• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ভুয়া শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে স্কুল টিকিয়ে রাখার চেষ্টা

রতনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোচালা ঘরের চাল পড়ে রয়েছে মাটিতে

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

শিক্ষা

ভুয়া শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দিয়ে স্কুল টিকিয়ে রাখার চেষ্টা

  • প্রকাশিত ২২ নভেম্বর ২০১৯

রৌমারী প্রতিনিধি:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও চলতি (পিইসি) প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় রতনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে ৩ জন ভুয়া শিক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের গোপন তথ্য ফাঁস হওয়ায় কেউ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেনি। একই বিদ্যালয়ের হয়ে একাধিকবার পিইসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এসব কাগজ-কলমে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবের সাথে পুরোটাই ভিন্ন। উপজেলা শিক্ষা প্রশাসনের বিষয়টি জানা নেই, তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের নামে কোন সাইনবোর্ড নেই, আছে একটি দোচালা ঘর তা আবার মাটিতে চাল পড়ে রয়েছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘরের চালা মাঠিতে পড়ে থাকলেও নেই কোন কক্ষ বা ব্রেঞ্চ, টেবিল, চেয়ার কিংবা পাঠদানের উপকরণ।

কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায় প্রতিষ্ঠানের নাম দেখিয়ে চলতি পরীক্ষায় ৩ জন পরীক্ষার্থীর নাম থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। তারা হচ্ছে ৩০৯৪ নং রোলের পরীক্ষার্থী কামরুল ইসলাম, ৩০৯৫ নং রোলের নয়ন মিয়া ও ৩০৯৬ নং রোলের শিরি খাতুন।

এ সম্পর্কে কলাবাড়ী বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘রতনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে পরীক্ষার্থী ৩ জনের নাম থাকলেও তারা অনুপস্থিত রয়েছে। তারা পিইসির পরীক্ষায় প্রথম দিন থেকেই অংশ নেয়নি।

মশিউর, আব্দুর রউফ, শহিদুল ইসলাম, হাকিম. ফজলুল হক (বদ্দে) নামের স্থানীয়রা জানান, ‘প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে রতনপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ক্লাস বন্ধ রয়েছে। ইতিপূর্বে যারা পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল তারা অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। উপজেলা শিক্ষা প্রশাসন বিষয়টি জানলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি এখন পর্যন্ত ।’

রতপুর বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোল্লা বলেন, ‘কেন একটা প্রতিষ্ঠান হোক এটা আপনাদের সমস্যা কোথায়। তবে নিয়ম ও অনিয়ম হোক প্রতিষ্ঠানতো করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীর বিবরণীতে তিনি আরো বলেন, তিন জন পরীক্ষার্থীরা আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকের ছেলে মেয়ে।’

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে যাননি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেয়া রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের দিয়ে পিইসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার অভিযোগও রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা হলো রায়হান মিয়া, আজিজুর রহমান, আমিরুল ইসলাম, খাদিজা বেগম, মনোয়ারা বেগম, মিনারা খাতুন, লিমন মিয়া ও সোহেল রানা। এর মধ্যে ৫ জন জেডিসি পরিক্ষায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে ৩ জন সপ্তম শ্রেণী শিক্ষার্থী ছিল। ওই ৮ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলাকালে সময়ে জানতে পারে তাদের গোপন তথ্য ফাঁস হলে ভুয়া পরীক্ষার্থীরা তখন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল ইমরান জানান, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads