

প্রথম প্রস্তাবনায় বরাদ্দকৃত অর্থ অপর্যাপ্ত হলেও সব নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওর আওতায় এনে আংশিক বেতন চালু করে পরবর্তী অর্থবছরে বেতনের সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দীর্ঘ ১৫-২০ বছর এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাই করার উদ্দেশ্যে এমপিওভুক্তির পর তিন বছর সময় দেওয়া। এ সময়ে সক্ষমতা অর্জনে ব্যর্থ হলে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ। এ প্রস্তাবের আলোকে সারা দেশের নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে যাতে এমপিওভুক্ত হয় সেজন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বঞ্চিত নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা চিরকৃতজ্ঞতার বন্ধনে আবদ্ধ হবে।

এদিকে গতকাল সপ্তম দিনের মতো ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের সড়কে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। গতকালও বেশ কয়েকজন অনশনস্থলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে ৩৫ শিক্ষককে স্যালাইন দেওয়া হয়। দিন দিন অসুস্থদের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। তবে এমপিওভুক্তির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান আন্দোলনরতরা।

গতকাল অনশনে শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতিও বেড়েছে। প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসে তারা কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ আর স্লোগানে জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা কম্পিত হয়ে উঠছে। ‘সকল স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা টি-শার্ট গায়ে ও ‘এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন’ লেখা ফিতা মাথায় বেঁধে সহস্রাধিক শিক্ষক কর্মসূচিতে অংশ নেন।

গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা। দাবি পূরণ না হওয়ায় পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২৫ জুন থেকে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন শুরু করেন। এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার একান্ত সচিব সেখানে গিয়ে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক ও কর্মচারীরা আন্দোলন-কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। ফেডারেশনের এক নেতা বলেন, সারা দেশে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষক মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবু এমপিওভুক্তির আশায় শিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্যমতে সারা দেশে বর্তমানে সাড়ে সাত হাজার নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে পাঁচ হাজার ২৪২টি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাকে। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত না করায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২৮ হাজার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads