• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
প্রাথমিক শিক্ষায় এডিবি দেবে চার হাজার কোটি টাকা

প্রাথমিক শিক্ষা

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষায় এডিবি দেবে চার হাজার কোটি টাকা

ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির চতুর্থ পর্যায় (পিইডিপি-৪) বাস্তবায়নে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার এডিবির বোর্ড সভায় এ ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। সংস্থার সদর দফতর ফিলিপাইনের ম্যানিলা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ঋণ সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন পাওয়া প্রসঙ্গে এডিবির সামাজিক খাতবিষয়ক জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ জিন লং বলেন, ধারাবাহিক বিনিয়োগের পরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করার সক্ষমতা গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের শিক্ষা খাতের। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে গতি আনতে এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এডিবির পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থার অর্থায়নে প্রাথমিক শিক্ষার দক্ষতা আরো বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদনের পর জুলাই মাসের শুরু থেকে পিইডিপি-৪ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। কর্মসূচির আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ, ১ লাখ ৩৯ হাজার শিক্ষকের প্রশিক্ষণ, ৭১ হাজার ৮০৫টি ল্যাপটপ ক্রয়,  ৪০ হাজার শ্রেণিকক্ষ,  প্রধান শিক্ষকদের জন্য সাড়ে ১০ হাজার কক্ষ, ৭৮ হাজার ওয়াশ ব্লক, ৬৫ হাজার বিদ্যালয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা সরঞ্জাম সরবরাহ ও বঞ্চিত ১০ লাখ শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।

এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২৫ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। অবশিষ্ট ১২ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা বিদেশি সহায়তা হিসেবে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে বিশ্বব্যাংকসহ আট সংস্থা ও দেশ অর্থায়ন করবে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই সর্বোচ্চ ৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫০ কোটি ডলার ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করল এডিবি।

কর্মসূচিটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, ডিএফআইডি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, জিএসি (কানাডা), ডিএফএটি (অস্ট্রেলিয়া), জাইকা এবং ইউনিসেফ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এ ছাড়া অটিজম কম্পোনেন্টে ইউনেস্কো এবং ইউএসএইড কারিগরি সহযোগিতা দেবে।

কর্মসূচির উদ্দেশ্য সম্পর্কে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ এবং জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ (এসডিজি) অর্জনে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। এসব লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখেই পিইডিপি-৪ প্রণয়ন করা হয়েছে।

এডিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি প্রাথমিক শিক্ষার দ্রুত বিস্তার। ২০০০ সালের পর এ পর্যন্ত বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। নিশ্চিত হয়েছে সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষায় দেশটির অন্তর্ভুক্তির হার ৯৮ শতাংশ। দেশটির প্রাথমিক শিক্ষার দক্ষতায়ও উন্নতি হয়েছে।

তবে এতদসত্ত্বেও বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান ও সক্ষমতায় আরো অগ্রগতি প্রয়োজন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ২০১৫ সালে তৃতীয় শ্রেণির নেওয়া সমীক্ষা অনুযায়ী অন্তত ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর বাংলা ভাষায় দক্ষতা বাড়ানো প্রয়োজন। আর গণিতে কাঙ্ক্ষিত মানের দক্ষতা নেই ৬১ শতাংশ শিক্ষার্থীর। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় দেশের অনেক এলাকায় শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিক্ষা সুবিধাবঞ্চিত  প্রায় ২৫ লাখ শিশু। পিইডিপি-৪-এর আওতায় এ সব শিশুকে শিক্ষাসেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads