• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
জাবিতে সিন্ডিকেট বৈঠক নিয়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি)

সংরক্ষিত ছবি

শিক্ষা

জাবিতে সিন্ডিকেট বৈঠক নিয়ে দুই পক্ষের ধস্তাধস্তি

  • জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৮

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সিন্ডিকেট বৈঠক চলাকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামপন্থি ও সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থি শিক্ষকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সিন্ডিকেট কক্ষের প্রবেশমুখে গতকাল বুধবার বিকাল ৪টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে শরীফপন্থি ৪ জন সিন্ডিকেট সদস্য সভাকক্ষ ত্যাগ করে বৈঠকের প্রতি অনাস্থা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী বিকাল ৪টায় সিন্ডিকেট সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেয়াদোত্তীর্ণ সিন্ডিকেট ও ডিন নির্বাচন না দিয়ে কোনো নিয়োগ না দেওয়ার দাবি নিয়ে উপাচার্যবিরোধী আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একটি অংশ বিকাল ৪টায় উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় উপাচার্যপন্থি শিক্ষকরাও সভাকক্ষের সামনে অবস্থান নেন। বিকাল সোয়া ৪টায় কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী সভায় যোগ দেওয়ার জন্য আসলে তাকে সভায় যোগ না দিতে অনুরোধ করেন উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকরা। তবুও মোতাহার হোসেন সভায় ঢুকতে গেলে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকরা তার পথরোধ করেন। এ সময় উভয় পক্ষের শিক্ষকরা ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন। কয়েক মিনিট ধরে এটি চলতে থাকে।

পরে সংবাদ সম্মেলনে শরীফপন্থি শিক্ষকরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। উপাচার্যবিরোধী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, আজকে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি অনভিপ্রেত। আমরা দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। উপাচার্যের শিক্ষকরা এখানে অবস্থান নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন।

সম্মেলনে সিন্ডিকেট সদস্য ড. নাজমুল হাসান তালুদার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মাসে নিয়মিত সিন্ডিকেট বৈঠক হওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় ১ বছর ৩ মাস পর এ বৈঠক আহ্বান করে উপাচার্য তার অনুগত সিন্ডিকেট সদস্যদের দিয়ে বৈঠক শুরু করেন।

এ সময় শরীফপন্থি শিক্ষক হোসনে আরা বলেন, একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ৬ মাস পর্যন্ত কার্যকর থাকে। ৬ মাস পর সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অবৈধ হয়ে যায়। উপাচার্য আজকের বৈঠকে নিয়ম অমান্য করে ২০১৫ সালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করে নিয়োগ দিচ্ছেন, যা রীতিমতো অন্যায়। তিনি আরো বলেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী কাউকে নিয়োগ দিতে গেলে নতুনভাবে কিছু ধাপ পূরণ করতে হয়। কিন্তু আজকে সেই নিয়ম অমান্য করে পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী নিযোগ দেওয়া হচ্ছে, যা অবৈধ।

শরীফপন্থি শিক্ষকদের দাবি, কয়েক দিন ধরে পূর্বের নিয়োগগুলো স্থায়ী করার আগে নতুনভাবে যেন কোনো নিয়োগ দেওয়া না হয় সে জন্য উপাচার্যের কাছে দাবি করে আসছেন তারা। সেই সঙ্গে জাকসু নির্বাচনসহ অন্যান্য ইস্যু নিয়েও দাবি জানিয়েছেন শরীফপন্থি শিক্ষকরা। উপাচার্য এসব বিষয়ে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা গতকাল ভঙ্গ করেছেন বলে দাবি শিক্ষকদের।

এ ছাড়া এর আগে সিন্ডিকেট বৈঠক শুরু হতো সকল সদস্যদের উপস্থিত থাকা সাপেক্ষে। কিন্তু গতকাল সদস্যরা উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও উপাচার্য তার অনুগতদের দিয়ে সিন্ডিকেট বৈঠক শুরু করেন যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

‘প্রশাসন সিন্ডিকেট সদস্যদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট কক্ষের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে যে সভা করছেন তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে’ দাবি শরীফপন্থি শিক্ষকদের।

এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। এদিকে উপাচার্য ভবনের সামনে বিভাগ উন্নয়ন ফি বাতিলের দাবিতে প্রতিশীল ছাত্রজোটকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads