• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ঢাবিকে সব ক্ষেত্রে মর্যাদার আসনে উন্নীতের অঙ্গীকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার ক্যাম্পাসে আনন্দ র‌্যালি বের হয়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

৯৭তম প্রতিষ্ঠাবর্ষিকীতে বর্ণিল আয়োজন

ঢাবিকে সব ক্ষেত্রে মর্যাদার আসনে উন্নীতের অঙ্গীকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০২ জুলাই ২০১৮

‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা’- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার উদযাপিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৯৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ ভূখণ্ডের মানুষের সব নৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়া জাতির আলোকবর্তিকা এ প্রতিষ্ঠান গতকাল পা রেখেছে ৯৮ বছরে। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে প্রতিষ্ঠানটিতে গতকাল দিনভর ছিল বর্ণিল আয়োজন।

প্রতিবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এবারো নানা কর্মসূচি হাতে নেয় কর্তৃপক্ষ। আয়োজনের তালিকায় ছিল কেক কাটা, শোভাযাত্রা, চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ও সঙ্গীত। সেই সঙ্গে ক্যাম্পাস সাজানো হয় মনোরম নকশা ও বর্ণিল রঙে। গতকাল আয়োজনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিভিন্ন হল থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনের চত্বরে জড়ো হন। সেখানে পতাকা উত্তোলন করে ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান। সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনসংলগ্ন চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাবির পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সঙ্গীত ও উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে দিবসটির আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি শুরু হয়।

পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে আয়োজিত শোভাযাত্রায় অংশ নেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হয়। বেলা ১১টায় টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষা-গবেষণাসহ সব ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে মর্যাদার আসনে উন্নীত করা হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা ছড়াতে নিজস্ব ঐতিহ্যও বিশ্ববিদ্যালয় বজায় রাখবে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন একটি দর্শন। একে শিক্ষার দর্শনের সঙ্গে কীভাবে সমন্বয় করা যায়, সেই লক্ষ্যে এ বছর আমরা এ প্রতিপাদ্য নির্বাচন করেছি। এর মাধ্যমে লিঙ্গ, ব্যক্তি পেশা ও জনপদ নির্বিশেষে সমানুপাতিক উপাদানগুলো নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে।’

আলোচনা পর্বে ঢাবির বাংলা বিভাগের ইমেরিটাস জাতীয় অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ছাত্র আন্দোলনের যে গৌরব, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার যে সুনাম, তা বর্তমান সময়ে কেন আমরা হারিয়ে ফেললাম, কেন সেই শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে গেল, আমাদের সবার তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে কী দেওয়ার আছে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব বাড়াতে সবার ভূমিকা কী, তা নিয়েও ভাবতে হবে।’

ড. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন ঢাবির উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. নাসরীন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মুহাম্মদ সামাদ ও কোষাধ্যক্ষ ড. মো. কামাল উদ্দীন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ঢাবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এনামউজ্জামান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, হল প্রভোস্ট, হাউজ টিউটর, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা সভা শুরুর আগে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে তৈরি করা 100yrs.du.ac.bd নামে একটি ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচিত হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে দুর্লভ পাণ্ডুুলিপি প্রদর্শিত হয়। ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কার্জন হল ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় বায়োমেডিকেল ফিজিকস ও টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি প্রদর্শিত হয়। ডিবেটিং সোসাইটির উদ্যোগে বিতর্ক প্রতিযোগিতা, বিকালে শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রের আয়োজনে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ, চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে চীনের ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ও শিশুদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও হলগুলোর উদ্যোগে ছিল দিনব্যাপী কর্মসূচি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads