• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
এক টাকাও ব্যয় হয়নি মাতারবাড়ী মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইন প্রকল্পে

ছবি: সংগৃহীত

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আইএমইডির প্রতিবেদন

এক টাকাও ব্যয় হয়নি মাতারবাড়ী মদুনাঘাট সঞ্চালন লাইন প্রকল্পে

  • জাহিদুল ইসলাম
  • প্রকাশিত ১২ আগস্ট ২০১৮

২০২১ সালের মধ্যে সারা দেশে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে প্রায় তিন লাখ কিলোমিটার বিতরণ লাইনের কাজ চলছে। আর বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতেও নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু বড় প্রকল্প। বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাড়ছে না সঞ্চালন সক্ষমতা। কক্সবাজারের মহেশখালীতে ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে পাওয়ার হাব স্থাপনের প্রাথমিক কাজ চলছে। একই এলাকার মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। গুরুত্বপূর্ণ এ এলাকা থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যোগ করতে নেওয়া প্রকল্পে বিরাজ করছে চরম অব্যবস্থাপনা। এ বিষয়ে নেওয়া প্রকল্পে এক বছরের মধ্যে একটি টাকাও ব্যয় হয়নি বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক পরিদর্শনে উঠে এসেছে।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্পের পিজিসিবি অংশ তথা মাতারবাড়ী মদুনঘাট ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছে আইএমইডি। পরিদর্শনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ে ১ হাজার ৯০ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় ধরে প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৯৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ হবে। জুন মাস পর্যন্ত এর আওতায় একটি পয়সাও ব্যয় হয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে মাতারবাড়ী থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে না বলে ধারণা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে।

এতে আরো বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করতে এখনো ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। এ লক্ষ্যে ২৪০টি টাওয়ার নির্মাণ করতে হবে। প্রতিটি টাওয়ারে প্রয়োজন হবে ১ কাঠা করে জমি। অধিগ্রহণ কাজে জমির মালিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বাধা আসতে পারে। এর ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কঠিন হতে পারে। জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত ক্ষতিপূণ দিয়ে অধিগ্রহণ কাজ ত্বরান্বিত করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটির কাজ শুরু করতে গত অর্থবছর ৪০ কোটি ৬৬ লাখ টাকার চাহিদা ছিল। বিপরীতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় এতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১ কোটি ১০ লাখ টাকা। কাজ শুরু না হওয়ায় সংশোধিত এডিপিতে (আরএডিপি) এর অনুকূলে বরাদ্দ নামিয়ে আনা হয় মাত্র ১ লাখ টাকায়। বছর শেষে এ অর্থও ব্যয় হয়নি। এবার ৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকা চাহিদা থাকলেও এডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ১৮০ কোটি টাকা।

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে প্রকল্পের পরিচালকের (পিডি) দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে পরিদর্শন প্রতিবেদনে। প্রকল্পে অর্থায়নে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর (এমটিবিএফ) আওতায় বিদ্যুৎ বিভাগে পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার তাগিদও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

সূত্র জানায়, মাতারবাড়ীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ২০১৫ সালের আগস্টে প্রকল্প অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এই প্রকল্পে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা দেবে। বাকি টাকা দেবে সরকার। মহেশখালীর মাতারবাড়ী ও ঢালঘাটা ইউনিয়নের এক হাজার ৪১৪ একর জমিতে হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ প্রকল্পে ৪ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অগ্রগতির হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে কয়লা ও আমদানি করা তরল গ্যাসনির্ভর ৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এসব কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১৩ হাজার ৫৬০ মেগাওয়াট। এসব কেন্দ্রের জন্য ৫ হাজার ৫৮০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads