• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধ জাগ্রত হোক

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধ জাগ্রত হোক

  • আজহার মাহমুদ
  • প্রকাশিত ১৬ মার্চ ২০১৯

অনেক আগে থেকেই একটি কথা প্রচলিত আছে, অনেকটা প্রবাদ বাক্যের মতো— ‘বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ।’ কিন্তু সেই আবেগের সঙ্গে আজ এই একুশ শতকে এসে ভেসে গেছে মানবিকতা, সৌজন্যতা। সমাজ এবং দেশ যখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় ভাসছে, তখন অন্যপ্রান্তে ডুবে যাচ্ছে মানুষের সভ্যতা, শিষ্টাচার আর সৌজন্যবোধ। হারিয়ে যাচ্ছে নৈতিকতা, মানবতা sdfghfআর মনুষ্যত্ব। সমাজে এখন নেই ছোট-বড় পার্থক্য। নেই সম্মান আর স্নেহ। নেই গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি আর সৌজন্যবোধ। বলা যায় শিষ্টাচারিতার স্থানটি প্রায় লোপ পেয়ে যাচ্ছে দেchjশ ও সমাজ থেকে। আর এর জন্য অনেকটাই দায়ী বড়রা। একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় সে সমাজ ও পরিবারে যা দেখবে, তা-ই গ্রহণ করবে। আমার সন্তান খারাপ হচ্ছে মানে ভাবতে হবে আমারও কিছু সমস্যা রয়েছে। আমি গালি দিলে আমার সন্তান সেটা কেন শিখবে না? তাই বড়রা ঠিক হলে ছোটরা অনেকটাই পরিবর্তনের দিকে আসবে।

স্কুল-কলেজে শিক্ষকরা ক্লাসে প্রবেশ করলে দাঁড়িয়ে যাওয়াটা নিয়ম মনে করেই ছাত্ররা দাঁড়ায়। বাস্তবে সম্মান, শ্রদ্ধা এবং ভক্তি করে দাঁড়ানোর মানসিকতা ছাত্রদের মধ্যে জাগ্রত নেই। কারণ এ ধরনের শিক্ষা তারা পায় না। আর শিক্ষাটা যে পরিবার থেকে আসবে তা নয়। সেটা হতে পারে সমাজ, স্কুল, বড় ভাই, বন্ধু, কর্মস্থল কিংবা কোনো সংগঠন থেকে। কিন্তু বাস্তবে সমাজ, পরিবার, স্কুল, কলেজ, বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই কিংবা সংগঠন কোথাও এই শিক্ষা নেই। তাই তো এখন বড়-ছোট কোনো পার্থক্য সমাজে নেই। এখন ছোটরাও বড়দের ওপর আঘাত করতে চিন্তা করে না। যার ভেতর শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধের অভাব থাকবে, সে তো বড়দের আঘাত করবেই। আর এই অভাব রাখার দায়টা বড়দেরই নিতে হবে।

আজকাল বড়রাই ছোটদের এই শিষ্টাচার, নৈতিকতা ও ভদ্রতা থেকে দূরে রাখছে। তারাই ছোটদের নিয়ে কুকর্ম আর অন্যায় পথে হাঁটছে। এ থেকে ছোটরা আর কী শিখবে। আপনি যদি আপনার বড়কে সম্মান না দেন, তাহলে আপনাকে আপনার ছোটজন কীভাবে সম্মান দেবে? আপনি সেই সম্মান কীভাবে আশা করবেন? তাই সচেতন হতে হবে আপনাকে, আমাকে। যার যার অবস্থান থেকে মানবিকতা, নৈতিকতা, নম্রতা, ভদ্রতা, শিষ্টাচারিতা, সৌজন্যতা এবং ভালো ব্যবহার করতে হবে। তবেই অন্যজন আমাকে দেখে শিখবে। আমি অন্যজনের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলে তার বিনিময়ে আমিও ভালো ব্যবহার পাব। তাই আগে নিজে পরিবর্তন এবং সচেতন হই, তারপর অন্যজনকে সচেতন করার কথা ভাববেন। আমি যা করি তা অন্যজনকে কীভাবে না করব। আমি অন্যায় কাজ করি, আর মানুষকে বড় বড় লেকচার দেব অন্যায় কাজ করো না, সেটা তো হতে পারে না। আমি কেমন, সেটা মুখে প্রমাণ না করে কাজে প্রমাণ করাটাই আসল প্রমাণ।

তাই আসুন, আমরা প্রত্যেকে যার যার স্থান থেকে পরিবর্তন হই। দেখবেন একদিন দেশ হয়ে উঠবে ভালোবাসায় ভরপুর। সবার মধ্যে থাকবে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। তাই এখন থেকে নিজেদের মধ্যে সেই মানসিকতা তৈরি করতে হবে। ছোটদের স্নেহ আর বড়দের সম্মান দিয়ে আগে নিজেরা নিজেদের ঠিক করি। তখন আমার কাছ থেকে বড়-ছোট উভয়েই শিক্ষা পাবে। যতক্ষণ আমি নিজে মন-মানসিকতায় এবং আচরণে ইতিবাচক মনোভাব আনতে না পারব, ততক্ষণ আমার চারপাশ বদলে যাবে তা ভাবা ঠিক নয়।

 

লেখক : নিবন্ধকার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads