• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
জগন্নাথে ভর্তির ‘সৃজনশীল’ পদ্ধতি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

জগন্নাথে ভর্তির ‘সৃজনশীল’ পদ্ধতি

# এমসিকিউ বাতিল, লিখতে হবে ৬টি প্রশ্নের উত্তর # পরীক্ষার দিন সকালে ছাপানো হবে প্রশ্নপত্র

  • অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
  • প্রকাশিত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮

এক অন্যরকম ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত আবার একটি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে থাকবে না কোনো ‘এমসিকিউ’ প্রশ্ন। উত্তরপত্র মূল্যায়ন করবেন ১৮ শিক্ষক। প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীকে বলা হবে- ‘তুমি এই বিষয়গুলোতে পড়তে পারবে’। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ঠিকঠাক পরিসংখ্যান জানা না গেলেও কয়েক লাখ পরীক্ষার্থী এতে অংশ নেবে। নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষার খবর জেনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কিছুটা দুশ্চিন্তায় থাকলেও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এই পদ্ধতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশে এই প্রথম কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, যে শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে পাস করেছে সে এখানেও উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা দেবে। সঙ্গে থাকবে দৈনন্দিন বিজ্ঞান। একইভাবে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানবিক বিষয়ে এবং বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাণিজ্য বিষয়ে পরীক্ষা দেবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একে ‘ভর্তির সৃজনশীল পদ্ধতি’ নাম দিয়েছে। উল্লেখ্য, দেশে এখন ৪০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। জগন্নাথ ছাড়া সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ পদ্ধতি আছে এবং ভর্তি পরীক্ষা হবে ইউনিটভিত্তিক।

জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অভিন্ন ভর্তির এই পদ্ধতি জগন্নাথে এবার সফল হলে আগামী বছর সবকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় তা বাস্তবায়ন করা যাবে। তিনি বলেন, পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্নপত্র ছাপানো হবে। প্রত্যেক বিভাগে ৬টি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীকে দৈনন্দিন বিজ্ঞান নামে সমসাময়িক ঘটনার উত্তর লিখতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষার নামে কেন আবার উচ্চ মাধ্যমিকের বিভাগভিত্তিক পরীক্ষা নিতে হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে জগন্নাথের উপাচার্য বলেন, আমরা ভর্তিতে কোনো পরীক্ষাই নিতে রাজি নই। তবু বেশ কিছু কারণে নিতে হচ্ছে। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলে দেখা যায় ‘এ-প্লাসের’ ছড়াছড়ি। এ কারণে একই সিলেবাস থেকে আমরা পরীক্ষা নেব তাদের মেধা যাচাই করার জন্য।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নতুন ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আক্তারুজ্জামান বলেন, এটি ভালো কি খারাপ তা আমার পক্ষে এখনই বলা সমীচীন হবে না। তবে আগামী বছর থেকে অর্থাৎ ২০১৯ সালের ভর্তি পরীক্ষায় বেশ কয়েকটি সংস্কার আনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদেরও ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ বাদ দিয়ে নতুন কোনো পদ্ধতি নিয়ে কাজ করতে হবে।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় যে পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছে তা যদি সফল হয়, তাহলে আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে আমরাও এটি ব্যবহার করতে পারব। আর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নতুন ভর্তি পদ্ধতিটি কেবল জগন্নাথের বিষয়। এখানে আমার কোনো মন্তব্য নেই।

জগন্নাথে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক দেবাশীষ ঘোষ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আমার মেয়ে কয়েক মাস ধরে কোচিং করছে। কোচিংয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে পড়ানো হয়েছে। কিন্তু এখন শুনছি নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে না। এই নিয়ে খানিকটা দুশ্চিন্তা হচ্ছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads