• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
অভিযুক্ত এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি

সংরক্ষিত ছবি

কর্মসংস্থান

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার বন্ধ না হওয়ার দাবি মন্ত্রীর

অভিযুক্ত এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ আগস্ট ২০১৮

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়নি। জনশক্তি রফতানিতে নিয়োজিত বাংলাদেশের ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে শোকজ করবে সরকার। মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অনৈতিক ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগ করে দেশটির সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটের সঙ্গে মন্ত্রীর নিজের পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। শ্রমবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ওই মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রিপোর্টার্স ফর বাংলাদেশি মাইগ্রেন্টস (আরবিএম) নামের একটি সংগঠন।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ১৪ আগস্ট মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সভাপতিত্বে বিদেশি শ্রমিক ব্যবস্থাপনাবিষয়ক বিশেষ কমিটির বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। গত ২১ আগস্ট দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে জানায়, সে দেশের বিগত সরকার বাংলাদেশের যে ১০ রিক্রুটিং এজেন্সির মারফত শ্রমিক নিত, তাদের এসপিএ সিস্টেম ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাতিল হয়ে যাবে। এই ১০ এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এর সঙ্গে মালয়েশিয়ার আগের সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন মালয়েশিয়ান নাগরিকও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে বর্তমান পদ্ধতিতে আর কর্মী নেবে না তারা।

অভিযুক্ত বাংলাদেশি এজেন্সি ১০টি হলো ইউনিক ইস্টার্ন, ক্যারিয়ার ওভারসিজ, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল, এইচএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স, সানজারি ইন্টারন্যাশনাল, রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল, প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস, আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম ও আল ইসলাম ওভারসিজ।

মালয়েশিয়া সরকার তাদের পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে রাজি হওয়ার পর ২০১৬ সালে ঢাকায় দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি এ চুক্তির আওতায় লোক পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয় ওই ১০টি জনশক্তি রফতানিকারক এজেন্সিকে।

নুরুল ইসলাম বলেন, বাজার বন্ধের খবরটা সত্যি নয়। মালয়েশিয়ার লোকের দরকার। লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত পরিবর্তন করতে পারে।

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সরকার যেহেতু বাংলাদেশ সরকারকে কোনো কিছু আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি, তাই ধরে নিতে পারেন ১ সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না। বাজার বন্ধের বিষয়ে যে চিঠির কথা বলা হচ্ছে, তা দেশটির স্থানীয় রিক্রুটিং এজেন্ট সিনারফ্ল্যাক্সকে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একটি ‘ভারবাল নোট’ বা চিঠি দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই প্রকৃত অবস্থা জানা সম্ভব হবে। তবে কর্মী যাচ্ছে এবং বর্তমান পদ্ধতি বাতিল হলে ১ সেপ্টেম্বরের পর থেকে অটোমেটিক্যালি পুরোনো পদ্ধতিতে যাবে।

অভিযুক্ত ১০ এজেন্সির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১০ এজেন্সিকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করিনি। সিন্ডিকেটও আমাদের পক্ষ থেকে হয়নি। মালয়েশিয়ার সরকার ১০ এজেন্সিকে দিয়েছে, আমরা দিইনি। লিখিতভাবে আমাদের কাছে অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

সিন্ডিকেটের সঙ্গে নিজের পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, আমার পরিবারের কেউ ঢাকাতে আসেও না, ম্যানপাওয়ারের ব্যবসাও করে না।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ১ সেপ্টেম্বর থেকে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে নিয়োগ বন্ধ হলেও যেসব কর্মীর সত্যায়নসহ নিয়োগের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে, তারা মালয়েশিয়া যেতে পারবেন। এ ধরনের কর্মীর সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ হাজার।

সৌদি আরব থেকে নারী গৃহকর্মীদের দেশে ফেরা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভাষাগত ও খাবারের সমস্যার কারণেই তারা ফিরে আসছেন। তা ছাড়া দেশটিতে কর্মীর চাহিদা কমে গেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাজার খুলে গেলেও গেল চার মাসে কর্মী নিয়োগের কোনো চাহিদা বাংলাদেশে আসেনি। সে প্রসঙ্গেও কোনো সদুত্তর মন্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads