• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
স্কুল-মাদরাসায় চালু হচ্ছে যৌনশিক্ষা

ফাইল ছবি

শিক্ষা

স্কুল-মাদরাসায় চালু হচ্ছে যৌনশিক্ষা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ আগস্ট ২০১৯

দেশে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল ও মাদরাসা) ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’ কার্যক্রম চালু হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমে পরিচালিত ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পের আওতায় এই কার্যক্রম চালু করবে সরকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ধর্মভিত্তিক একাধিক মহলের বিরোধিতার পরও শেষ পর্যন্ত যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে ওঠা ‘সবার জন্য জেন্ডার সমতা (জেমস) কর্নার’ বা ‘কিশোর-কিশোরী কর্নার’-এ খেলাধুলার মাধ্যমে স্কুল ও মাদরাসায় এই শিক্ষা নিচ্ছে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীরা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমে পরিচালিত ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও সংশ্লিষ্ট অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের উদ্যোগেই এই কার্যক্রম এখনো চলছে।

মাউশি সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচিতে ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা’ অন্তর্ভুক্ত করা হলেও শুরুতে স্কুল ও মাদরাসায় তা ঠিকমতো পড়ানো যাচ্ছিল না। শিক্ষকরাই ছিলেন অস্বস্তিতে। এ অবস্থায় ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ নামে একটি প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। ২০১৪ সালে মাউশি এ প্রকল্প চালু করে। শিক্ষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখে দেশের ৬০টি মাদরাসাসহ ৩৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) অর্থায়ন করে। বেসরকারি সংস্থা কনসার্ন উইমেন ফর ডেভেলপমেন্ট (সিডব্লিউএফডি) এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে মাউশি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বছর শুরু হওয়া ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপ শেষ হবে ২০২২ সালে। এ পর্যায়ে জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, পটুয়াখালী ও রাঙামাটি জেলায় ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের যৌন, প্রজনন-স্বাস্থ্যশিক্ষা দেওয়া হবে। প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের অর্থায়ন করবে কানাডা।

প্রকল্পের প্রথম ধাপ ঢাকা মহানগরের ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পটুয়াখালী, বরগুনা, বরিশাল শহরের মোট ৩৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে সফলভাবে। এর মধ্যে ৫০টি মাদরাসাও ছিল। এ বছরই প্রকল্পের প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ হয়। এ ধাপে প্রকল্পভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারজন করে মোট এক হাজার ৪০০ শিক্ষককে ৫ দিনের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আর প্রধান শিক্ষকরা অর্ধদিবস প্রশিক্ষণ নেন।

রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বলেন, ‘জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই আবারো এটি চালু করা প্রয়োজন। একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক মনি দ্বীপা রায় চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যেমন আগ্রহ বেড়েছে। অভিভাবকদের আগ্রহও অনেক বেশি। এই প্রকল্প যেন চলে, আরো শিক্ষার্থীদের যেন এতে যুক্ত করতে পারি।’ যাত্রাবাড়ী থানার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক আবদুস সোবহান বলেন, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল ধারণা এবং শিক্ষকদের অস্বস্তি দূর হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক ও মাউশির পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষার বিষয়ে জেনারেশন ব্রেক থ্রু’ প্রকল্পটি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চালু ছিল। প্রকল্পটির মেয়াদ সফলভাবে শেষ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো নিজ উদ্যোগে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যশিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকল্পটির সফলতার কারণে এবার সারা দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে এর আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।’ ড. হোসেন আরো বলেন, জেনারেশন ব্রেক থ্রু প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হচ্ছে এ বছর থেকে। এবার নতুন করে যুক্ত হচ্ছে দেশের পাঁচটি জেলার ২৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই লাখ সাত হাজার ৫২ জন শিক্ষার্থী।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads