• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

শিক্ষা

বুধবার দেশব্যাপী ক্লাস বর্জনের ডাক শিক্ষার্থীদের

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৯ মার্চ ২০১৯

সড়ক দুর্ঘটনায় সহপাঠী নিহত হওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবার রাজধানীর বিশ্বরোড এলাকায় আন্দোলনে নামা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা তাদের আট দফা দাবি আদায়ে বুধবার দেশব্যাপী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জনের ডাক দিয়েছেন। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় দায়ী বাস চালকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা।

শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায়ে তারা বুধবার সকালে প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরা গেটের কাছে অবস্থান নেবেন। সেই সাথে তারা দাবিগুলোর সাথে সংহতি প্রকাশ করতে দেশের সব শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার জেরে শিক্ষার্থীদের করা সড়ক অবরোধ বিকালে তুলে নেয়ার পর একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মাইশা নুর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

‘আমাদের আন্দোলন বুধবার সকাল থেকে চলবে। আমরা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বুধবার ক্লাস বর্জন এবং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়ে আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার আহ্বান জানাই,’ বলেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে ‘সুপ্রভাত পরিবহনের’ একটি বাসের ধাক্কায় নিহত হন বিইউপি শিক্ষার্থী আবরার। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার বসুন্ধরা এলাকার বাসিন্দা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহমেদ চৌধুরীর ছেলে। গুলশান থানার এসআই জাহাঙ্গীর জানান, সকাল ৭টা ১৫ মিনিটের দিকে বাসটি আবরারকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইনডেপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অন্যরা যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ভাটারা পর্যন্ত সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ঘটনার পরই গ্রেপ্তার হওয়া বাস চালকের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বাস চালকের সর্বোচ্চ শাস্তির পাশাপাশি ওই এলাকায় একটি পদচারী সেতু নির্মাণের দাবি জানান। মেয়র তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেন।

বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা আটক বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে স্থানীয়রা আগুন নেভায়।

মাইশা নুর বলেন, তাদের আন্দোলন গত বছরের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ধারাবাহিক রূপ এবং দাবি না মানা পর্যন্ত তা চলবে। সেই সাথে তিনি আন্দোলন চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে তাদের নিরাপত্তা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তারা গত বছরের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো এবার কোনো রক্তারক্তি দেখতে চান না।

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়মিতভাবে পরীক্ষা, পরিবহন খাতকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করা, ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় পদচারী সেতু ও স্পিড ব্রেকার নির্মাণ এবং অনুপযোগী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা।

এ আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয় উল্লেখ করে বিইউপির শিক্ষার্থীরা জানান, তারা এতে কোনো রাজনৈতিক দলকে যোগ দিতে দেবেন না। সেই সাথে তারা শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র নিয়ে আন্দোলনে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি নুরুল হক নূর বিকালে শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়েছেন। তিনি বিকাল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে যান এবং তাদের সাথে সংহতি জানান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads