• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
জাবিতে আন্দোলন-ধর্মঘটে প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

জাবিতে আন্দোলন-ধর্মঘটে প্রশাসনিক কার্যক্রমে অচলাবস্থা

  • শাহিনুর রহমান শাহিন, জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ নভেম্বর ২০১৯

দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারন দাবিতে টানা ৭ম দিনের অবরোধ-ধর্মঘট চলছে। এতে অচল হয়ে পড়েছে সকল প্রকার প্রশাসনিক কার্যক্রম। রুটিনমাফিক প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। সর্বশেষ রবিবার সকালে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস বন্ধ করে দেয় আন্দোলনকারীরা। এতে পুরোপুরি প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে রুটিনমাফিক ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হলেও কয়েকটি বিভাগে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছেন বলে দেখা গেছে।

এদিকে আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে উপাচার্যকে তার বাসভবনে যেকোনো সময় অবরুদ্ধ করার পরিকল্পনাও আন্দোলনকারীদের রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। অন্যদিকে উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করা ঠেকাতে ইতিমধ্যে দফায় দফায় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের তার বাসভবনে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। এমন অবস্থায় ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ইতিহাস বিভাগের মার্স্টাসে অধ্যয়নরত একজন ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা আতঙ্কিত। ক্যাম্পাসে এখন ঘৃণার রাজনীতি চলছে। ভিসি ম্যাডাম যদি সত্যি দুর্নীতি করে থাকেন তবে তাকে দ্রুত পদত্যাগ করে ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি রক্ষা করা উচিত। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের শিক্ষকদের কাদা ছোড়াছুঁড়ি দেখে তিরস্কার করছে।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক মনে করছি। কেননা ভিসি ছাত্রলীগকে টাকা দিয়ে দুর্নীতি করেছেন তার প্রমাণ ছাত্রলীগ নেতারা টাকা নেওয়ার বিষয়টি মিডিয়ায় স্বীকার করেছেন। এরপরেও কীভাবে ম্যাডাম তর মসনদে বসে আছেন?

বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। শিক্ষকরা কে কার মান ক্ষুন্ন করবে, কে কার অতীতের ফিরিস্তি বের করবেন তাই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

রসায়নের বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদী সেশনজটের আশঙ্কা দেখছি।

এদিকে, সহকারী প্রক্টরের ওপর হামলার অভিযোগে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাত মামলা করায় আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। এ নিয়ে এক পক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করে বিবৃতি দিচ্ছে। উভয়পক্ষের নমনীয় মনমানসিকতা বজায় রাখা গেলে ক্যাম্পাসের সংকটে দ্রুত কাটিয়ে উঠবে বলেও মত দিয়েছেন অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা' অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং উন্নয়নের পক্ষে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে সংকট নিরসনের জন্য ইতিমধ্যে পুরাতন প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন' উপাচার্য অপসারন' মঞ্চে একাধিকবার গিয়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব দিলেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের অপসারন না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে আজ রোববারও সকাল থেকে পুরাতন ও নতুন প্রশাসনিক ভবন এবং বিভিন্ন একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন "দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর" ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১২ টা ও সন্ধ্যা ৬ টায় উপাচার্যের অপসারনের দাবিতে মানববন্ধনও করেন তারা। অন্যদিকে উপাচার্যপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তাবৃন্দ এই আন্দোলনকে অযোক্তিক আখ্যা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকে গতিশীল করতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে আসছে। এমতাবস্থায় জাহাঙ্গীরনগরের ভবিষ্যত দিয়ে হতাশ ক্যাম্পাসের স্টেকহোল্ডাররা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads