• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
শিক্ষক হতে চায় সৌরভ

সৌরভ দাস

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

ক্যারিয়ার ভাবনা

শিক্ষক হতে চায় সৌরভ

  • মো. শফিকুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ১২ নভেম্বর ২০১৮

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ দাস। ক্যাম্পাসের সবার কাছে অতি পরিচিত মুখ। চতুর্থ বর্ষে পড়া হাস্যোজ্জ্বল চেহারার এই ছেলেটিকে ছোট-বড় সবাই চেনে ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সারাক্ষণ আড্ডায় মেতে থাকলেও জীবনের লক্ষ্য সম্পর্কে ভুলে যায় না কখনো। শিক্ষার আলো তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চায় বলেই সৌরভ ক্যারিয়ার হিসেবে নির্ধারণ করেছেন শিক্ষকতাকে। তার ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার ভাবনা ও স্বপ্ন সম্পর্কে জানাচ্ছেন মো. শফিকুল ইসলাম-

নিজের ক্যারিয়ার ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সৌরভ বলেন, ক্যারিয়ার মানে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সচিব, ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা কোনো উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হওয়া অনেকের কাছে। কিন্তু আমার কাছে এটা নিতান্তই একটি ভুল ধারণা। আমার কাছে ক্যারিয়ার মানে হলো সফলভাবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন। আর জীবনের সেই লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছি শিক্ষকতা পেশা। স্কুলজীবন থেকেই স্বপ্ন দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হওয়ার।

আমার বাবা মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। মাও শিক্ষকতা পেশায় আছেন। বিশেষ করে পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য শিক্ষকতা পেশায় জড়িত থাকায় সেই ছোট্টবেলা থেকেই শিক্ষকতা পেশার প্রতি আলাদা একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। এক ধরনের টান অনুভব করতাম। স্কুলজীবনে ক্লাসে ভালো ছাত্রদের কাতারে থাকায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল বন্ধুরা বিভিন্ন বিষয় বুঝতে আসত। তখন থেকেই অনুভব করি, তাদের পড়া বোঝাতে বেশ ভালোই লাগছে আমার। কিন্তু জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং ক্যারিয়ার নির্বাচন করার জন্য বয়সটা খুব কম ছিল। এরপর কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় জীবনেও চলে একই অবস্থা। সময়ের ব্যবধানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণ বদলেছে, কিন্তু অনুভূতিটা সেই একই রয়ে গেছে। সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব, জুনিয়রদের পড়াতে কিংবা প্রিফেক্ট হিসেবে ক্লাস নেওয়াটা অনেক ভালো লাগার অনুভূতির সৃষ্টি করেছে। জুনিয়রদের শ্রদ্ধাবোধ আমাকে আরো বেশি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। আর এর থেকেই আমি ক্যারিয়ার হিসেবে নির্বাচন করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক।

তবে শুধু লক্ষ্য নির্ধারণই তো আর সবকিছু নয়। লক্ষ্য পূরণের জন্য চাই যথাযথ পরিকল্পনা, পরিশ্রম এবং সাধ্যের সমন্বয়। তাই তো শুধু ক্যারিয়ার নির্ধারণ করেই বসে নেই। নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক। আমার মতে, শিক্ষক হতে হলে প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে সুগভীর ও সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন। আর তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি সেমিস্টারের সব কোর্সের একেবারে গভীর পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।

সৌরভ এটাও মানে, সবসময় একজন আদর্শ ও যোগ্য শিক্ষক হতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতা আর বিশেষ গুণ থাকতে হবে। তিনি বলেন, একজন আদর্শ ও যোগ্য শিক্ষকের অবশ্যই থাকতে হবে গবেষণা করার মনোভাব। সেই মনোভাব থেকেই ফাইনাল ইয়ারে ইন্টার্নশিপ না করে থিসিস করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। Brain Computer Interface (BCI) ডোমেইনের ওপর থিসিস করেছি। চেষ্টা করছি গবেষণালব্ধ ফল প্রসিদ্ধ জার্নালগুলো কিংবা পত্রিকায় প্রকাশ করার।

দেশের গ্র্যাজুয়েশন শেষে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম পছন্দ। তার জন্য নিজেকে পুরোপুরি তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা অস্ট্রেলিয়ার প্রসিদ্ধ কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপে মাস্টার্স এবং পিএইচডি সম্পন্ন করার আশা করছি। অনেকের আবার স্বপ্ন থাকে স্কলারশিপে বিদেশে গিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস এবং আয়েশের জীবন উপভোগ করা। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও আমি উচ্চশিক্ষা শেষে নিজ দেশে ফিরে এসে নিজের মেধা ও যোগ্যতা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করতে চাই।

এই দেশ অনেক কিছু দিয়েছে আমাকে। এই দেশের প্রতি কিছু করার দায়বদ্ধতা হিসেবেই সারাজীবনের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমার অনুজ প্রজন্ম তথা ভবিষ্যতে দেশের হাল ধরার নাবিকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়াকে। আশা রাখছি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপা, পিতামাতা ও শিক্ষকদের আশীর্বাদ এবং আমার পরিকল্পনা ও অধ্যবসায় আমাকে সেই সাফল্যের চূড়ায় অবশ্যই নিয়ে যাবে একদিন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads