• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
চবিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ

চবিতে পুলিশের অ্যাকশন

ছবি: বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

চবিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ

  • চবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৭ এপ্রিল ২০১৯

ছাত্রলীগের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। ছাত্রলীগ কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান, রাবার বুলেট ও প্রায় ২৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এ সংঘর্ষ বেলা ১১টা ৩০ থেকে শুরু হয়ে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আসে দুপুর ১টায়।

এ সংঘর্ষে পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়। ছাত্রলীগের দাবী সংঘর্ষে ২০ থেকে ২৫জন ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়েছে। এছাড়াও ডিবি পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এসময় বেশ কয়েকজন কর্মীকে আটক করা হয়।

আজ রোববার সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায় শাখা ছাত্রলীগের আটককৃত ৬ নেতাকর্মীর মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা দিয়ে অবস্থান করে এবং ষোলশহরে স্টেশন থেকে শাটল ট্রেনের লোকো মাস্টারকে অপহরণ করে পরে ছেড়ে দেয়। এর আগে তারা ট্রেনের হোসপাইপ কেটে দেয়। সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ জলকামান নিয়ে আসলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা স্থানত্যাগ না করলে পৌনে ১২টার দিকে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

এ সময় ছাত্রলীগের বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে। একইসঙ্গে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

এর আগে, গত ৩১ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক দুই গ্রুপ বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ারের (সিএফসি) মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের ৬ নেতাকর্মীকে আটক পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার পুলিশ বাদী হয়ে আটক ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে অস্ত্র মামলা করে।

অস্ত্রসহ আটকের কথা অস্বীকার করে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি, এই প্রশাসনের সময়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার, প্রক্টরের পদত্যাগ এবং হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দীন জাহাঙ্গীরের অপসারণ দাবি করে আজ যৌথভাবে বিক্ষোভ করে পক্ষদুটি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলে অবস্থানরত সকল বাসের চাকা অকেজো করে দেওয়া হয় ও সকল অনুষদের প্রধান ফটকগুলোতে সুপার গ্লু দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে রিকশা, সিএনজিসহ সকল ধরণের গাড়ি চলাচল ও দোকানপাট বন্ধ ছিল।

ঘটনা পরবর্তী ব্রিফিংয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জানান, তাদের নামে যে অস্ত্রমামলা হয়েছে বলা হচ্ছে সেটা আসলে দেশীয় অস্ত্রের মামলা, আগ্নেয়াস্ত্র নয়। আগ্নেয়াস্ত্র মামলা হয়েছে বলে তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই মামলায় তাদের ছাত্রত্ব হুমকির মুখে পড়বে না। পুলিশ বাদী হয়ে যে মামলা করেছে সেটা তাদের জন্যই করেছে। তাদের দাবি অবশ্যই যৌক্তিক। তাহলে তারা আমাদের কাছে আসুক, আলোচনা করুক। তারা সেটা করেনি। এ ধরণের পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন কীভাবে নির্বিকার থাকবে। তারা অহিংস আন্দোলন করবে বললেও বিভিন্ন উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড করেছে।

এ বিষয়ে উত্তর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা বলেন, আমরা তাদের সমস্ত দাবি মেনে নিতে প্রস্তুত ছিলাম। নেতাদের সঙ্গে কথাও হয়েছিল। কিন্তু তারা আন্দোলন অহিংস রাখেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিস্কৃত উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্রের উস্কানীতে এ ঘটনা ঘটে। তারা পুলিশের সাথে হাতাহাতি করে ঝামেলা বাঁধায়।

শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি সুজন বলেন, এটা আমাদের ন্যায্য দাবি। প্রশাসন আমাদের এই দাবি মেনে নিয়েছে। কিন্তু সংগঠনের ভেতর লুকিয়ে থাকা কিছু দুষ্কৃতিকারী এই অপকর্ম ঘটিয়েছে। এদের দায়ভার আমি এবং আমার সংগঠন নিবে না। আমি চাই প্রশাসন এদের খুজে বের করে এদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads