• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কার বিদ্যুৎ কে কিনবে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৯

বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। ফলে সরকার চাচ্ছে এই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে। বাজার হিসাবে বাংলাদেশের প্রথম পছন্দ প্রতিবেশী দেশ ভারত। অন্যদিকে ভারত সরকারও চাইছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে। এমন অবস্থায় কার বিদ্যুৎ কে কিনবে সেই প্রশ্ন বারবার ঘুরছে।  জনমনে প্রশ্ন, বিদ্যুৎ তুমি কার?

এ প্রসঙ্গে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, ভারত তো আগে থেকেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দিচ্ছে। এবার আমরা চাচ্ছি আমাদের বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতকে দিতে। এ জন্য দুই দেশের যৌথ স্টিয়ারিং কমিটিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে সম্ভাব্যতা দেখতে একটি কমিটি করা হয়েছে। তারা একটি রিপোর্ট দেবে, যা পরবর্তী মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে। সেখানেই এ বিষয়ে আবার আলোচনা হবে।

উল্লেখ্য, আগস্টের শেষদিকে ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সচিব পর্যায়ের বৈঠক হয় ঢাকায়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও সেই প্রস্তাবে কোন পয়েন্ট থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানি করা হবে এবং যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ রপ্তানির কথা বলা হচ্ছে সেখানে এর সংকট রয়েছে কি না-তা বৈঠকে উপস্থাপন করতে পারেনি বাংলাদেশ।

এই প্রস্তাবে ভারতের মনোভাব কী জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা শুধু প্রস্তাব দিয়েছি। এখনো ভারত এ বিষয়ে হ্যাঁ বা না কিছু বলেনি। কিংবা গত এক মাসেও ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চাইলেই তো আর সম্ভব নয়। ভারতের সঙ্গে আমাদের সঞ্চালন ব্যবস্থা কতটুকু উপযুক্ত, তাও বিবেচনা করতে হবে। ওই বৈঠকের কার্যপত্রে (ওয়ার্ক অর্ডার) দেখা গেছে, শীতের সময় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায়। সে সময়ে উৎপাদিত বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতে রপ্তানি করতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতে বিদ্যুৎ রপ্তানির সম্ভাব্য জায়গা চিহ্নিত করার অনুরোধ জানানো হয়।

ভারত বলেছে, বাংলাদেশ বাড়তি বিদ্যুৎ ভারতে রপ্তানি করতে পারবে। তবে তা তাদের বিদ্যুৎ আমদানি-রপ্তানির গাইডলাইন অনুযায়ী হতে হবে। ভারতের গাইডলাইন ফর এক্সপোর্ট/ইমপোর্ট (ক্রস বর্ডার) অব ইলেকট্রিসিটি ২০১৮ এবং সিইআরসি রেগুলেশন অব ক্রসবর্ডার ট্রেড অনুযায়ী, এই বিদ্যুৎ কিনতে পারে ভারত।

তবে ভারতের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির বিষয়ে বাংলাদেশও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব তৈরি করতে পারেনি। উল্টো পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বিক্রি করতে প্রস্তাব দিয়েছেন। ত্রিপুরাও বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চায়। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ভারত এসব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে।

এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের চাহিদার সময় নয়, সবসময় বিদ্যুৎ দিচ্ছে ভারত। ভালো হতো যদি চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ দিত। একই নিয়ম করা যেতে পারে ভারতের ক্ষেত্রেও। ভারতের যেখানে বিদ্যুৎ প্রয়োজন বাংলাদেশ নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বাড়তি বিদ্যুৎটুকু তাদের দিতেই পারে।

প্রসঙ্গত, এখন ভারত থেকে মোট এক হাজার ২৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। কুমিল্লা ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা দিয়ে এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads