• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

শিক্ষা

জবিতে আবরার হত্যার প্রতিবাদ করায় ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৬

  • জবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৯ অক্টোবর ২০১৯

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিলে নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। এতে সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান নাহিদ, যুগ্ম সম্পাদক আলি হাওলাদার, মিজানুর রহমান শরীফ ও জাহিদসহ দুইজন আহত হয়। এ ঘটনায় জবি ছাত্রদলের দুইজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং অন্যদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন, ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক আলী হাওলাদার ও ছাত্রদল কর্মী জাহিদ।

আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় সমবেত হয় এবং সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে আবরার হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি নিয়ে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহীদ মিনারের সামনে আসলে পেছন থেকে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় জবি আলী হাওলাদার ও জাহিদকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়াও জবি ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান নাহিদকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং যুগ্ম-সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফকে সুমনা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জবি ছাত্রদল সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই আবরারকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নির্দেশে এই হত্যার প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ আমাদের উপরে হামলা করেছে এবং পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ছাত্রদল হামলা মামলাকে ভয় পায়না। ছাত্রদল রাজপথে থেকেই এর জবাব দিবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমরা ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসবো। এতে কেউ বা‍ঁধা দিলে এর জবাব ক্যাম্পাসেই দেয়া হবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে জবি প্রক্টর ড. মোস্তফা কামালকে বারবার ফোন দিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মারামারি হচ্ছিলো আমরা গিয়ে দুইজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। তাদের আটক করা হয়নি তারা আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আমরা যাচাই-বাচাই করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিব।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বেলা ১০.৩০ মিনিটে নটরডেমিয়ান সোসাইটি অব জবি, বেলা ১১.৩০ মিনিটে সাধারন শিক্ষার্থীবৃন্দ, বেলা ১২ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাক্তন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে।

এসময় মানববন্ধনে আবরার হত্যার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগানের প্লে-কার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধনে বক্তারা এমন নৃশংসতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বুয়েট উপাচার্য ও বুয়েট প্রশাসনের তীব্র নিন্দা করা হয়।

বেলা ১১.৩০ মিনিটে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে আবরার হত্যায় জড়িতদের দ্রুত শাস্থির দাবি জানানো হয়। মানববন্ধন শেষে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।

বেলা ১২ টায় শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদের সঞ্চালনায় বক্তারা আবরার ফাহাদ কে হত্যার প্রতিবাদ জানায় এবং হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads