• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

চলতি মাসেই উৎপাদন শুরু পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে

  • মো. রেজাউর রহিম
  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০১৯

দেশে বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে নির্মিত হচ্ছে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। চলতি মাসেই এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছে বলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উপাদন হবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটের মাধ্যমে উৎপাদিত হবে বিদ্যুৎ। এর মধ্যে এ বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন পূর্ণাঙ্গভাবে শুরু হবে। প্রথম ইউনিটের মাধ্যমে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে আশা করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদন আগামী ২০২০ সালের ডিসেম্বর নাগাদ শুরু হবে। আর প্রথম ইউনিটে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন আগামী ১৫ অক্টোবর শুরু হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক শাহ আবদুল মওলা বলেন, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হওয়ার পথে। এজন্য আগামী ১৫ অক্টোবর পরীক্ষামূলকভাবে এ কেন্দ্রে উৎপাদন শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পায়রা সমুদ্রবন্দর পুরোপুরি ব্যবহারের জন্য এখনো প্রস্তুত না হওয়ায় এবং সংশ্লিষ্ট নৌপথের নাব্য সংকটের কারণে পরিবহন ও আমদানি খরচ কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

জানা গেছে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ ও উৎপাদনের কাজ করছে বাংলাদেশ-চীন পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)। মূলত আমদানীকৃত কয়লার মাধ্যমে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদনকাজ পরিচালনা করা হবে। এদিকে, উৎপাদন শুরু হওয়ার আগেই এ কেন্দ্রের জ্বালানির উৎস কয়লা পরিবহনে স্থানীয় নৌপথের বিদ্যমান নাব্য সংকট নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। পায়রা বন্দর ও আশপাশের এলাকার নৌপথের নাব্য সংকটের বিষয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলাদেশের খবরকে জানান, সরকার ২০২১ সাল নাগাদ পটুয়াখালীতে পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বন্দরের নৌপথের নাব্য সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্ম এবং জাহাজ আসা-যাওয়ার জন্য আগামী দুই বছরের মধ্যে নদীর নাব্য বৃদ্ধির জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।  

জানা গেছে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি এ বছরে ৪০ লাখ টন কয়লা আমদানি করবে। ইন্দোনেশিয়ার পিটি বায়ান রিসোর্সেস টিবিকে নামের প্রতিষ্ঠান পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা সরবরাহ করবে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ টাকা। তবে কয়লা আমদানি বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহের জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর কয়লাবাহী জাহাজ এমভি জিন হাইটং-৮ কেন্দ্রের জেটিতে নোঙর করেছে। এ জাহাজটি পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বালিকপানান বন্দর থেকে ২০ হাজার টন কয়লা নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিপূর্ণভাবে চালু হলে দেশে বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা অনেকাংশে মেটানো সম্ভব হবে। ন্যাশনাল গ্রিডে এ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হলে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করেন তারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads